সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
রবিবার, ৩০ মে, ২০২১
সম্পাদকীয়
আজ তবে সম্পাদকই দায়ী থাক। "সাহিত্য নয়ন"- এর চতুর্দশতম সংখ্যাটি প্রকাশে এতো দেরী হওয়ার কথা তো ছিলনা। বাগিচায় ঠিক সময় মতোই ফুল ফুটে ছিল। দেবতারাও ছিলেন পূজার পুষ্প গ্রহণে প্রস্তুত। তবে কেনো পূজায় এতো বিলম্ব ? এতো অন্ধকারে কেমন করে পূজার উপকরণ সাজাই বলো? তাই অনিচ্ছাকৃত এই বিলম্বের দায় মাথায় তোলে নিলাম। হয়তো একদিন সত্যিকারের ভোর হবে। থাকবেনা কোনো আঁধার। সুস্থ প্রভাতের আলো ছড়িয়ে পড়বে দিকে দিকে। মুক্তভাবে মুক্ত বাতাস থেকে নিতে পারবো ভয়মুক্ত শ্বাস। যদিও আজ সময়টা বড়ো কঠিন। কিন্তু আশায় বাঁচে চাষা। তাইতো সুস্থ ভোরের আশায় আগামীর দিকে চেয়ে আছি।
প্রিয় পাঠক, অনেক বাধা-বিপত্তি অতিক্রম করে আপনাদের ভালোবাসার টানে আবারো হাজির হলাম "সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকা চতুর্দশতম সংখ্যাটি নিয়ে। জীবন যুদ্ধে ক্লান্ত হয়ে যখন বদ্ধ খাঁচায় নিভৃতে বসে থাকি, তখনই আপনাদের ভালোবাসার আঘাতে বার বার জেগে উঠি। কবি কিশোর কুমার ভট্টাচার্যের ভালোবাসার কয়েকটি পংক্তি দায়বদ্ধতা আরোও বাড়িয়ে দিল। উনি লিখেছেন ------
সময়ে অসময়ে লভিবে যন্ত্রণা
বিরক্ত হইলেও সহিতে হইবে
তবেই তো "তুমি ওগো কর্ণধার!"
আনন্দ মাখা মনখানা বসুধার।
তুমি হে রাজার রাজা!
হে রাজেশ!
অসিখানা হাতছাড়া আজ
মসি খানা সাজিয়েছ সুন্দরে বীণাপানির কৃপায়।
শাসন - শোষণ ভুলিয়া
লভিয়াছো সেবা ব্রত
এই কাজে তো যন্ত্রণার কাঁটা
বিঁধিবে অনবরত।
এবারের সংখ্যায় কবিতা - প্রবন্ধের পাশাপাশি শিশুশিল্পীদের উৎসাহ বৃদ্ধির কামনায় প্রকাশিত হয়েছে তুলির সৃষ্টিকেও। শিল্পীর তুলির আঁচড়ও কথা বলতে জানে। করতে পারে ভাব বিনিময়। অনেকক্ষণ ধরেই বক্ বক্ করে যাচ্ছি, আগামী সংখ্যায় না হয় বাকিটা পূর্ণ করে নেব। চলুন সবাই মিলে একটু দেখে নেই নয়নের পাতায় কি কি অপেক্ষা করে আছে। আপনাদের সার্বিক মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।
ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা সহ------
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
অমল কুমার মাজি
ঝড়
------অমল কুমার মাজি
ভিতরের পৃথিবীতে আচমকা ঝড় ওঠে
মাঝ রাতে ঘুম ভেঙে যায়
শরীরের ধমনীতে তপ্ত রক্ত ছোটে
বিবেকের দংশন যাতনা বাড়ায় !
বাতাসে দু'হাত ছুঁড়ে মিছিল এগিয়ে চলে
নিষ্ফল চিৎকারে হায়!
উপোসী স্নাতক শুধু দুপুর গড়িয়ে গেলে
এক খিলি পান কিনে মুখটা রাঙায় !!
কতশত দ্রৌপদী প্রতিদিন প্রতি পলে
হ'য়ে যায় সংবাদ -শিরোনাম
সাজানো মঞ্চে তবু ভাষণের কারসাজি
"থোড়-বড়ি- খাড়া" আর "খাড়া-বড়ি-থোড়" অবিরাম!!
হাইজ্যাক হ'য়ে যায় বিশ্বকবির গান
নেই কপিরাইটের বন্ধন
লুটেরার উল্লাস ছাপিয়ে শ্রবণে আসে
মাতৃভূমির চাপা ক্রন্দন !!
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
অমর ঊনিশ
-------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
হায়রে ঊনিশ! মননে
স্মরণে অস্তিত্বশীল।
তোমার স্মৃতি রোমন্থনে
ছুটেছে চিন্তা প্রগতিশীল।
এপার - ওপার মিলেমিশে একাকার
মাঝখানে সেতু ভাষা
মানতে পারেনি রাজাকার।
হে উনিশ তুমি আছো স্মৃতিতে
শিলচর রেলস্টেশনে,
আছো ইতিহাসের পাতায়
শহীদের সম্মানে।
হেমন্ত দেবনাথ
"সত্যের পথে ভারতীয় দর্শনের অগ্রগতি"
-------হেমন্ত দেবনাথ
(এপ্রিল মাসের সংখ্যার পর)
কিন্তু বেদ বাহ্য দর্শন বেদবিরোধী দর্শন নয়। এদের উৎস হল---" আগম"- অর্থাৎ বেদবাহ্য দর্শন গুলোর উৎস বেদ নয়, এগুলো বিরোধীও নয়। বেদ বাহ্য দর্শন গুলো হচ্ছে শাক্ত দর্শন, বৈষ্ণব দর্শন ও শৈব দর্শন। শাক্তদের মূল ভিত্তি হলো শাক্তাগম, বৈষ্ণব দর্শনের মূল উৎস হল বৈষ্ণবাগম এবং শৈব দর্শনের মূল উৎস হল শৈবাগম।
আস্তিক দর্শন গুলোর উৎস হলো বেদ। বেদ কথার অর্থ হল "জ্ঞান"। বেদ চার প্রকারের--- ঋগ্বেদ, সামবেদ, যজুর্বেদ ও অথর্ববেদ। প্রাচীনতম বেদ হলো ঋগ্বেদ। প্রতিটি বেদের চারটি অংশ রয়েছে -- সংহিতা (মন্ত্র), ব্রাহ্মণ, আরণ্যক, ও উপনিষদ। দেবদেবীর উদ্দেশ্যে রচিত স্তোত্র বা মন্ত্র হলো সংহিতা, বৈদিক যজ্ঞের নিয়মাবলী আছে ব্রাহ্মণ অংশে। বাণপ্রস্থের সময়ে অরণ্যে জীবনযাপনের নিয়মাবলী নিয়ে লেখা হয়েছে আরণ্যক, জীবন ও জগৎ সম্বন্ধে নানা জিজ্ঞাসা বিষয়ক উচ্চতর দার্শনিক চিন্তার প্রতিফলন ঘটেছে উপনিষদে।
সংহিতা ও ব্রাহ্মণকে বলা হয় কর্মকাণ্ড। উপাসনাকান্ড বলা হয় আরণ্যককে। উপনিষদকে বলা হয় জ্ঞানকাণ্ড। "যাগযজ্ঞ অনুষ্ঠান নিষ্প্রয়োজন" -- এ কথা ব্যক্ত হয়েছে শতপথ ও তৈত্তিরীয় ব্রাহ্মণে। উপনিষদ হল জ্ঞানকান্ডের চরম পরিণতি। বেদের অন্তর্ভুক্ত নয় বেদাঙ্গগুলো । বেদের অর্থ ও অর্থ বোধের প্রয়োজনে সৃষ্টি হয়েছিল বেদাঙ্গ। বেদাঙ্গ হল ছয়টি-- শিক্ষা, কল্প, নিরুক্ত, ছন্দ, জ্যোতিষ ও ব্যাকরণ। মীমাংসা ও বেদান্ত সরাসরি বেদ নির্ভর। সাংখ্য, যোগ, ন্যায় ও বৈশেষিক দর্শন বেদের প্রামাণ্য স্বীকার করে নিলেও স্বাধীন যুক্তি তর্কের মাধ্যমে নিজস্ব অভিমত ব্যক্ত করেছে। কাজেই এগুলো পরোক্ষভাবে বেদ নির্ভর। বেদান্ত দর্শন ক্ষুরধার যুক্তিতর্কের মাধ্যমে এদের জ্ঞানের দিকটি অর্থাৎ ব্রহ্মের স্বরূপ, জীবাত্মা ও পরমাত্মার সম্পর্ক ইত্যাদি দার্শনিক তত্ত্বগুলোর আলোচনা করেছে। মীমাংসা-দর্শন বেদের যাগ-যজ্ঞ ও ক্রিয়া অনুষ্ঠানের যৌক্তিকতা তুলে ধরেছে। এই দুই দর্শনের পার্থক্য তুলে ধরার জন্য মীমাংসাকে পূর্ব মীমাংসা বা কর্ম মীমাংসা এবং বেদান্তকে উত্তর মীমাংসা বলা হয়েছে।
বেদ স্বতন্ত্র ও বেদবিরোধী দর্শনগুলোর উৎস হল-- কোনোও শ্রদ্ধেয় মনীষী বা সত্যদ্রষ্টা ব্যক্তির মত। যেমন- ঋষভদেবকে জৈন দর্শনের আদি প্রচারক তীর্থঙ্কর বলা হয়, গৌতম বুদ্ধকে বৌদ্ধ ধর্মের এবং চার্বাক ঋষি অথবা বৃহস্পতি ঋষিকে চার্বাক দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়।
(ধারাবাহিক চলবে)
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
দ্ব্যর্থক ভালোবাসা
------রাজেশ ভট্টাচার্য্য
ভালোবাসি,
আমি তোমাকে খুব ভালোবাসি।
মানবিকতায় ভালোবাসি।
মনুষ্যত্ববোধে ভালোবাসি।
হ্যাঁ, তুমিও আমাকে ভালোবাসো জানি।
আমার না বলা কথা তুমি বুঝে নিতে পারো।
করতে পারো তার চুলচেরা বিশ্লেষণ।
লাগাতে পারো ভালোবাসার বিজ্ঞাপন।
তাতে না হয় ভেঙ্গেই যাক আমার দর্পণ।
তাতে তোমার কি?
তোমার জয় জয় করবে পুরো সমাজ।
আর তুমি হয়ে উঠবে শ্রেষ্ঠ প্রেমিকা।
তবুও না হয় তোমাকে ভালোবাসলাম!
মনুষ্যত্ববোধের ভালোবাসা।
জয়ন্ত দেবনাথ
কবিতাকে চাই
-----জয়ন্ত দেবনাথ
সে তো আমায় ছেড়ে গেছে কোথায় তারে পাবো!
ঠিকানাটা দেবে আমায়? আনতে তারে যাবো।
সে ছিল যে আমার মনে পদ্ম পাতার জল,
হৃদয় সরোবরে ঢেউয়ে করত টলমল।
হৃদয় হল শুষ্ক মরু দুঃখের তাপে দহে,
পদ্ম পাতার শিশির সে যে কি করে সে সহে!
কবিতা সে দিল ফাঁকি মনের দুয়ার খুলে,
বহু দূরে গেছে চলে আমায় গেছে ভুলে!
কোথায় তারে পাব আমি? তোমার তাকে চাই!
নিঃরস গদ্যের হৃদয় আকাশ কাব্যের মেঘ নাই।
বর্ণা দাস
সুখপাখি
------বর্ণা দাস
সন্ধ্যা নামে রোজ
পাখিরা ফিরে আসে
শয় শয় ঘরে ।
পথের পানে চেয়ে
দুয়ারে আমি থাকি বসে
কে যেন আসবে ফিরে ।
নদীর ঘাঁটে নৌকো লাগে
যাত্রী ওঠে যাত্রী নামে
কত মানুষের আনাগোনা।
হাট বসে বেচা-কেনা হয় বটে
চওড়া দামের হিসেব কষে
যায় নাকো তাকে কেনা ।
নিত্য যাকে খুঁজে চলি
সে এক সুখ পাখি
কোথায় পাবে তার দেখা ।
অযথা তাকে হাতড়ে বেড়াই
বৃথা ছুটি দিগ্বিদিক শূন্য হয়ে
সেই তো রোজনামচা আঁধার ঘনিয়ে ঘরে ফিরি একা ।
খুঁজলে তাকে পাবে কোথায়
যায় কী ওমনে ধরা
সে আছে এক রূপসাগরে ।
জাগো এবার তন্দ্রা হতে
নয়ন মেলে চেয়ে দেখ
আড়ালে সে আছে মনের ঘরে ।
প্রানেশ পোদ্দার
রং
------প্রানেশ পোদ্দার
আজি এ বসন্তে
রং লেগেছে মনে
রাধা রং লাগাবে
শ্যামের চরণে ।
আয় সখীরা আয়
আবির মাখবি সারা গায়
রাঙিয়ে রাঙাবে
হোলি খেলায় ।
শ্যামের হাতে শ্যামের বাঁশি
আকাশ জুড়ে এর রাশি
পিচকারিতে রং ভরে
শ্যামহাসে মিষ্টি হাসি ।
প্লাবন সরকার
মৃত্যুর ডাক
------প্লাবন সরকার
কি জানি কখন কবে ধেয়ে আসে ভয়ালদর্শন মৃত্যুদূত,
ডাক আসলে যেতেই হবে নিয়তির লিখনে,
সময় অল্প জানি, কাজ যে বহু,
তবুও ডাক আসলে যেতেই হবে,
বেলা অবেলার কাজ সেরে উঠতে না উঠতেই ডাক এলো,
ডাক আসলে যেতেই হবে,
উপরওয়ালা সুবিবেচক, জানি অসীম দয়ালু,
তারপরও তিনি বড় কাউকে কাউকে অবেলায় ডাক দেন
উপায় নেই সে ডাক উপেক্ষা করার,
ডাক আসলে যেতেই হবে,
বিশ্বভ্রমান্ড চলে তার হাতের ইশারায়,
সে থাকে সদা স্থির,আমরাই চলনশীল,
সম্রাট জিউসের ভয়ালদর্শন বর্ম, মৃতসঞ্জীবনী তার ডাকের কাছে অর্থহীন,
রাজা মহারাজা, সাধু সন্তু, ফকির দরবেশ সবাই সমান তাঁর কাছে,
অপরিবর্তিত তাঁর আইনের শাসন,
ডাক আসলে যেতেই হবে।
কাজী নিনারা বেগম
পরোয়ানা
------কাজী নিনারা বেগম
আশ্চর্য মায়াভরা পৃথিবীতে নীরবে কাঁদি,
এই মাটির কায়া মিছে মায়া।।
দিগন্ত ব্যাপী প্রশ্ন হৃদয়ে,
আকাশে ঝম্ ঝম্ বৃষ্টি।
প্রভাতে উঠোনে এক হাটু জল,
নয়নের অশ্রু সিক্ত জলে ধরিত্রী ভিজে গেছে আজ। সেই হারানো দিনগুলোর স্বপ্ন ময় ব্যবধানে,
এসে গেছে মৃত্যুর পরোয়ানা আমার ঠিকানায়।
নির্মল মৃত্যুর আগমনীতে,
বেদনার স্মৃতি নিয়ে হৃদয়ে উঠেছে ভীতি।
ক্ষমা চাইছি সাশ্রুকন্ঠে একটি মাত্র ক্ষমা,
হাজারো ভালোবাসার জন্ম।
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
আবরণ
------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
সবাই-তো চায় সু-আবরণে আবৃত থাকতে।
কিন্তু পথের বাঁধা দারিদ্র,
তা-ই তো ষোড়শী বাসন্তী
এ বাড়ি , ও-বাড়ি থেকে মায়ের খুঁজে খুঁজে আনা
পৌশালী-ফাল্গুনীর ফেলে দেওয়া
জামা-কাপড়ে নিজেকে রাখে আবৃতা।
আর বাবা-মাকে কখনো জড়িয়ে ধরে
আদর করে বলে,একদিন দেখো---
সব কিছু ভালো হয়ে যাবে।
মা-বাবা সান্ত্বনার অশ্রুপাত করে আর
নাকের জল ছেঁড়া মলিন কাপড়ে মুছে
ষোড়শীর মাথায় হাত রাখেন।
বৈশাখী ঝড়ো বাতাসে গাছের ডাল - পালা ভেঙে পড়েছে
সেগুনবাগান - রাবার বাগানে।
বাসন্তী ভাঙা ডাল-পালা কুড়িয়ে আনতে গেলো
বাগানের পশ্চিম দিকে বেশ কিছু ভিতরে।
ষোড়শীর গায়ের গন্ধ পেয়ে
পিছু নিল রক্ত পিপাসু যৌবন।
ছেঁড়া কাপড়ে আবৃতা বাসন্তী
গুনগুন সুরে কী জানি গাইছিলো,
হঠাৎ দেখে চেয়ে ওর পেছনে
অট্টহাস্য নেকড়ে জাতীয় হিংস্র যৌবন।
চৈত্রের শেষে ধেয়ে আসা
কালবৈশাখীর মতোই ঝাঁপিয়ে পড়ে বাসন্তীর 'পর।
কালবৈশাখী তছনছ করে যায়;
তবু প্রকৃতি সৃষ্টির চেতনা ফিরে পায়,
আর রক্ত পিপাসুর তান্ডব
ছিঁড়ে খায় বাসন্তীর রক্ত-মাংস সব।
নতুন সৃষ্টি চিরতরে লুপ্ত হয়ে
লজ্জায় মুখ ঢাকে।
প্রতিকার চায় আশেপাশের সবুজ মন।
নীরব গাছ- পালার সাক্ষী
ত্রেতাযুগে মানলেও বর্তমানে
নীরব- সরব সবাই কেমন যেন একটা চুপ।
আবরণ দেবার ভাগ না থাকলেও ছিনিয়ে নিতে জানে
এ সময়,বর্তমান যুগ?
না,না,না।
এখনো রয়েছে মান-হুঁশ
তাইতো কাপড়ে সাজাও বাসন্তী,বৈশাখী শ্রাবণীকে।
বৃষ্টিধারায় ভিজে যাওয়া
ওদের দেহ পানে না তাকিয়ে ওদেরকে সবুজে ঢেকে দাও
হে মানব! সবুজে ঢেকে দাও।
হিংসার দুনিয়াকে জানাতে বিদায়
আও সবে এক শৃঙ্খলে আও।
রচনা কালঃ- ৫ই মে-২০২১ ইং,বুধবার ।
সুপর্না কর
প্রকৃতির প্রতিশোধ
------সুপর্না কর
মানব যখন নরপশুর রূপ ধারণ করে,
প্রকৃতিকে কলুষিত করতে শুরু করে,
তখনই মানবজীবন প্রকৃতির রোষে পড়ে।
যে মানবজাতি প্রকৃতিকে দিয়েছিল প্লাস্টিকে মোড়ে।
আজ সেই প্লাস্টিকই রক্ষাকবচ হয়ে
আছে মানুষের শরীর জুড়ে।।
বৃক্ষকে ধ্বংস করে মানব বানিয়েছে রাজপ্রাসাদ।
আর আজ একটু অক্সিজেনের জন্যই
চারিদিকে শুধু মানুষের আর্তনাদ।।
ধর্ম নিয়ে মানুষে মানুষে হয়েছে কত হানাহানি!
কোথায় গেল ধর্ম ? কোথায় গেল জাতপাত?
চারিদিকে শুধুই এখন মৃত্যুমিছিলের প্রতিধ্বনি।
পৃথিবীর বুকে অধার্মিক ব্যাভিচার,
মানুষেরই মানুষের উপর নৃশংস অত্যাচার,
এই দেখে চতুর্দিকে গর্জে উঠেছে প্রকৃতির হুঙ্কার।
মানবের কারণেই আজ মানবজীবনে উপচে পড়েছে প্রকৃতির ক্রোধ।
যতবারই মানবজাতি পরিণত হবে নরপিশাচে,
ততবার মহামারী রূপে ফিরে আসবে প্রকৃতির প্রতিশোধ।।
অভিজিৎ দাস
আগামীর প্রতীক্ষায়
-----অভিজিৎ দাস
বন্ধু তোমরা হও আগুয়ান, সকল বাধা ঠেলে।
নতুন রবি উঠবে দেখো, আঁধার কেটে গেলে।
সদ্য অঙ্কুরিত বৃক্ষ শিশুও, ভবিষ্যতের স্বপ্ন দেখে।
স্বপ্ন ভরা দৃষ্টি আমার, হারিয়ে গেছে পথেরবাঁকে।
নদী-পাহাড় করছে দেখো, নতুন দিনের প্রতীক্ষা।
দেশ গড়ার মহামন্ত্রে নাওগো, আবার নতুন দীক্ষা।
টিটু বনিক
ভুলের পরিণাম
------টিটু বনিক
আমার গৃহের প্রাচীর যখন ভগ্ন ছিলো
তুমি আসনি কখনো প্রেম দিতে
তুমি এসেছিলে শুধু বৃহৎকে আরও বৃহৎ করতে।
আমি সরল ছিলাম জলের মত,
আমি উপবন দেখে দৌড়ে গেলাম,
গোলাপ দেখে হাত বাড়ালাম,
আমি জানতাম না কাটা ছিলো ফুলের ছদ্মবেশে অস্ত্র ছিলো।
আমি তোমায় দেখলে বসন্ত ভাবতাম
আপন ভেবে আগলে ধরতাম
আসলে তুমি ঝড় ছিলে,আমার শহর ধ্বংস করলে।
এখন আমি অধঃপতন এখন আমি ডুবন্ত নৌকা।
এখন আমি যাযাবর পাখি এক আপন হারা।