সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

রবিবার, ২১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

সুমনা ভট্টাচার্য্য

 

                      মানসিক স্বাস্থ্য


                                   ------সুমনা ভট্টাচার্য্য


       আমরা মানুষ, কখনো আমার স্বয়ং সম্পূর্ণ হতে পারি না। একটি গাড়ি যেমন চলতে গেলে পেট্রোলের প্রয়োজন হয়, মাঝে মধ্যে গাড়ির বিভিন্ন পার্স নষ্ট হয়ে যায়। তাকে মেরামত করতে হয়, তেমনি আমরাও। আমাদেরও চলতে গেলে শরীরের পার্স গুলো মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে যায়। তখনই আমরা ছোটে যাই ডাক্তারের কাছে। আমরা প্রত্যেকেই নিজেকে নিয়ে খুবই সচেতন।


        কিন্তু আমরা কখনো কখনো ভুলে যাই যে শারীরিক স্বাস্থ্যের সঙ্গে সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্য বলেও একটা ব্যাপার আছে। ভাবতে অবাক লাগে আজকের দিনে দাঁড়িয়েও মানুষ মানসিক স্বাস্থ্যটাকে একটু ভিন্ন চোখে দেখে। মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি মানে পাগলের লক্ষন। আমরা অনেকাংশেই বুঝে উঠতে পারিনা যে মানসিক ও শারীরিক স্বাস্থ্য একে ওপরের পরিপূরক। শারীরিক অসুস্থতা যেমন আমাদের মনকে প্রভাবিত করে, ঠিক তেমনি মানসিক বিষন্নতাও আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক। জীবনে চলার পথে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো নিজেকে খুশি রাখা, আমি খুশি থাকলেই তো আপনাকে খুশিটা উপহার দিতে পারবো। মনের দিক থেকে আনন্দে থাকতে পারলে, শারীরিক অসুস্থতা অনেকাংশে জব্দ করা যায়।


      আজকাল এই গ্লোবালাইজেশনের যুগে প্রায় প্রতিটি মানুষ কোনো না কোনো কারণে মানসিক যন্ত্রনায় ভোগছে, যে যন্ত্রনা তাকে আস্তে আস্তে ঠেলে দিচ্ছে মানসিক অসুস্থতার দিকে। মানসিক অসুস্থতা এমনই মারাত্বক, যা মানুষকে পুরোপুরি অন্ধকার একটা জগতে নিয়ে যায়। সবকিছুই মানুষটার কাছে ভিত্তিহীন মনে হয়। কিন্তু মানুষ একদিনে মানষিক রোগী বা অসুস্থতার চরম শিকরে গিয়ে পৌছায় না।  কখনো কখনো সে কাউকে তার মনের কথা বলতে পারে না। কারণ তাঁর চারপাশের পরিবেশটা এসব কথা শুনা বা বোঝার উপযুক্ত নয়। মানসিক অসুস্থতা দুধরনের হয়, কেউ বুঝতে পারে সে মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে আবার কেউ নিজের থেকে সেটা আন্দাজ করতে পারেনা। 


      আজকের দিনে দাঁড়িয়ে প্রতিটি পরিবারের সদস্যদের খেয়াল রাখা প্রয়োজন তাদের ছেলে মেয়েরা মনের দিক দিয়ে সুখী আছে কি না। বিশেষ করে মা, বাবাদের ঐ বিষয়ে সচেতন থাকাটা আবশ্যক। আমরা যখন‌ কখনো বুঝতে পারি যে আমরা মানসিক ভাবে অসুস্থ হয়ে যাচ্ছি, তখন আমাদের মনে আরেকটা ভয় কাজ করে ডাক্তার এর কাছে যাওয়াটা। মানসিক ডাক্তার এর কাছে যাচ্ছি আমি পাগল নাকি। তখন অনেক ক্ষেত্রে আমরা পরিবারের সাহায্য টুকুও পাইনা। এভাবেই কিছু কিছু ক্ষেত্রে তা মৃত্যু পর্যন্ত গড়িয়ে যায়। আজকালকার অনেকেই মানসিক স্বাস্থ্য নিয়ে সচেতন, কিন্তু তারা হলেন আমাদের সমাজের প্রথম সারির মানুষ। আমাদের মত সাধারণ জনগন এখন সেই বিষয়টি নিয়ে ওয়াকিবহাল নই, যতটা হওয়া প্রয়োজন। মানসিক স্বাস্থ্য আমাদের জীবনের চলার পথে খুবই গুরুত্বপূর্ণ অংশ। প্রত্যেক মা বাবা, স্কুলের শিক্ষক শিক্ষিকা, বন্ধু, কাছের মানুষ সবার উচিত খেয়াল রাখা, তাঁর সন্তান বা আশেপাশের কেউ মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে কি না। সুস্থতা নির্ভর করে শারীরিক ও মানসিক দুটোর উপর। সমাজটাকে সুন্দর করে তুলতে গেলে প্রতিটি মানুষের মানসিক আনন্দ, স্বাচ্ছন্দ্যের প্রয়োজন।‌ মন ছাড়া মানুষের অস্তিত্ব বিপন্ন, সেই মনটাকে ভালো রাখতে গেলে ‌মানসিক সুস্থতা জরুরী। তাই প্রত্যকের নিজের খুশি থাকার দিকে নজর দিতে হবে, মন খারাপ থাকলে  প্রিয়জনদের সাথে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা করা প্রয়োজন। নিজের মনের সৌন্দর্যতা বিলিয়ে দেই সবার মাঝে। পৃথিবীটা হয়ে উঠুক সুন্দর থেকে সুন্দরতম।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন