সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

শনিবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২৩

মলাট


 

সম্পাদকীয়

     কটি ভালো বই  সত্যিকারের ভালো বন্ধু। একটি ভালো বই একজন মূর্খ অন্ধকারাচ্ছন্ন বর্বরকেও একজন আদর্শ মানুষে রূপান্তরিত করতে পারে। আজকাল  লেখক -কবির সংখ্যা আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে কিন্তু  পাঠকের সংখ্যা কমছে দিন দিন। বই মেলাতেও পাঠক এবং ক্রেতা আজ সংখ্যালঘু। ছবি তুলতে আর ঘুরতে যারা যান তারাই আজ সংখ্যাগরিষ্ঠ। 

নন্টে ফন্টে, চাঁদ মামা, ঠাকুমার ঝুলি, গোপাল ভাঁড় থেকে শুরু করে, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র জীবনানন্দ, রবীন্দ্রনাথ  আরো আরো বই যেন নেশার মতো টেনে নিয়ে যেত  আগেরকার দিনে।  আজ সবই স্মৃতি।

  এখন এটাই প্রশ্ন------ কেন এমন হল? কেন হারিয়ে যাচ্ছেন পাঠক?  বই পড়ার আগ্রহ প্রতিনিয়ত কমছে কেন?  

     এখনো সময় আছে; এর মূল কারণ খুঁজে বের করে বই এবং মানুষের  মধ্যে সুসম্পর্ক স্থাপনের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে বিপদের ঝুঁকি থেকে মুক্ত করার। এর জন্য প্রয়োজন সমাজের প্রত্যেক সচেতন মানুষের এগিয়ে আসা।

      প্রিয় পাঠক প্রতিটি  সংখ্যা প্রকাশের পর আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা এবং উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমরা অভিভূত। আর তাই হয়তো আপনাদের ভালোবাসার টানেই আবারো হাজির হতে পেরেছি অনেক আশা ও স্বপ্ন জড়িত "সাহিত্য নয়ন" - এর "নববর্ষ সংখ্যা ৩" নামক বিশেষ সংখ্যা নিয়ে। আপনাদের নিরন্তর সাহচর্যে সমৃদ্ধ "সাহিত্য নয়ন"-এর এই পথ মসৃণ ও সুগম হোক। শুভকামনা রইল নতুন বছরের শুভারম্ভে।


ধন্যবাদ শ্রদ্ধাসহ-----

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন

অমল কুমার মাজি


       শ্রীচরণেষু মা


                     -----অমল কুমার মাজি


দুষ্ট যখন দেশটাকে আজ

ক'রছে শ্মশান-ভূমি

দশ হাতে দশ অস্ত্র নিয়েও

চুপ কেন মা তুমি?


বল মাগো তুই নীরব কেন

নারীর লাঞ্ছনাতে

দানব গুলোর মুন্ড কেটে

ফেল না অস্ত্রাঘাতে।।


সকাল-সন্ধ্যে বারুদ-বোমার

গন্ধে বাতাস ভারী

সৃষ্টি কি আজ ধ্বংস হবে?

আভাস দেখি তারই।।


স্বাধীণ হ'য়েও নতুন ক'রে 

মানুষ পরাধীন 

বিদ্বজনের নেই প্রতিবাদ 

এমন অর্বাচীন।।


নেতার মুখে ফাঁকা বুলি

মিথ্যা প্রতিশ্রুতি 

সুযোগ নিতে মোসাহেবরা

ক'রছে স্তব ও স্তুতি।।


উত্তর থেকে দক্ষিণে আজ

 ব'ইছে রক্তধারা

নেই প্রতিকার,প্রতিটি দিন 

কাঁদছে স্বজন হারা।।


একটা মহিষাসুর মেরেই

কেন মা তুই চুপ

কৃপাণ হাতে ধর না মাগো

চামুন্ডারই রূপ।।


মহাকালের কোল ছেড়ে আয়

এবার মহাকালী

ভয়ঙ্করী রূপ দেখা তোর

আবার মুন্ডমালী।।


ছদ্মবেশী দানব গুলোয়

শেষ ক'রে দে আজ

শান্তি ফিরুক দেশের বুকে 

পালাক গুন্ডারাজ।।

কিশোর কুমার ভট্টাচার্য


                  চক্রব্যূহ 


                       ------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য


কত প্রতিভা হয় শিকার অহরহ মিথ্যা  

বিচার বিবেচনার চাপে । 

অঙ্কুরেই ঘাস নাশের ঔষধ ছড়িয়ে বুঝিয়ে দেওয়া হয় 

এখন আর ডাকবি কাকে? 

ভেবেছিলিস হবি  

বিটপ কিংবা মহীরুহ ;

অঙ্কুরেই তো দেখেছিস 

এতো সহজ নয় ভেদ করা 

প্রতিভা নাশের চক্রব্যূহ। 

প্রতিভার বীজে ঐ দিন

অনেকেই দেখেছিল ;---

ভালো,ভালো আরো ভালো 

বিশাল স্বপ্ন। 

কিন্তু মিথ্যা স্তাবকতার 

নিষ্ঠুর আঘাতে ---

বিশাল স্বপ্ন আজ চূর্ণ বিচূর্ণ 

ঘূর্ণির দুঃস্বপ্ন। 

তবুও ;

সূর্যের আলোর পরশ,

আগামী বর্ষার ছোঁয়ায় হয়তোবা 

আবারও হতে পারে

প্রতিভার অঙ্কুরোদ্গম ;-

এ স্বপ্ন নিয়েই চলছে 

আশার প্রদীপের জ্বলন।



 

১৬/০৩/২০২৩, বৃহস্পতিবার।

হেমন্ত দেবনাথ


        গোলাপ যায় মুছ্ড়ে


                               -----হেমন্ত দেবনাথ  


চরম আঁধারে আতরের গন্ধ যায় উবে। 

গভীর প্রণয়ের গোলাপ কখনও

                               যায় মুছড়ে - 

জীবনপথ-রেখাটি যায় দুমড়ে। 

ওদের জন্যে বুকে বড়ো বাজে। 

'নিরুপমারা' আজো আছে ।


লালসার ভাবনাই খালি-- 

প্রণয়ের গুড়ে বালি। 

অর্থলোভীদের লালসা যায় না 

পরিণয়ের মধুময় সম্পর্ক তো থাকে না। 

দর কষাকষি-----

'পাওনা' পেলে বেজায় খুশি । 


নইলে 'প্রণয়ের মানুষ'টা হয় খুনী

নিরুপমারা যতই হোক গুণী। 

পাওনা নেই নিরুপমাদের জীবন ভার যাবে-- 

প্রণয়-পক্ষের কুমন্ত্রণায় --

অপমানে-গঞ্জনায় আর--

মৃত্যু-লাঞ্ছনায়।

সুব্রত রায়


                                                                       সমীক্ষা


                                                                                 ---- সুব্রত রায়


    সেটা ছিল আরেক বসন্ত-বিকেল। এখানে ওখানে সবুজ রঙ করা কয়েকটা কাঠের বেঞ্চ। দশতলার উপর ষ্টিলের ফ্রেমে আটকানো 'মরমী হাউজিং কমপ্লেক্স' লেখাটা দিনের বেলা দেখা যায় না। তবে রাত হলে গ্লো সাইন জ্বলজ্বল করে বহুদূর থেকে। 

   চারপাশে সুউচ্চ সার দেওয়া অসংখ্য ফ্ল্যাট-বাড়ি। সব মিলিয়ে কত লোক থাকে অতনুবাবু জানেন না। কমপ্লেক্সের সামনের দিকে খোলা এই পার্কটা ভাল লেগেছিল সবচেয়ে বেশি। চাকরির শেষ বছর বুক করেছিলেন। কোয়ার্টার ছেড়ে সোজা মরমীতে।

  সময় ভালই কেটে যায় এখন। সবমিলিয়ে বুড়োদের সংখ্যাটা একেবারে কম নয়। গল্পগুজবে কী করে সন্ধ্যা নামে বুঝা যায় না। সূর্য ডুবতে না ডুবতে ফা ফা করে খুটির মাথায় জ্বলে উঠে সারি সারি সোডিয়াম ভ্যাপার ল্যাম্প। সন্ধ্যা আর রাতের মিশে যাওয়াটা আর দেখা হয় না। আকাশ তারাহীন, কেমন ঘোলাটে একটা আস্তরণ ঝুলে আছে মনে হয়।

   এসব আপাত অপ্রাপ্তিকে ভুলে যাওয়াই ভাল। নিজেদের অতীত  জীবনের হাজারো গল্পে নিজেকে  উজ্জীবিত করে রাখা বরং বুদ্ধিমানের কাজ। রক্তচাপ আর ব্লাড সুগারের রিপোর্ট পরীক্ষা করতে করতে ডাক্তাররা আজকাল নষ্টালজিক হতে বারণ করেন।

  এসব ভাবনার ফাঁকে কখন যে শ্রীমন্তবাবু এসে গেছেন, খেয়াল ছিল না।

 -আরে মেজর, অমন ঝিম মেরে আছেন কেন? আমি আসতে আসতে একটু হেঁটে নিলেই তো পারতেন। অতনুবাবু ইন্ডিয়ান আর্মিতে ছিলেন। শ্রীমন্তবাবু মজা না করে কোনো কথা বলেন না। প্রাক্তন  কলেজ শিক্ষক শ্রীমন্তবাবুকে এজন্যেই বড্ড ভাল লাগে।

-আর কত হাঁটবো বলুন? ফ্ল্যাট থেকে এখানে পৌঁছতে পাক্কা আধা ঘন্টা। এখন বসতেই ভাল লাগছে। বসুন এখানে। বলুন, আজকে যেন কী শুনাবেন বলেছিলেন।

-হ্যাঁ হ্যাঁ। টেনশন একদম করবেন না। এই ধরুন, একটা পান মুখে দিন। বলছি। বাংলার প্রফেসর শ্রীমন্তবাবু দারুণ গল্প বলতে পারেন। কল্পনা আর বাস্তবতার অদ্ভুত মিশেল তার বলায়। তবে শেষ দিকে একটা ভয়ংকর অনিশ্চয়তায় শেষ হয় সে গল্প। শ্রোতাকে প্রশ্নের মুখে ফেলে দিতে দারুণ আমুদ পান তিনি।

   নিজের মুখের গোটা খিলি গালে চালান করে দিয়ে গল্প শুরু করেন শ্রীমন্ত বাবু।

   তখন আমরা কলেজে পড়ি। বাংলা বিভাগের ছাত্র। যৌবনে কোন বাঙালি কবিতা না লিখে থাকে। ঠিক হ'ল কবিতা লিখতে হবে, তবে গতানুগতিক মোটেও না। প্রথমে ফিল্ড সার্ভে হবে। নানা পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলার পর কবিতা লেখা হবে। সাক্ষাৎকারের অভিজ্ঞতা হবে কবিতার মূল বিষয়।

   তা, খাতা কলম নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম একদিন। গ্রাম থেকে আধা শহর, বাদ গেল না কিছুই। দেখলাম, কৃষক ধান কাটছে। তাকে বললাম, "কিছু বলুন, একটা কবিতা লিখতে চাই।"  সে কোনো উত্তরই দিল না। মুচকি হেসে ধান কাটতে লাগলো ঘ্যাজঘ্যাজ করে।

  এরপর একজন কর্মকার। একই অনুরোধ তার কাছেও করা হ'ল। "দাদা, একটু বলবেন, এ্যাই একটা কবিতা লিখবো আর 

কী।" তিনি জ্বলন্ত চুল্লী থকে ডগডগে লাল লোহার টুকরো বের করে এনে দুমদাম পেটাতে লাগলেন একমনে। উত্তর কিছুই পাওয়া গেল না। এরপর, রজক, ক্ষৌরকর্মি, মৃৎশিল্পী এদের কাছেও যাওয়া হল। ফলাফল এক, সবাই নিজের কাজে মহাব্যস্ত, উত্তর নেই।

    সে যা-ই হোক। কবিতা তো লিখতেই হবে। লেখাও হয়ে  গেল। শর্ত ছিল যাদের সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে কবিতা লেখা হবে, সেই কবিতা তাদেরকেই শোনাতে হবে। জানতে হবে তাদের প্রতিক্রিয়া। অনেক সাধ্যসাধনার পর অবশ্য আনা গিয়েছিল তাদের। ওঁদের বসানো হ'ল। চা মিষ্টিরও ব্যবস্থা ছিল। তা, গালে হাত দিয়ে মনযোগ সহ শুনলোও ওঁরা আমার লেখা কবিতা। 

   সবশেষে প্রতিক্রিয়ার পালা। -আচ্ছা বলুন তো, কবিতাটা শুনে কী বুঝলেন আপনারা? কিছুক্ষণ একদম চুপচাপ। আবারও অনুরোধ করা গেল। ওঁরা প্রথমে  পরস্পর এ ওর মুখের দিকে তাকায়, কিচ্ছু বলে না। অনেক পীড়াপীড়ির পর শেষমেশ, সেলুনের সেই লোকটা উঠে দাঁড়ালেন। - বাবু, একটা কথা, কবিতাটার গভ্ভে মস্ত বড় বড় সব কথা বলা হয়েছে, এ বিষয়ে আমরা একমত। তবে আমরা কেউ কিছুই বুঝিনি।

বিধানচন্দ্র দে


     জীবন সন্দর্ভে 


                   ----- বিধানচন্দ্র দে


জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি 

ক্রমাগত সংঘর্ষ আর 

সমঝোতার উপাখ্যান----


জীবন মানে জিগিষা,

জীবন মানে জীবিকা 

জীবনের জন্যে জিঘাংসা 

জীবন থেকেই জিজ্ঞাসা ---


উৎস থেকে মোহনা, আর 

তট চর জলে ভেসে নদ নদী । 

এ আকাশ বাতাস মাটি 

স্পর্শ করে কিয়ৎকাল 

অবগাহনের নাম যদি হয় 

জীবন


তাহলে জন্ম জন্মান্তরের

জীবন জীবনের খেলা 

এক মস্ত প্রতারণা 

স্বপ্নীল ধোঁকা ।

মিতালি দে


  হায় হেন রণঝংকারে 


                      ------ মিতালি দে


সমুদ্র নীলের স্বপ্নীল জগতে

ছোপ ছোপ সবুজে

ধূসর কালো বাদামি ছোট বড় অজস্র পথ ধরে

আমজনতা ছুটে চলে 

শতাব্দীর পর শতাব্দী

শান্তির কোটর ছেড়ে অনির্দিষ্টের পথে

উদবাস্তু সময়ে আকুল অসহায়তায়, 

পেছনে হায়েনার দল

ভারি বুটের শব্দ

প্রবল গোলাবর্ষণে

হিংস্র উন্মত্ততায়

বাতাসে হিসহিস শব্দে

গ্রাম গঞ্জ শহর তুলোট কাগজে ।

যারা সাম্রাজ্য ধরে রাখে

যারা মুষ্টিমেয়

রূপার কাঠি বদলে

যারা সোনার কাঠি রাখে

যারা মানচিত্র পালটায় ইচ্ছে য মতো

ক'জনার খেয়াল খুশি

গনদেবতার ভাগ্য নিয়ন্তা,

তারা হারায় কালের অতলান্ত কালো গভীরে, 

আমজনতা ছুটতে থাকে

পদচিহ্ন আঁকে আগামীর পথে

নদী এসে মেশে যাটির সাথে

মাটি মিশে যায় মানুষের সাথে

মানুষ আকাশ একাকার হয়ে যায়।

ঈশিতা দেবনাথ

তুলির আঁচড়

 

চিরশ্রী দেবনাথ


             দাহ গান


                      -----চিরশ্রী দেবনাথ


হঠাৎ মনে হলো আমার কোনো

লেখাই আসল নয়, আগুন থেকে

জন্ম নিয়ে আসেনি সেই ঢেউ, 

জ্যোৎস্না থেকে চুরি করেছি আলো

জোনাকি থেকে গোপন আলোর

অভিসার, পল্লবিত গাছ থেকে

ছায়ার নরম কৃষ্ণ ইতিহাস

রৌদ্র দগ্ধ দুপুরের হলকা

মুখে মেখে যাকে চলে যেতে

দেখেছি অভিমানে, তার মুখ থেকে

কুড়িয়ে এনেছি দু একটি অঙ্গার

গরিব হয়েছি আজ, হৃদয়ে ধারণ

করেছি গৈরিক, নির্বাণের স্তুতি    

দীর্ঘ রাস্তা একা যাবো, স্বর্ণচোরা

ঘাসে ঢাকা, শস্যের খেতের পাশে, 

ঝড়ের আকাশের নিচে যেদিন মাটি 

গেয়ে উঠবে দাহ গান, বল্কল

খুলে দেখবো অস্তিত্ব বলতে ছিল

খানিকটা বর্ণমালা, শঙ্খমুখের পাতা।

ভবানী বিশ্বাস


                   অভ্যাস


                              ------ভবানী বিশ্বাস



আগে অমাবস্যা রাইতে পাহাড় থেইক্যা

নির্দ্বিধায় কেমন ঝর্ণা আনতাম, 

ডর কারে কয় চিনতাম না। 



মাটি কাইট্যা বানাইতাম পুকুর। 


সারাদিন পরিশ্রম করলেও

দিনশেষে কেমন নিশ্চিন্তে ঘুমাইয়া পড়তাম! 


প্রেশার স্যুগার বাড়লেও এত চিন্তা হইতো না। 


তুমি আইয়নের পর নিজের লেইগ্যা খুব চিন্তা হয়। 

মনটা কেবল কু-গায়, কু-কয়। 


ভাবি, এইভাবে যে 

আমি তোমার অভ্যাস হইয়া গেলাম

আমি চইলা গেলে তোমার কী হইব!

গৌরব নাথ


        শুধু আমাকেই শুনা যাচ্ছে


                                  ---- গৌরব নাথ


বাথরুমে গিয়ে পায়রা হয়ে বাকুম-বুকুম করি

কত কিনা বলি?

একটা শেষ হয় না আরেকটা কিছু বলে ফেলি

যেন কেউ মন দিয়ে আমাকে শুনছে

পৃথিবীর অন্য শব্দগুলো একান্তে মরে গেছে

শুধু আমাকেই শুনা যাচ্ছে

মধুমিতা ভট্টাচার্য


            প্রলাপ


                     ------মধুমিতা ভট্টাচার্য


মন পাগলের ধুম জ্বরে

নকসী কাঁথার তাপ জড়িয়ে 

বেহুশ বাউল প্রলাপ বকে

তিন প্রহরের তেপান্তরে,

চাতক তৃষ্ণা বুক ফাটিয়ে 

চৈত্র আকাশ ছেদ করে,

বাউল আকাশ বাউল বাতাস 

অকাল হেমন্তে ঝড় তোলে,

হাঘরে বাউল তবু

আষাঢ়ে সুখের সাধ করে,

মন পোড়া তাপ শরীরে

ভোর শিশিরের খোঁজ করে,

ধুম জ্বরেতে ঘুম ঘরেতে

গুম হয়ে যায় মনের বাউল,

বালিশ চাপা আকাশ মাপা

এক ফালি মেঘ

টুকরো হয়ে বরফ জমে

রোজ নিয়মের রোদ মাখে।

লোপা চক্রবর্তী


             সাধের খেলাঘর 


                             -----লোপা চক্রবর্তী


ব্যস্ত পৃথিবীতে মনের খোঁজ কেউ রাখে না,

দুঃখেরা আসে বিনা নিমন্ত্রনে।

স্বপ্নের অপমৃত্যু এখানে স্বাভাবিক ঘটনা,

তবুও মন আশায় দিন গোনে।

কল্পনার জগৎ সুন্দর হলেও,

দিন শেষে মেনে নিতে হয় বাস্তবতা।

অলস দুপুরে একটু হাসির খোঁজে,

কেউ কেউ বোনে অলীক রূপকথা।

এই পৃথিবীর সকলেই আত্মমগ্ন,

স্বার্থের খেলায় মাতে প্রিয়জন।

ততোদিনই দাম থাকে তোমার,

যতদিন তোমার প্রয়োজন।

তবুও আমরা সাধের খেলাঘর গড়ি,

খুঁজে ফিরি মন ভোলানো খেলনা।

দিনের শেষে ধরা পড়ে যায় জারিজুরি,

হাসি দিয়ে লোকানো গভীর কান্না।

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

 


     স্বীকারোক্তি


               ----- রাজেশ ভট্টাচার্য্য


ময়নাতদন্ত হোক। 

সামনে আসুক কঙ্কাল যত

কবর দিয়েছিলে তুমি।

সরে যাক কালো মেঘের ছায়া। 

পরিষ্কার হোক এখনই.... 



আমার প্রথম মৃত্যুরহস্য।



স্বর্ণপদকের দাবি জানাবো। 

পরিয়ে দেবো তোমার গলায়।

 আমার দ্বিতীয়-তৃতীয় মরণ বার্তা... 

তোমার তুমিকে না চেনালে।




রচনাকাল:- ১৬/০৩/২০২৩ ইং