মা
----- সুব্রত রায়
গ্রীষ্মকাল কেটে যায় কোনরকম। শীতে কষ্ট অনেক বেশি। শীতের রাতে ফুলমতির ঠিকানা রেলষ্টেশন।
ছোটলোকের মেয়ে ফুলমতি দারুণ সুন্দরী। তাছাড়া ঝাডুর জন্ম-বৃত্তান্ত সবার জানা। চারবছর আগের ঘটনা। তখন থেকেই ছেলে ঝাড়ুকে নিয়ে ফুলমতি রাতটা ষ্টেশনে কাটিয়ে দেয়। একটা বাড়তি অনুকম্পা পাওয়া যায়।
রাত দশটায় শেষ লোকেল ঢুকে।ঐ ট্রেনে শহর থেকে ফেরে ফুলমতি। ইদানিং কাজটা নিয়েছে। ওখানে রোজগার অনেক বেশি।
দাঁড়িয়ে থাকলেও ইঞ্জিন সারা রাত চালু থাকে।তা ছাড়া সারাদিনের ক্লান্তি ঝেড়ে ফেলতে থাকে তপ্ত যন্ত্রশকট।ইঞ্জিনের প্রায় তলায় আশ্রয় নেয় মা আর ছেলে,যান্ত্রিক ওম শুষে নেয় দুটো রক্তমাংসের শরীর। পাথরের ধারালো প্রান্তগুলো পিঠে খোঁচা দেয়।জোরে টানলে ছেড়া কাঁথা আরও ছিঁড়ে যায় । মনে মনে হাসে ফুলমতি, ইঞ্জিনটা কি পুরুষ!
আজ শীত বড্ড বেশি।সন্ধ্যা থেকে ঝাড়ুর কাঁপন আর থামছে না। মায়ের অপেক্ষায় যেন শীত আরও তীব্র হতে থাকে।
একটা হট্টগোল।ঝিমুনি এসেছিল।
চেচাঁমেচিতে তন্দ্রা ছুটে যায় ঝাডুর।
ব্রিজ ভেঙে ট্রেন নাকি নীচে পড়ে গেছে। এটাই শেষ ট্রেন।মা ফেরার কথা ছিল। ঝাড়ুর ছোট্ট শরীর, কাঁপন বেড়ে গেছে প্রচণ্ড।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন