আবরণ
------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
সবাই-তো চায় সু-আবরণে আবৃত থাকতে।
কিন্তু পথের বাঁধা দারিদ্র,
তা-ই তো ষোড়শী বাসন্তী
এ বাড়ি , ও-বাড়ি থেকে মায়ের খুঁজে খুঁজে আনা
পৌশালী-ফাল্গুনীর ফেলে দেওয়া
জামা-কাপড়ে নিজেকে রাখে আবৃতা।
আর বাবা-মাকে কখনো জড়িয়ে ধরে
আদর করে বলে,একদিন দেখো---
সব কিছু ভালো হয়ে যাবে।
মা-বাবা সান্ত্বনার অশ্রুপাত করে আর
নাকের জল ছেঁড়া মলিন কাপড়ে মুছে
ষোড়শীর মাথায় হাত রাখেন।
বৈশাখী ঝড়ো বাতাসে গাছের ডাল - পালা ভেঙে পড়েছে
সেগুনবাগান - রাবার বাগানে।
বাসন্তী ভাঙা ডাল-পালা কুড়িয়ে আনতে গেলো
বাগানের পশ্চিম দিকে বেশ কিছু ভিতরে।
ষোড়শীর গায়ের গন্ধ পেয়ে
পিছু নিল রক্ত পিপাসু যৌবন।
ছেঁড়া কাপড়ে আবৃতা বাসন্তী
গুনগুন সুরে কী জানি গাইছিলো,
হঠাৎ দেখে চেয়ে ওর পেছনে
অট্টহাস্য নেকড়ে জাতীয় হিংস্র যৌবন।
চৈত্রের শেষে ধেয়ে আসা
কালবৈশাখীর মতোই ঝাঁপিয়ে পড়ে বাসন্তীর 'পর।
কালবৈশাখী তছনছ করে যায়;
তবু প্রকৃতি সৃষ্টির চেতনা ফিরে পায়,
আর রক্ত পিপাসুর তান্ডব
ছিঁড়ে খায় বাসন্তীর রক্ত-মাংস সব।
নতুন সৃষ্টি চিরতরে লুপ্ত হয়ে
লজ্জায় মুখ ঢাকে।
প্রতিকার চায় আশেপাশের সবুজ মন।
নীরব গাছ- পালার সাক্ষী
ত্রেতাযুগে মানলেও বর্তমানে
নীরব- সরব সবাই কেমন যেন একটা চুপ।
আবরণ দেবার ভাগ না থাকলেও ছিনিয়ে নিতে জানে
এ সময়,বর্তমান যুগ?
না,না,না।
এখনো রয়েছে মান-হুঁশ
তাইতো কাপড়ে সাজাও বাসন্তী,বৈশাখী শ্রাবণীকে।
বৃষ্টিধারায় ভিজে যাওয়া
ওদের দেহ পানে না তাকিয়ে ওদেরকে সবুজে ঢেকে দাও
হে মানব! সবুজে ঢেকে দাও।
হিংসার দুনিয়াকে জানাতে বিদায়
আও সবে এক শৃঙ্খলে আও।
রচনা কালঃ- ৫ই মে-২০২১ ইং,বুধবার ।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন