সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

মলাট (একাদশ সংখ্যা)


 

সূচিপত্র (একাদশ সংখ্যা)


 

সম্পাদকীয়

 

    "আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী আমি কি ভুলিতে পারি?"

     একুশে ফেব্রুয়ারী প্রতিটি বাঙালির কাছে একটি স্মরণীয় দিন। আমরা স্বাধীনতা পেলাম মাতৃভূমিকে ত্রিখন্ডিত করে।  ইংরেজ ও তৎকালীন দেশীয় নেতৃবৃন্দের প্রবল ইচ্ছায় ভৌগলিক দিক দিয়ে দূরত্ব থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র ধর্মীয় সংখ্যাগরিষ্ঠতার উপর নির্ভর করে প্রতিষ্ঠিত হলো পূর্ব পাকিস্তান এবং পশ্চিম পাকিস্তান মিলে পাকিস্তান নামক রাষ্ট্র। শরীরের অংশ হয়ে গেলো প্রতিবেশী দেশ। পশ্চিম পাকিস্তানের ঊর্দুভাষীরা ধর্মের দোহাই দিয়ে পূর্ব পাকিস্তানকে করায়ত্ত করতে চাইলো ঐ ভাষাকে আশ্রয় করেই। কেড়ে নিতে চাইল নিষ্পাপ শিশুর মুখের বুলিকেও। এমনি এক দিনে একুশে ফেব্রুয়ারী ১৯৫২ সাল তারই প্রতিবাদে বাংলা মায়ের দামাল ছেলেরা নেমে আসে রাজপথে। জ্বলতে থাকে সারাবাংলা। এই রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম পরবর্তীকালে পথ দেখালো সারা পৃথিবীকে এবং হয়ে রইল এক অবিস্মরণীয় দৃষ্টান্ত। ১৯৯৯ সালের ১৭ই নভেম্বর জাতিসংঘের শিক্ষা-বিজ্ঞান ও সাংস্কৃতিক সংস্থা, ইউনেস্কো ২১শে ফেব্র‌ুয়ারীকে "আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস" হিসাবে স্বীকৃতি দিল। আজকের এই দিনে দাঁড়িয়েও মাতৃভাষাকে কি আমরা উপযুক্ত সম্মান দিতে পারছি? মাতৃ দুগ্ধসম মায়ের ভাষাকে অবহেলা করে আজ আমরা পুষ্টির অভাবে বিকলাঙ্গ হতে চলছি। 

        প্রিয় পাঠক, আপনাদের ভালোবাসার টানে প্রকাশিত "অমর একুশে" নামক সাহিত্য নয়নের একাদশতম সংখ্যাটি শ্রদ্ধা নিবেদন পূর্বক ভাষা শহীদদের প্রতি উৎসর্গ করা হলো। আপনাদের সার্বিক মতামত পাবো এই আশা নিয়ে এবারের মতো বিদায় নিচ্ছি। আবারো দেখা হবে বসন্তের সংখ্যায়।


ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধা সহ ----

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন

কিশোর কুমার ভট্টাচার্য

 

      ফেব্রুয়ারীর একুশ 


                         -----কিশোর কুমার ভট্টাচার্য 


প্রভাতের অরুণোদয়ে

গুঞ্জন আর কাকলিতে

চারিদিক হরবোলা। 

শিশুরা খুলেছে বইয়ের পাতা

শিখছে মাতৃভাষার বর্ণমালা। 

রফিক, জব্বার, বরকত,

সুকোমল,সুদেষ্ণা আর সালাম

মাতৃভাষার পতাকাতলে দাঁড়িয়ে 

তোমাদের স্মরি,জানাই সালাম।

মাতৃভাষা! 

তুমি হৃদয় জুড়ে রয়েছ বসি,

তোমার জোরেই সাদা পাতায় সবাই চালায় ভাঙা- গড়ার মসি।

মাতৃভাষায় কান্না- হাসি

এই ভাষাতেই সুনাম, 

বিদেশি র দাপটে 

মাগো!

আর যেন না হয় তোমার বদনাম।



রচনাকাল :-২১-০২-২০১২, মঙ্গলবার।

হেমন্ত দেবনাথ

 

                        মাতৃভাষা


                                   ------হেমন্ত দেবনাথ


মাতৃভাষা মানে স্রোতস্বিনীর স্রোতধারা।

মাতৃভাষা মানে পাহাড় থেকে নেমে আসা ঝর্ণাধারা।

মাতৃভাষা মানে মায়ের ভাষা।

মাতৃভাষা মানে রবীন্দ্রনাথ-বিদ্যাসাগরের-বিবেকানন্দের ভাষা।

মাতৃভাষা মানে সুন্দরের টানে পাগল-পারা মানুষের ভাষা।

মাতৃভাষা মানে রফিক-সালাম-বরকত আর জব্বারের ভাষা।

মাতৃভাষা মানে মানবমনের স্বতঃস্ফূর্ত প্রকাশ।

মাতৃভাষা মানে জোছনারাতের স্নিগ্ধ চাঁদ।

মাতৃভাষা মানে পবিত্র একগুচ্ছ গোলাপ

মাতৃভাষা মানে সংহতি আর স্নিগ্ধতা।

মাতৃভাষা মানে ক্লীবতা আর অপসংস্কৃতির বিদায়--

মাতৃভাষা মানে ভাষা রক্ষা করবো-- এ যে মোদের দায়।

মাতৃভাষা মানে ভাষা-শহীদের প্রতি মোদের প্রণতি--

মাতৃভাষা মানে "সব ভাষার সম্মানে সব ভাষার

বিকাশে" মোদের না হয় যেন ঘাটতি।

অমল কুমার মাজি

 

       চাওয়া -পাওয়া

                

                      -----অমল কুমার মাজি                             


যাবো-যাবো করে হয়নি তো যাওয়া

এখনও দিব্যি আছি

হৃদয়ের কাছাকাছি !!

শেষ হয়নি যে তরী খানি বাওয়া

বুঝি আছে বাকি আরও চাওয়া-পাওয়া

তীর খুঁজে ফিরি ভাঙা হাল ধ'রি

খেলি শুধু কানামাছি!!

যেতে-যেতে পথে থেমেছি ক্ষণেক

এ দু'চোখ ভরে দেখেছি অনেক

যা পেয়েছি তাই নিয়েছি কুড়ায়ে

করি নাই বাছাবাছি!!

কি যে চাই সে তো এখনও বুঝিনি

অমূল্য সে ধনে কখনও খুঁজিনি

থাকে না যে ধন সেই ধনে বৃথা

আজও পথে-পথে যাচি !!!!

কবিতা সরকার

 

                 টোটেম


                            -----কবিতা সরকার



   কাটছে দিন            কাটছে জীবন 

           সময়ের বেড়াজালে, 

   না পাওয়া ব্যাথা        দিচ্ছি বিদায়

            ভাগ্যের অজুহাতে।

   আত্মীয় যত            বন্ধু স্বজন

            কেউ নয় পর তবু, 

             নয় কেউ আপন। 

   ছিন্ন ভিন্ন যত          মানুষের দল 

             না পারে সহিতে 

              করে টলমল, 

   চারিদিকে বহু          মানুষের ভিড়ে 

            অসুখীরাও মুখ ঢাকে 

               সুখীর টোটেমে। 

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

 

    দুফোঁটা শ্রদ্ধা


                -----রাজেশ ভট্টাচার্য্য


প্রণাম হে বীর শহীদ,

প্রণাম তোমাদের মাতৃ চরণে।

বায়ান্ন সালের একুশে ফেব্রুয়ারি

অত্যাচারী পাকিস্তানির কবল থেকে

রক্ষা করতে মুখের বুলি,

বুক পেতে নিলে ভূষণ্ডির গুলি।

নেমেছিলে তোমরা রাজপথে,

অশ্রু ঘুচাতে বঙ্গ মাতৃকার।

মাতৃভাষা রক্ষার করলে অঙ্গীকার।

হাসি মুখে দিলে প্রাণ,

রক্ষা করলে মায়ের মান।

ঊনসত্তর বছর পরে

আজ এই পূণ্য প্রভাতে,

দুফোঁটা অশ্রুপূর্ণ শ্রদ্ধা 

নিবেদিলাম তোমাদের চরণে।

মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য

 

         ঊনিশের ডাক


                            ------মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য


শত শহীদের রক্তে নিবন্ধিত তুমি

সোহাগ বিজরিত মুখের বুলি।

ঊনিশের বাহান্ন কিবা একষট্টি

মায়ের ভাষার হয়নি তিলাঞ্জলি।

রফিক,জব্বার করেছেন আত্মদান

ওপার বাংলার উন্মুক্ত রাজপথে।


ঊনিশে রূধির বাহে ভাসে বরাকভূমি

শহীদ হীতেশ,কানাই,কমলা;

সহস্র আত্মত‍্যাগ;মিলেছে সেদিন

বাংলা ভাষার সরকারী স্বীকৃতি,

অধিকার ছিনিয়েছে রক্তের বিনিময়ে

অস্তিত্বের ঠিকানা  তোমাতেই মিশেছে।


গণতন্ত্রের দেশে একাধিপত‍্যের দাম্ভিক ফরকান

সাম্রাজ‍্যবাদী গোষ্টীর কূট কৌশল,

আবারও চাইছে ছিনয়ে নিতে

বাঙ্গালীর স্পন্দন,নাড়ীর বাঁধন।

বাংলা  জাতীর অহংকার,মানস কামনা

কৃষ্টি সংস্কৃতির অমলিন রূপরেখা।


আত্মাদরের খাতিরে শতাব্দীর সেই ঊনিশ

আবার  ফিরুক বাংলার  বুকে,

অস্তিত্ব রক্ষার তাগদায় বিশ্বায়নের প্রতিরোধে-

রাষ্ট্র নীতির গন্ডী পেরিয়ে ঐক‍্যবদ্ধ-

বাঙ্গালী প্রতিবাদ তুলুক গড়ে,

অস্তিত্বের ঠিকানা তোমাতেই যেন মিশে।

সুমনা ভট্টাচার্য্য

 

                      মানসিক স্বাস্থ্য


                                   ------সুমনা ভট্টাচার্য্য


       আমরা মানুষ, কখনো আমার স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারি না। একটি গাড়ি যেমন চলতে গেলে পেট্রোলের প্রয়োজন হয়, মাঝে মধ্যে গাড়ির বিভিন্ন পার্স নষ্ট হয়ে যায়। তাকে মেরামত করতে হয়, তেমনি আমরাও। আমাদেরও চলতে গেলে শরীরের পার্স গুলো মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে যায়। তখনই আমরা ছোটে যাই ডাক্তারের কাছে। আমরা প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে খুবই সচেতন।


        কিন্তু আমরা কখনো কখনো ভুলে যাই যে শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য বলেও একটা ব্যাপার আছে। ভাবতে অবাক লাগে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যটাকে একটু ভিন্ন চোখে দেখে। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি মানে পাগলের লক্ষন। আমরা অনেকাংশেই বুঝে উঠতে পারিনা যে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য একে ওপরের পরিপূরক। শারীরিক অসুস্থতা যেমন আমাদের মনকে প্রভাবিত করে, ঠিক তেমনি মানসিক বিষন্নতাও আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। জীবনে চলার পথে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে খুশি রাখা, আমি খুশি থাকলেই তো আপনাকে খুশিটা উপহার দিতে পারবো। মনের দিক থেকে আনন্দে থাকতে পারলে, শারীরিক অসুস্থতা অনেকাংশে জব্দ করা যায়।


      আজকাল এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে প্রায় প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো কারণে মানসিক যন্ত্রনায় ভোগছে, যে যন্ত্রনা তাকে আস্তে আস্তে ঠেলে দিচ্ছে মানসিক অসুস্থতার দিকে। মানসিক অসুস্থতা এমনই মারাত্বক, যা মানুষকে পুরোপুরি অন্ধকার একটা জগতে নিয়ে যায়। সবকিছুই মানুষটার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়। কিন্তু মানুষ একদিনে মানষিক রোগী বা অসুস্থতার চরম শিকরে গিয়ে পৌছায় না।  কখনো কখনো সে কাউকে তার মনের কথা বলতে পারে না। কারণ তাঁর চারপাশের পরিবেশটা এসব কথা শুনা বা বোঝার উপযুক্ত নয়। মানসিক অসুস্থতা দুধরনের হয়, কেউ বুঝতে পারে সে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে আবার কেউ নিজের থেকে সেটা আন্দাজ করতে পারেনা। 


      আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখা প্রয়োজন তাদের ছেলে মেয়েরা মনের দিক দিয়ে সুখী আছে কি না। বিশেষ করে মা, বাবাদের ঐ বিষয়ে সচেতন থাকাটা আবশ্যক। আমরা যখন‌ কখনো বুঝতে পারি যে আমরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি, তখন আমাদের মনে আরেকটা ভয় কাজ করে ডাক্তার এর কাছে যাওয়াটা। মানসিক ডাক্তার এর কাছে যাচ্ছি আমি পাগল নাকি। তখন অনেক ক্ষেত্রে আমরা পরিবারের সাহায্য টুকুও পাইনা। এভাবেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা মৃত্যু পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। আজকালকার অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন, কিন্তু তারা হলেন আমাদের সমাজের প্রথম সারির মানুষ। আমাদের মত সাধারণ জনগন এখন সেই বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল নই, যতটা হওয়া প্রয়োজন। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের জীবনের চলার পথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রত্যেক মা বাবা, স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, বন্ধু, কাছের মানুষ সবার উচিত খেয়াল রাখা, তাঁর সন্তান বা আশেপাশের কেউ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে কি না। সুস্থতা নির্ভর করে শারীরিক ও মানসিক দুটোর উপর। সমাজটাকে সুন্দর করে তুলতে গেলে প্রতিটি মানুষের মানসিক আনন্দ, স্বাচ্ছন্দ্যের প্রয়োজন।‌ মন ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন, সেই মনটাকে ভালো রাখতে গেলে ‌মানসিক সুস্থতা জরুরী। তাই প্রত্যকের নিজের খুশি থাকার দিকে নজর দিতে হবে, মন খারাপ থাকলে  প্রিয়জনদের সাথে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। নিজের মনের সৌন্দর্যতা বিলিয়ে দেই সবার মাঝে। পৃথিবীটা হয়ে উঠুক সুন্দর থেকে সুন্দরতম।

মনচলি চক্রবর্তী

 

        মধুর স্বপ্ন 


                        -----মনচলি চক্রবর্তী 


পাখির গুনগুন সারাদিন 

এভাবেই কেটে যায় আমার একার দিন 

সবুজে  শ্যামলে মন ছুটে চলে 

কোন অজানা মায়াজালে

কাশফুলের ই গন্ধে 

যেন মন মাতাল করে

চলেছি কোন এক এক অজানা সূদুরে

অচেনা সাগর তীরে

মুক্তো যেথায় লুকিয়ে থাকে ঝিনুক মাঝারে

স্বপ্নিল চোখে ডুব দিয়ে ভেসে যাই

কোন অজানা সমুদ্র সৈকতে

অজানা অচেনা অবাক আনন্দে

মন মেতে উঠে নৃত্যের ছন্দে।

ফিরেছি যখন আমি মায়াজাল ছিঁড়ে একা আমাতে

মধুর স্বপ্ন গুলি পড়ে রইলো শুধু হৃদয় সাজাতে।

সুজন দেবনাথ

 

          মাতৃভাষা


                     ------সুজন দেবনাথ


"আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো

একুশে ফেব্রুয়ারি,

আমি কি ভুলিতে পারি?"

হায়রে আমার দুর্ভাগা সমাজ,

সভ্যতা ভুলে নিজেকে সঁপছে

বিদেশি আদপ কায়দায়।

এটা নাকি এখন আধুনিকতা,

মর্ডান স্টাইল!

বাঙালির তেলে ঝালে

সর্ষে ইলিশটা ছেড়ে এখন,

নিত্য টানাটানি চলছে

বিদেশি চাইনিজ নিয়ে।

আমার প্রিয়ভাষা, বাংলাভাষা

অমৃতময় মাতৃদুগ্ধ সমান।

যে ভাষাকে মর্যাদা দিতে

রক্তে রাঙিত হয়েছে কত,

আমার মাতৃভূমির তরুণ তাজা প্রাণ।

অথচ আজ সভ্য শিক্ষিত-

সমাজ কতো উন্নত,

নিজের মাতৃত্ব কে নির্বাসনে পাঠিয়ে,

বিদেশি ভাষা চর্চায় সদা মুখরিত!

কাজী নিনারা বেগম

 

              শেওলার খাঁজ


                               ------কাজী নিনারা বেগম


ঢালু পাহাড়ি উপত্যকায় জন্মানো শেওলা,,

হোঁচট খেয়ে থমকে গেলাম আমি !

গড়িয়ে চললো রুক্ষ কঠিন পাথর।।

ভেবেছিল একটু ভালোবাসার উষ্ণ উত্তাপ সত্যিই কি আদর পাব কি?

"পাথরটি পথভ্রষ্ট" পাহাড়ি উপত্যকায় শেওলার খাঁজ পাথর ভাবল!!

 সবুজ শ্যামলিমায় রুক্ষ কঠিন বুকে চাপা বেদনা,,

 আবার শুরু হল গড়িয়ে চলা অনন্ত কাল ধরে।।

পাথরটি তার বুকে গহীন অন্তরালে একটি বেদনা দীর্ঘনিঃশ্বাস ,,

গড়িয়ে চলা এক ভালোবাসার শেওলা।।

সনৎ কুমার কুন্ডু

 

      ভালোবাসা দিবসের গল্প


                             -------সনৎ কুমার কুন্ডু



আজকের এই ভালোবাসা দিবসে

কী নিয়ে তোমার সাথে দেখা করব প্রেয়সি? ভাবতে ভাবতে ছোট্ট একটা গোলাপ কুঁড়ি

কাঁটা মাড়িয়ে  গাছ থেকে তুলে নিলাম

তোমার সামনে আসতে আসতে কুড়িটা

একটা পূর্ণাঙ্গ গোলাপে পরিণত হলো


চারিদিকে কি সুন্দর ঘ্রাণ বাতাসে বাতাসে ছড়াচ্ছিল.......

হৃদয়ের আবেগে কিছু সময় ধরে তাকে

ভালবাসা দিতেই সে আস্তে আস্তে

পড়ন্ত বেলার মত স্তিমিত হয়ে

বিবর্ণ রংয়ে  জীবন সন্ধিক্ষণে....

মুহূর্তে চোখ তুলে দেখি সূর্য অস্তাচলে

চিত্রশিল্পীর তুলিতে মাখানো রংয়ে 

আকাশটা যে রঙিন হয়ে যাবার দৃশ্য

অবলোকন করতে করতে দেখি

তুমি প্রেয়সী!

তোমার চিবুক স্পর্শ করে বললাম

''এতদিন পর তুমি''!!

আর এই ভালোবাসা দিবসে?


দিন গড়িয়ে রাতে

প্রস্ফুটিত গোলাপ আর পূর্ণিমা চাঁদ হয়ে

বিস্ময়ের বার্তা নিয়ে এসেছ তো??

রাম প্রসাদ কুন্ডু

 

             প্রেম 


                      ------রাম প্রসাদ কুন্ডু


তোমার দুচোখ, 

মুগ্ধ ভালোবাসার প্রতীক ছাড়া 

                           আর কিছুই নয় । 

আমাকে টুকরো টুকরো করে যদি 

ছড়িয়ে দাও এই পৃথিবীতে 

দেখবে প্রতিটি টুকরোতে 

তোমারি মুখ আঁকা ।

তুমি বনানীর চেয়েও সুন্দর 

তুমি প্রতিশ্রুতির চেয়েও

গভীর শব্দময়  নির্লিপ্ত

আকাঙ্খার মননে সুগভীর ।

স্বপ্নের ভিতর পাই 

তোমারি হাতের স্পর্শ

আমার ভিতর বাহিরের গানটাকে ,

আমি তাকিয়ে থাকি নিঃশব্দে           

                         আকাশের দিকে

আমার হৃদয় হারাতে চায় তোমারি

                         সত্ত্বায় ।।

হে বন্ধু মোর হে অন্তর তর 

এ জীবনে যা কিছু সুন্দর ।।

জগন্নাথ বনিক

 

     গর্বিত মোরা বাঙ্গালী 


                         ------জগন্নাথ বনিক 


আমি গর্বিত আমি বাঙ্গালী,

আমি বাংলা কে ভালোবাসি।

একুশে ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস,

পালন করে মোদের বিশ্ববাসী।।


ইতিহাস সাক্ষী বাঙ্গালী বিপ্লবীরা,

স্বাধীনতার জন্য লড়াই করেছেন বীরের মতো।

জীবন দিয়েছিলেন ক্ষুদিরাম, সূর্যসেন, বাঘাযতিন,

আর বিনয় বাদল দিনেশের মতো।।


বাংলার কবি রবীন্দ্রনাথ লিখেছেন গীতাঞ্জলি,।

নজরুল, সুকান্ত, জীবনান্দ, মাইকেল মধুসূদন, বিদ‍্যাসাগর,

আরও আছেন বাঙ্গালীদের অনেক গর্বের কবি।।


সুভাষ ছিল বাঙ্গালী বীর বিপ্লবী, 

স্বাধীনতা সংগ্রামী।

পরাধীনতার হাত থেকে স্বাধীনতা ফিরিয়ে আনতে,

গঠন করেছিল আজাদ হিন্দ্ সশস্র বাহিনী।।


সৌরভ ছিল বাংলার গর্ব খেলতেন ক্রিকেট খেলা।

ক্রিকেট দুনিয়া শাসন করেছে সৌরভ,

দেখেছে বিশ্ববাসী বাঙ্গালী ক্রিকেটারদের খেলা।।


গর্ব করি বাংলা কে নিয়ে মোদের জন্ম বাংলা মায়ের কোলে।

বাংলা ভাষা আজ চর্চা হচ্ছে দেশ, বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে,

শুধুমাত্র বাংলা ভাষা শিখবে বলে ।।

সুরমা আকতার

 

               বকুল মালা 


                                -------- সুরমা আকতার


তোমার আমার সেই প্রথম দেখা,

বকুল ফুলের মালায় ছিল তা লেখা।

বকুল ফুলের মালার প্রতি ফুলে,

গেঁথেছি ভালোবাসার বাসা।

সেই নিশ্চুপ ভাবনা,

হৃদয়ে শিহরণ জাগানো...

আজও সেই মালা পড়াবো ভেবে,

বসে আছি স্বপনের উদ‍্যানে।



সেই উদ‍্যানে গাঁথছি বকুল মালা,

ভালোবাসার সেই রঙিন ফুল,

কবে জাগবে তোমার হৃদয়ে?

আমার সেই ভালোবাসা...

নিশ্চুপ এখনো স্বপনের উদ‍্যানে।



আড়াল হয়ে দেখি তোমার পথ চলা,

সাক্ষাৎ এ ভুলে যাই যা ছিল বলার।

দেখলে আরও দেখতে ইচ্ছে করে তোমার বদন,

ভুলে যাই যে তুমি এসেছ কখন।

আজও বলতে পারিনি তোমায় ভালোবাসি,

স্বপনের উদ‍্যানে আজও বকুল মালা গাঁথি।

নাফিসা খান


        বারো হাত দাম্পত্য


                             ------নাফিসা খান


এক ভর্ত্তি কফির প্যাকেটে নিজেকে

খুঁজতে গিয়ে পেলাম অতসীর রেখে

যাওয়া ভাঙ্গা হাতল আর তেল

চিটচিটে কড়াই...

হঠাৎ,এক দমকা হাওয়ায় পথ ভুলে

হাজির তোমার ব্যালকনিতে ,

বালিকা বেলায় পাঠশালায় কুড়িয়ে

পেয়েছিলাম একটা দেশলাইয়ের বাক্স.....

সেখানে বোধ হয় রাখা ছিল অতসীর

সাদা থানটি,


লাগেজের ভার বইতে বইতে

বার্ধক্যে নেমে এল পার্শের ঝোলে...


আজও ,একলা ঘরে বারো হাত তাঁত।

অভিজিৎ দাস

 

   "ধর্মের নামে ভন্ডামি"

        

          -----অভিজিৎ দাস।


হে ঈশ্বর  আজিকে জাগো,

                      স্বার্থপর ধর্মান্ধদের মাঝে।

ধর্ম আজিকে পদলুন্ঠিত,

                   যোগনিদ্রা কি তোমার সাজে?


তুমি যাদের দিয়েছো প্রাণ,

                   শিখিয়েছো ধর্ম,দিয়েছো জ্ঞান।

তারাই করছে তোমারে অপমান,

              চূর্ণ করো তাদের স্বার্থ ও সম্মান।


যাদের তুমি বেসেছো ভালো,

                     দিয়েছো ব্রহ্ম জ্ঞান।

তারাই ক্ষুদ্র -খন্ড করেছে,

                    তোমার বেদ,বাইবেল ও কোরআন।


মন্দির,মসজিদ ও গির্জা নিয়ে,

                       আজ চলছে শুধু দ্বন্দ্ব।

ধর্মান্ধদের হানাহানি ও মারামারি,

                         বুঝি আর হবে নাকো বন্ধ!


আজ ধর্মের নামে ভন্ডামি করে,

                    যত স্বার্থান্বেষীর দল।

ধর্ম আজিকে পদলেহন করে,

                         বিজয়ী আজ  বাহুবল।


আজ যোগনিদ্রা ত‍্যাজ হে শঙ্কর,

                  বাজুক মহাপ্রলয়ের ডঙ্কা।

আজ ঘুচে যাক যত অপরাধ,

                          পাপী-তাপীদের যত শঙ্কা।