সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

মলাট (১৭ তম সংখ্যা)


 

সম্পাদকীয়


      "শিশু" শব্দটির দ্বারা কি শুধু পুত্র সন্তানকে বোঝায় ? না, একদম না। শিশু শব্দটি দ্বারা যেমন শুধু পুত্রসন্তানকে বুঝায় না, ঠিক তেমনি শুধুমাত্র দরিদ্র অথবা অবস্থাসম্পন্ন পরিবারের সন্তানকেও বুঝায় না। শিশুদের নানান সমস্যার সমাধান এবং শিশু কল্যাণে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষকে উৎসাহিত করাই 'শিশু দিবস'-এর প্রধান উদ্দেশ্য। কিন্তু বাস্তবিক জীবনে অগণিত সমস্যায় জর্জরিত হতদরিদ্র পরিবারের সন্তানদের  অথবা পথশিশুদের নিয়ে 'শিশু দিবস' উদযাপন করা ডুমুরের ফুলের মতো। প্রতিদিন অগণিত হতদরিদ্র পরিবারের প্রতিভা সম্পন্ন শিশুদের প্রতিভার অপমৃত্যু হচ্ছে বিভিন্ন কলকারখানায় অথবা কোনো বিপদের ঝুঁকি সম্পন্ন কাজে। কন্যা নামক ফুলের কুঁড়ি প্রস্ফুটিত হওয়ার আগেই হচ্ছে নির্মম হত্যা। আমরা যতই আধুনিকতার বড়াই করি না কেনো, এখনো কন্যা সন্তান ও পুত্র সন্তানের ভেদাভেদ করার মত নিছক মানসিকতা থেকে আমরা অনেকেই বেরিয়ে আসতে পারিনি। 'শিশু দিবস' তখনই সার্থক হবে, যেদিন পুত্রকন্যা ভেদাভেদ ভুলে সমাজের সকল শ্রেণীর শিশুদের সমস্যা সমাধানে এবং কল্যাণে সমাজের সকল অংশের মানুষের শুভবুদ্ধি জাগ্রত হবে। 


       প্রিয় পাঠক, তিন মাস পর আবার ফিরে এলাম আপনাদের ভালোবাসার টানে। প্রকাশিত হলো সাহিত্য নয়নের "শিশু দিবস সংখ্যা ২"  নামক ১৭তম সংখ্যা। সমাজের সকল শ্রেণীর শিশুদের কল্যাণ কামনা করে তাদের উদ্দেশ্যে এবারের সংখ্যাটি উৎসর্গ করা হল। এবারের এই বিশেষ সংখ্যাটি পুষ্ট  হয়েছে যে সকল দীপ্তমান কবিদের লেখনীর স্পর্শে, আপনাদের সকলের প্রতি রইল  শ্রদ্ধা, ভালোবাসা ও অভিনন্দন। সুপ্রিয় পাঠক বন্ধুরা, অনেকক্ষণ ধরে বক্ বক্ করছি। আজ এটুকুই থাক। বাকি কথা হবে আগামী সংখ্যায়। আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম।




ধন্যবাদ-শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধাসহ----


রাজেশ ভট্টাচার্য্য


সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন

প্রাপ্তি

১৫ তম এবং ১৬ তম সংখ্যা প্রকাশের পর সম্মানিত পাঠক কর্তৃক কিছু প্রাপ্তি :-


ত্রিপুরা রাজ্যের ধর্মনগর থেকে হেমন্ত দেবনাথ মহাশয় লিখেছেন------

"সাহিত‍্য নয়ন"-এর ষোলতম সংখ্যা   প্রকাশিত  হয়েছে। এতে আমরা গর্বিত। খুব ভালো  লাগছে প্রচ্ছদ দেখে, সম্পাদকীয়  লেখাটা শৈল্পিক  দ‍্যোতনা লাভ  করেছে। এজন‍্য সম্পাদককে ব‍্যক্তিগত ভাবে স্বাগত  জানাই।

       প্রতিটি লেখাই আমার হৃদয়কে নাড়া দিতে  পেরেছে। সবাইকে  ধন‍্যবাদ জানাই। যাদের  ঐকান্তিক  প্রয়াসেই  সফলতা এসেছে, তাঁদের  সবাইকে  শ্রদ্ধাঞ্জলি  জ্ঞাপন  করছি। আমি  সাহিত‍্যপত্রটির অগ্রগমন কামনা করছি।

                 সশ্রদ্ধ  অভিনন্দন সহ----

               হেমন্ত  দেবনাথ।

                তারিখ :-01/08/2021.



পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান থেকে অমল কুমার মাজি মহাশয় লিখেছেন-------

আমার  প্রিয় "সাহিত্য নয়ন পত্রিকার জুলাই 2021 সংখ্যা  পেলাম।অজস্র ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা পত্রিকার  কর্ণধার ভ্রাতৃপ্রতিম রাজেশ ভট্টাচার্যকে।তার নিরলস প্রচেষ্টার ফলেই এমন একটি সাংস্কৃতিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হয়ে চলেছে নিয়মিত।শুভেচ্ছা র'ইল সমস্ত কলাকুশলীদের।যাঁদের সুচিন্তিত লেখনীর আঁচড়ে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে পত্রিকা।আমি কণামাত্র অংশগ্রহণ করতে পেরে নিজেকে ধন্য মনে করছি। অনেক অনেক শুভকামনা।



ত্রিপুরার ধর্মনগর থেকে জয়ত্রী চক্রবর্তীর মহোদয়া লিখেছেন-----

বাহ্...সম্পাদক মহাশয়... খাসা হয়েছে সম্পাদকীয় খানা...বড় ভালো লাগলো ভাই...



বাংলাদেশ থেকে দিলারা বেগম লিখেছেন-------

সাহিত্য নয়ন সমাজের দর্পণ। সম্পাদক মহাশয়ের এই প্রচেষ্টা প্রশংসনীয়। সকল কবিদের প্রতি রইল শুভকামনা। সাহিত্য নয়ন এগিয়ে যাক।



ধর্মনগর থেকে হেমন্ত দেবনাথ মহোদয় লিখেছেন-------

" সাহিত্য নয়ন"-এর পঞ্চদশতম সংখ্যা ( বর্ষামঙ্গল বিষয়ক সংখ্যা--2)  প্রকাশ করার জন্য সম্পাদকসহ সংস্থার সকলকে জানাই হার্দিক ভালোবাসা ও  আন্তরিক অভিনন্দন। লেখাগুলো মনোমুগ্ধকর ও সুখপাঠ্য হয়েছে। 

          আমি জোর গলায় বলবো যে, পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির বেলাল্লাপনার বিরুদ্ধে ও ঐক্যস্থাপনের পক্ষে " সাহিত্য-নয়ন" আজকের দিনে সবচেয়ে বড়ো চ্যালেঞ্জ। সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশে ও  মনকে পরিশীলিত করার ব্যাপারে লেখাগুলোর ভূমিকা অপরিসীম। আমি সাহিত্য পত্রিকাটির অগ্রগতি কামনা করি।    

                     শুভকামনায়--

                 হেমন্ত দেবনাথ। 

                    25/06/2021.



ধর্মনগর থেকে গৌরী দেবনাথ মহোদয়া লিখেছেন-----

সম্পাদককে ধন্যবাদ  জনাই পত্রিকা  প্রকাশের জন্য।প্রতিটি লেখা  পড়ে মন  ভরে গেল।



বাংলাদেশ থেকে বিমল বিশ্বাস মহোদয় লিখেছেন-----

আজকের সমাজে সাহিত্য নয়নের বড়ো প্রয়োজন। আমি সাহিত্য নয়নের উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।

অমল কুমার মাজি

 

        সেই ছেলেটি


                -------অমল কুমার মাজি


সবুজ-সবুজ একটি ছেলে

থাকত সে এক গাঁয়ে

হাঁটত খালি পায়ে।।


মেঠো হাওয়া সাঁঝ-সকালে

ক'রত আদর তাকে

পথের বাঁকে-বাঁকে।।


নদীর তীরে কাশের বনে

ঘুরত সে আনমনা

খুঁজত জীবন-কণা।।


তারায় ভরা রাতের আকাশ 

বাসতো তাকে ভালো 

মাখিয়ে মিঠে আলো।।


কখন যে সব হারিয়ে গেল 

জীবন-পথের বাঁকে 

কঠিন ঘুর্ণিপাকে।।


প্রেমের কাঙ্গাল সেই ছেলেটি

ভুলেছে সব সুর 

গাঁ যে অনেক দূর।।

হেমন্ত দেবনাথ

 

         দীপাবলী


              -------- হেমন্ত দেবনাথ


কার্তিকের  অমাবস্যায়--

দীপাবলী উৎসব।

প্রীতি-শ্রদ্ধা ও হর্ষে আপ্লুত সব।

মহামিলনের প্রেরণা দেয়।

ক্লেশ-যাতনা দূরে ভাসিয়ে  নেয়।

উৎসব আনে "সংহতির বাণী।"

দূরে  যায়  সব আঁধার আর গ্লানি।


অসুররা সবে করিল চক্রান্ত --

স্বর্গরাজ‍্য করিবে আক্রান্ত।

দেবরোষে সৃষ্ট দেবী দুর্গতিনাশিনী।

তুমুল রণে স্বর্গরাজ্য  ত্রাণিতে দেবী হলেন মহিষাসুরনাশীনি।

অসুররা পেল অপরিমিত সাজা--

দীপাবলী উৎসবে তাই তো শ‍্যামাপূজা।

ক্ষতিকর পোকারা সব মারা পড়ে ---

দীপাবলীর আলোকসজ্জায়।

কৃষক তখন  পৃথিবীকে পায় নবসজ্জায়।

কিশোর কুমার ভট্টাচার্য


         মূলধন 


             ------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য


শিশুরা- ই   আসল,

ওরাই মূলধন 

ওদের কে দাও

 ভালো যোগান,

ওদের সাথে করলে কারচুপি  

নিভে যাবে

 আছে যত বাতি -কুপি।

ওদের পাশে থাকো

 ছায়াসঙ্গী হয়ে

 আকর্ষ দিয়ে উঠবে বেয়ে

উপরে অনেক উপরে। 

ওরা তো শিশু!

 ঘুরে ফিরে 

দেখতে চায় অনেক কিছু।

ওদের মনে প্রশ্নের ডালি   

দিও না ওদের বকা গালি 

খোরাক যোগাও

দেখবে মূলধন হবে না খালি।



 রচনাকাল:- ১১/১১/২০২১,বৃহস্পতিবার

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

 

               অপ্রত্যাশিত


                        ------ রাজেশ ভট্টাচার্য্য


অপরিচিত মুখগুলো আজ খুব পরিচিত। 

প্রথম যোগে পরিচয় পাইনি যদিও। 

সেদিন হয়েছিল আপন চিন্তার বহিঃপ্রকাশ। 

উচ্চারিত হয়েছিল পঞ্চজন সম্মুখে---

কীর্তির্যস্য স জীবতি।

কীর্তি আজ পরিহাসের আঁতুড়ঘরে।

বঞ্চনা হয়েছে পরম সঙ্গী। 

দাবী উঠেছিল তার প্রতিবাদে। 

কিন্তু কেউ কথা রাখেনি। 

নিজেও হয়তো আর রাখিনা।

শান্তশ্রী মজুমদার

 

       আমার ভুবন 


             -------শান্তশ্রী মজুমদার 


রাতের আঁধার কেটে 

সূর্য জাগে রোজ ভোরে। 


সোনালী আলো ছড়িয়ে 

চরাচর চোখ খোলে। 


পূর্ব গগন হেসে ওঠে 

কমলা আবির গায়ে মেখে।


প্রতিটি ভোর  স্বর্গ রচে  

প্রজাপতি ফুলের মিলনে। 


ফুল সুন্দর রূপ সৌরভে 

শিশুরা শুধুই মাতৃক্রোড়ে। 


শিশুর হাসিতে স্বর্গ নামে 

চাঁদ রূপসী হয় কোজাগরী রাতে।


মিটিমিটি তারারা পথচলে ছায়াপথে 

ক্ষুদ্র তবু দীপালোক ছড়ায় ভুবনে।



রচনাকাল :- 5/11/2021

নিরঞ্জন দাস

 

      তোমাকে খুঁজি 


                -------নিরঞ্জন দাস 


সভাপতি ভাষণ রাখলেন । 

হে কবি, তুমি জাগো । 

তুমি গন্তব্যে পৌঁছাও।

ফাগুনের মধুর সাহিত্য আলাপন।

দিগন্ত বিস্তৃত উদাসীনতা। 

অব্যক্ত কবিতার খোঁজে। 

সবুজ মাঠ পেরিয়ে।

মনের আকাশে খুঁজে পাই, 

আশার সাগর দাঁড়ি।

মনে পড়ে সন্তোষ রায়, মন্টু দাস আর

আকাশ চাকমার অনবদ্য কবিতা পাঠ ।

সুস্থ সংস্কৃতির খুঁজে সাহিত্য আড্ডা । 

চল পানসি, চল পাগলি কবি ।

এবার গন্তব্য-----

মলিনা দেবনাথ

  

                দহন


                        ------মলিনা দেবনাথ


অন্তর কুরে কুরে খায় অমুঘ যন্ত্রনা। 

অমৃতের সন্তানদের ভালোবাসা,

আজ ভয় জাগায়।

বিশ্বাসের ভিতরে ভিতরে জন্ম নেয় অবিশ্বাস। 

হাসির অন্তরালে প্রবাহিত রক্তগঙ্গা।

প্রজন্মে প্রজন্মে বদলায় ভাঁওতাবাজির ইতিহাস।

পুরোনো রক্তের শিরা অভ্যাস বসত ভুল করে।

তরঙ্গাইত জল, সোনা গলা রদ্দুর,

ভুল পথ দেখায়।

মেল-বন্দনের ধরণ পাল্টে সাঁত পাক পরিণত লিভটুগেদারে, 

আসল নকলের ভেদাভেদ ভেঙ্গে,

সোনা-মেকি সোনা একাকার

থেঁকে থেঁকে কথা কয় অপূর্ণ জীবন।

চোখে বাঁকা দৃষ্টি আড়াল করে

বাইরে বেরিয়ে আসে

মিষ্টি হাসির জোয়ার।

সুজন দেবনাথ

 

       তুমি নবরূপে এসো


                     -------সুজন দেবনাথ


ওহে ঈশ্বর,

তুমি কি আজ চোখ বুজে আছো,

নাকি পাষাণ হয়ে গেছো?


হ্যাঁ জানি,তুমি এমনটাই করবে।

কারণ,সমাজের বুকে আজকের ভেদাভেদ টা

একদিন তুমিই তো সৃষ্টি করেছো।

যদি তা না হয় তবে কেন,

তুমি তোমার একই হাতের সৃষ্টিতে

এতো ভিন্নতা রাখলে?

কেন সৃষ্টি করলে ভালো-মন্দের?


দেব-দানব, সুর-অসুর তো--

তোমার হাতেই গড়া।

ওদের তুমি মানুষ না বানিয়ে

দস্যু বানালে বলেই তো--

আজ ওদের টানা-হ্যচরায় তুমি দিশেহারা।


তোমার সৃষ্টিই আজ তোমাকে

কটাক্ষ করা প্রশ্ন বাণে বিদ্ধ করে,

ভীষ্মের মতো শয্যাশায়ী করে রেখেছে!

আর চারিদিকে জ্বেলেছে প্রতিহিংসার আগুন।

যে আগুনে আজ তুমি দগ্ধা,

আর ধীরে ধীরে তুষের আগুনের মত

তোমার সৃষ্টি পুড়ে হচ্ছে ছাঁই।


বলো ঈশ্বর,

তুমি আর কতকাল চোখ বুজে থাকবে?

অন্যায়,অত্যাচার, আর পাপে

গোটা সৃষ্টি ধ্বংস হলে তবেই বুঝি চোখ খুলবে?


এইবার জাগো ঈশ্বর,

ধরনীর বুকে আবার শান্তি,সম্প্রীতি,

আর ঐক্য ফিরিয়ে আনতে

নবরূপে নেমে এসো তুমি,

তোমার সৃষ্টি রক্ষার্থে।

মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য

 

                বারণ


                              -------মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য


তুমি সৃষ্টি,প্রণয়ী,প্রলয়ংকরী

প্রকৃতি,শত রূপে মনমোহিনী।

সৃজনের ধারয়িতা,ধ্বংসের রুদ্রানী

তোমার গর্ভে জন্ম পুরুষ জাতি।


স্রষ্টার যাকিছু অর্ধে সমঅধিকার,

তবুও মুখবুঝে সও শত অনাচার।

পুরুষের অনুপ্রেরণা নারী,যোগায় শক্তি 

অথচ মুখলুকিয়ে কাঁদে নারীই।


যুগে যুগে অতীত সাক্ষী,

সীতা,অহল‍্যা,মন্দোদরী,দ্রোপদী

সমাজ তোমাদেরই বানিয়েছিল দোষী

আজও একই পথের পথিক তুমি।


একবিংশ শতকের মুক্ত গগনে

দগ্ধিত নারীর কালো ধোঁয়া ভাসে

ভুবন কাঁপে সম্ভ্রম হীনতার আর্তনাদে 

লাঞ্চনা বঞ্চনা অবিরত চলে।


দিনের নির্জনতায়,রাতের আঁধারে

একলা চলা আজও বারণ আছে।

অথচ জলে,স্থলে অন্তরীক্ষে

তোমার প্রদীপ্ততায় আলো জ্বলে।


সময়ের দাবীতে অধিকার আদায়ে

অবক্ষিত সমাজে মানবতা রক্ষিতে

হে নারী,উঠ তুমি জেগে

পুরুষ -নারীতে সমতা;জানাও সমাজেরে।

প্রিয়াঙ্কা নন্দী

 

          তারার মেলা


                   ------ প্রিয়াঙ্কা নন্দী


আঁধার রাতের কালো আকাশে

 হাজার তারার মেলা । 

চমকে সেই তারারা মিলে

করছে কত খেলা। 

আকাশ জুড়ে সকলে মিলে

 রয়েছে কেমন করে। 

দূর থেকে দেখে মনে হয় 

হাজার টুকরো হীরে। 

আমার মনের ইচ্ছা জাগে। 

মেঘের ভেলায় ভেসে 

কখনো যদি যেতে পারতাম 

সেই তারার দেশে।

গঙ্গা সাহা

 

              মা জানো


                           -------গঙ্গা সাহা


মা জানো! তোমার মেয়ে এখন ,

অনেক বড়ো হয়ে গেছে।

সব কাজ নিজে করতে শিখেছে।।


তোমার যে মেয়ে কখনও,

রান্না তো অনেক দূরের কথা,

নিজে কখনও ভাত নিয়ে খায়নি,

সেই মেয়ে এখন রান্না করতে শিখেছে।


যে মেয়ে রোজ খেতে যাওয়ার আগে,

বার বার কি রেঁধেছো জিজ্ঞেস করতো,

এটা খাবোনা সেটা খাবোনা জেদ করতো,

সে এখন এক সেদ্ধ দিয়ে খেতে শিখেছে।

মাঝে মাঝে তো আধ পোড়াও খেয়ে থাকে।


যে মেয়ে স্কুলে যাওয়ার আগে রোজ ,

দেরি হয়ে গেছে ভাত খবোনা বলে চেঁচাতো,

আর তুমি জোর করে মেখে খাইয়ে দিতে,

সে এখন রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে,

নিজে হাতে রান্না করে খেয়ে যেতে শিখেছে।


জানো এখন দেরি হলে না খেয়ে কলেজ যায়,

কারন এখনতো আর তুমি কাছে নেই,

যে তুমি জোর করে খাইয়ে দেবে।

তাই এখন না খেয়ে থাকতেও শিখেছে।


যে রোজ রাতে খাবোনা বলে ঘুমিয়ে পড়তো,

আর তুমি জোর করে তুলে খাইয়ে দিতে,

জানো সেই মেয়ে এখনও না খেয়ে ঘুমায়।

কিন্তু এখন আর কেউ তুলে খাওয়ায় না।


যে মেয়ে সব্জী কিভাবে কিনে সেটাই জানেনা,

যে কখনও মাছ মাংসের বাজারে যায়নি,

সেই মেয়ে এখন বাজার করতে শিখে গেছে।


জানো মা! তুমি যাকে অগোছালো বলতে,

সে এখন নিজের ঘর গোছাতে শিখেছে।

ঘর ঝাড় থেকে শুরু করে ঘর মোছা,

বাসন মাজা সব নিজের হাতে করে।


যে মেয়ে রোজ তুমি ধুয়ে দেবে বলে,

স্নানের ঘরে ভেজা জামা রেখে দিতো,

সে এখন নিজের জামা নিজে ধুতে শিখেছে।


যে মেয়ে আগে তোমার কানের কাছে,

সারাক্ষণ বকবক করে তোমায় বিরক্ত করতো,

সেই মেয়ে এখন সারাদিনে এক দুই বার,

তাও পাঁচ থেকে দশ মিনিট ফোনে কথা বলে।


যে রোজ স্কুল থেকে ফিরে তোমাকে খুঁজতো,

আর কোথাও না দেখলে চেঁচামেচি করতো,

সে এখনও কুড়ি ত্রিশ দিন পর পর বাড়ি ফিরে- তোমাকে দেখতে না পেলে চেঁচাতে থাকে।


যে মেয়ে তোমাকে ছাড়া রাতে ঘুমাতো না,

সেই মেয়ে এখন একা ঘুমোতে শিখে গেছে।

সত্যি তোমার মেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে মা!

কিন্তু জানি সারাজীবন আমি তোমার কাছে,

তোমার সেই আগের ছোট্ট মেয়েটাই থাকবো।

সুরমা আকতার

 

       অতীত স্মৃতি 


              -------- সুরমা আকতার 



স্মৃতির পাতাটা আজ,

একটু দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।

যেখানে মিলে হাসিরছলে,

ছেলে মানুষী ভাবনাটুকু।

স্মৃতির পাতা আজ,

একটু দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।

ঐ মায়া মাখানো সোনালী দিনগুলো।

যেখানে হাসির ছলে রয়েছে  ভুলকরা দিনগুলো।

মাঠের সেই লুকুচুরি খেলা,

আজ আর হয় না দৃশ‍্য।

আজ আর পাওয়া যায় না,

ঐ ছেলেবেলার বন্ধুর সঙ্গ।

ব‍্যস্ততায় বিভোর জীবন, আজ আর হয়না মিলন।

স্মৃতির পাতায় সবই আজ স্মৃতি,

ঐ দিনগুলো হারিয়ে  গেছে ব‍্যস্ততার মাঝে।

যুগের পরিবর্তন এমন হচ্ছে,

অতীত স্মৃতি অতীতেই রয়ে যাচ্ছে।

পূজা নস্কর

     

                           ঘুমন্ত জ্ঞান 


                                         ------পূজা নস্কর 


মায়ের সেই দামাল ছেলেরা আজ তোমরা জেগে উঠো, 

আর থেকোনা তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে।

তোমাদের যে খুব প্রয়োজন সমভূমি রক্ষার্থে ।

ওদের লালাহীত চোখ আমাদের একত্রে 

মহাশক্তিকে দেখে যেন ভয় পিছু হটতে বাধ্য হয়।

শক্ত করো কলমাস্ত্র গড়ে তোল বন্দুকের ন্যায়,

 কলমের প্রতিটি বর্ন হয়ে উঠুক গুলির সমান।

 বর্ণের প্রতিটি গুলিতে ওদের শেষ হোক পশু সত্তা।  

ওদের মাঝে বিবেক জাগ্রত হোক

হে ঈশ্বর ওদের আত্মাকে শুদ্ধিকরণ করো

চৈতন্য আনো মনে ।

অসহায় শিশুর কান্না আর ক্ষত নারীর আর্তনাদ 

তোমার কানে পৌঁছাচ্ছে না ?

এখনো কি নির্বাক হয়ে চুপ করে থাকবে 

তোমার অস্তিত্ব নিয়ে যে  সবাই প্রশ্ন করবে ...!

দামাল ছেলেদের মনে শক্তির প্রেরণা দাও 

হে ঈশ্বর কৃপা করো...।