সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

রবিবার, ১৪ নভেম্বর, ২০২১

গঙ্গা সাহা

 

              মা জানো


                           -------গঙ্গা সাহা


মা জানো! তোমার মেয়ে এখন ,

অনেক বড়ো হয়ে গেছে।

সব কাজ নিজে করতে শিখেছে।।


তোমার যে মেয়ে কখনও,

রান্না তো অনেক দূরের কথা,

নিজে কখনও ভাত নিয়ে খায়নি,

সেই মেয়ে এখন রান্না করতে শিখেছে।


যে মেয়ে রোজ খেতে যাওয়ার আগে,

বার বার কি রেঁধেছো জিজ্ঞেস করতো,

এটা খাবোনা সেটা খাবোনা জেদ করতো,

সে এখন এক সেদ্ধ দিয়ে খেতে শিখেছে।

মাঝে মাঝে তো আধ পোড়াও খেয়ে থাকে।


যে মেয়ে স্কুলে যাওয়ার আগে রোজ ,

দেরি হয়ে গেছে ভাত খবোনা বলে চেঁচাতো,

আর তুমি জোর করে মেখে খাইয়ে দিতে,

সে এখন রোজ সকালে ঘুম থেকে উঠে,

নিজে হাতে রান্না করে খেয়ে যেতে শিখেছে।


জানো এখন দেরি হলে না খেয়ে কলেজ যায়,

কারন এখনতো আর তুমি কাছে নেই,

যে তুমি জোর করে খাইয়ে দেবে।

তাই এখন না খেয়ে থাকতেও শিখেছে।


যে রোজ রাতে খাবোনা বলে ঘুমিয়ে পড়তো,

আর তুমি জোর করে তুলে খাইয়ে দিতে,

জানো সেই মেয়ে এখনও না খেয়ে ঘুমায়।

কিন্তু এখন আর কেউ তুলে খাওয়ায় না।


যে মেয়ে সব্জী কিভাবে কিনে সেটাই জানেনা,

যে কখনও মাছ মাংসের বাজারে যায়নি,

সেই মেয়ে এখন বাজার করতে শিখে গেছে।


জানো মা! তুমি যাকে অগোছালো বলতে,

সে এখন নিজের ঘর গোছাতে শিখেছে।

ঘর ঝাড় থেকে শুরু করে ঘর মোছা,

বাসন মাজা সব নিজের হাতে করে।


যে মেয়ে রোজ তুমি ধুয়ে দেবে বলে,

স্নানের ঘরে ভেজা জামা রেখে দিতো,

সে এখন নিজের জামা নিজে ধুতে শিখেছে।


যে মেয়ে আগে তোমার কানের কাছে,

সারাক্ষণ বকবক করে তোমায় বিরক্ত করতো,

সেই মেয়ে এখন সারাদিনে এক দুই বার,

তাও পাঁচ থেকে দশ মিনিট ফোনে কথা বলে।


যে রোজ স্কুল থেকে ফিরে তোমাকে খুঁজতো,

আর কোথাও না দেখলে চেঁচামেচি করতো,

সে এখনও কুড়ি ত্রিশ দিন পর পর বাড়ি ফিরে- তোমাকে দেখতে না পেলে চেঁচাতে থাকে।


যে মেয়ে তোমাকে ছাড়া রাতে ঘুমাতো না,

সেই মেয়ে এখন একা ঘুমোতে শিখে গেছে।

সত্যি তোমার মেয়ে অনেক বড় হয়ে গেছে মা!

কিন্তু জানি সারাজীবন আমি তোমার কাছে,

তোমার সেই আগের ছোট্ট মেয়েটাই থাকবো।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন