সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত

"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)

শনিবার, ২৩ জানুয়ারী, ২০২১

মলাট (দশম সংখ্যা)


 

সূচিপত্র (দশম সংখ্যা)


 

সম্পাদকীয়

                   " রত্ন প্রসবিনী ভারত মাতার কৃতি সন্তান 

                      তোমায় মোরা হৃদয়ে স্থাপিয়াছি।"

    হে মহামানবদ্বয়, নিবেদিলাম শতকোটি প্রণতি তোমাদের চরণে। জানুয়ারি মাস কি আমাদের কাছে শুধুমাত্র ইংরেজির বছরের প্রথম মাস ? না মোটেও না। এই মাসে জন্ম নিয়ে আমাদেরকে ধন্য করেছেন দুই মহামানব স্বামী বিবেকানন্দ এবং নেতাজী সুভাষচন্দ্র বসু। তবে এই ধন্য জীবন পূর্ণতা পাবে উনাদের প্রদর্শিত পথে জীবনকে অতিবাহিত করতে পারলে। তাছাড়া জানুয়ারি মাসেই পূর্ণ রাজ্যের মর্যাদা লাভ করেছিল ত্রিপুরা, মনিপুর এবং মেঘালয় নামক তিন বোন। 

     প্রিয় পাঠক,  সাফল্যের যাত্রাপথে আরেকধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা। আপনাদের সার্বিক সহযোগিতা এবং উষ্ণ অভ্যর্থনায় অভিভূত হয়ে অনেক আশা এবং স্বপ্ন জড়িত দশমতম সংখ্যা নিয়ে এবার হাজির হলাম। সৃষ্টি বিলাসী মনের সুস্থতার দায়বদ্ধতা নিয়ে এবারের সংখ্যায় লেখনী ধরেছেন ত্রিপুরার কবি-লেখকদের সাথে দুই বাংলার কবি-লেখকরা। এক অসাধারণ প্রচ্ছদ এঁকে সংখ্যাটিকে অতুলনীয় করে তুলেছে আমার অত্যন্ত আদরের এবং প্রিয় ছাত্রী জয়া নাথ। সৃষ্টি বিলাসীদের সুস্থ মসির ঝংকারে পবিত্র হয়ে উঠুক এই ভবসমুদ্র, ভেঙে যাক কুসংস্কারের অভিশপ্ত শেকল। মহামানবদের আশীর্বাদ বর্ষিত হোক সকলের জীবনে। সার্থক হয়ে উঠুক মানব জীবন। আবার দেখা হবে, কথা হবে আগামী সংখ্যায়। সকলে ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন এই কামনা।


ধন্যবাদ, শুভেচ্ছা ও শ্রদ্ধা সহ-----

রাজেশ ভট্টাচার্য্য

সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন


অমল কুমার মাজি



      অমানুষের কড়চা


                     ------অমল কুমার মাজি     


মানুষ -রূপী জন্তু কিছু

বেলাজ-নাচে আজ মাতাল!

জহ্লাদেরই হল্লা কাঁপায়

স্বর্গ-মর্ত্য আর পাতাল!!

হঠাৎ কারা ডিগবাজি খায়

খবর শুনি মাঝরাতে!

দিন-দুপুরে ছুটছে গুলি

লাগছে সে কার পাঁজরাতে!!

লুটের টাকায় বানিয়ে প্রাসাদ 

অশিক্ষিত শীর্ষে আজ!

আমজনতা পায়না দিশা

কপাল-জোড়া লক্ষ ভাঁজ!!



অমল কুমার মাজি

বর্ধমান, পশ্চিমবঙ্গ

কবিতা সরকার



         আমার দেশ

                     

                         -----কবিতা সরকার


নিবিড় ঘন কুঞ্জ ছায়ায়

আমার দেশে বংশী বাজায়, 

আমার দেশ পুণ্যভূমে

স্মৃতির সাথে কোরান মেলে।


আমার দেশে সূর্য ওঠে

হরি- হজরত - যীশুর নামে, 

আমার দেশে সন্ধ্যা নামে 

মেলাদ আর সংকীর্তনণে। 


হঠাৎ যদি বঙ্গবিভাগ 

আসে কভু তাদের মাঝে, 

ধর্ম ভুলে ঐক্যতানে 

বাজবে তারা একই সুরে।


আবার যদি আঘাত হানে 

ব্রিটিশ সম দমকা ঝড়, 

শপথ আজও টের পাবে সে 

ভারত মোদের মায়ের ঘর।

কিশোর কুমার ভট্টাচার্য



               স্মৃতি 


                       ------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য


বৃদ্ধ দাদূ মেঘ পানে তাকিয়ে 

বসে আছেন হয়ে আনমনা, 

হয়তো মনে মনে গুনছেন 

হাতে আছে আর দিন ক' খানা!

আকাশের বুকে ভেসে আসা মেঘরাশি 

বাতাসের জোরে দূরে যায় সরে,

জীবন- আকাশের দিনগুলো

যাচ্ছে দূরে

মহাকালের নিয়মের সুরে। 

আকাশপটের মেঘরাশি কত ছবিআঁকে,

কতো স্মৃতি হারিয়ে গেছে 

জীবনের বাঁকে।

জীবন একটা হলেও 

স্মৃতি আসে ভেসে অহরহ, 

অতীতকে ভর করে চলছি

তাই- তো নিত্য- নতুন  দেখছি প্রত্যহ।


কিশোর কুমার ভট্টাচার্য 

ধর্মনগর, উত্তর ত্রিপুরা 

দিনাংকঃ-০৮-৩-২০১২, শুক্রবার।

হেমন্ত দেবনাথ



     নেতাজীর প্রতি


                       ------হেমন্ত দেবনাথ


স্বাধীনতার স্বাদের আশায় --

দেশের প্রতি

ভালোবাসায়।

নেতাজী আনলেন

স্বাধীনতার 'জয়গান' -- 

চালিত করে বিপ্লব আর

সংগ্রাম।

তোমার প্রকাশ ঘটেছিল

কুহেলিকা করি উদ্ঘাটন

আজিকে প্রণমি তোমায়

দেশপ্রেমের গানে।

চির-অম্লান থাকবে তুমি

দেশবাসীর মনের টানে।

রাজেশ ভট্টাচার্য্য


 

        প্রিয় বাক্য


                     -----রাজেশ ভট্টাচার্য্য


প্রতীক্ষার অবসানে,

সুসংবদ্ধ ভাবে সাজানো

তোমার মুখে উচ্চারিত

ইংরেজি আটটি বর্ণ,

প্লাবিত করে দিল 

আমার এই মরুর বুকে।


তোমার সৃষ্ট শব্দগুলোকে

আমি এখনো খুঁজি চারিদিকে।

শীতের তীব্রতা একদিন যাবে কমে।

কুয়াশার অস্পষ্ট প্রতিচ্ছবি হবে স্পষ্ট।

তোমার সৃষ্ট শব্দগুলো নিংড়ে

ছড়িয়ে দেবো পৃথিবীর বুকে।

মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য


            বিবেকের নাথ


                        -------মিঠু মল্লিক বৈদ‍্য


তুমি কালের গৌরব,চিন্ময় জগদীশ্বর।

মুখে তোমার অগ্নিবানী,

চোখে দীপ্তি অংশুমালীর,

হাতে জীবনবোধের শঙ্খ,হে মহামানব

তুমি বিশ্বজননীর বরপুত্র।


তরুণ রক্তে জ্বালিয়েছিলে স্ফুলিঙ্গ

দৃঢ়আবেগে কান্ডারী সেজে।

দাবানলের মতো ছুটে গেছিলে পাশ্চ‍াত‍্যে,

সদাশয়তা আর নির্ভীক চেতনায়

সুপ্ত বিবেকে করছিলে প্রেম জাগরণ।


গড়তে নবযৌবন বাজিয়েছিলে রণডঙ্কা

সিংহনাদে শুনিয়েছিলে মানবতার বানী।

চন্ডাল,মূর্খ,দরিদ্র সকলেরে বুকে তুলেছিলে টানি-

হিংসার বিনাশে প্রেমখঞ্জর হাতে।

তরুণ,আগামীর ধরোহর শিখিয়েছিলে সমাজেরে।


হে শঙ্কাহরক,নীরবে হরেছ শঙ্কা,

কল্মষ পৃথিবীর সকল অনাচারের শির

করেছিলে কর্তন,বোধিসত্ত্বের কেতন উড়িয়ে।

হে তরুণ বৈরাগী, দীপ্ত কন্ঠে গেয়েছিলে

জীবপ্রেমের অমিয় বানী।


জাতিভেদের কলুষতা মুছিয়ে

সামগান গেয়েছিলে শৈশবেই।

ওগো জ্ঞানী,তোমারি লাগি শিকাগোর মাটিতে

ভারতজননী হেসেছিলেন জয়ের হাসি,

পরের জন‍্য বেঁচে থাকা,শিখিয়েছে তোমারি জীবনী।


ওগো সন্ন‍্যাসী!তুমি বীর,অনাথের শ্বর।

আর্তের আর্তনাদ,জাগাতো মনোবেদনা

তোমার পতিত পাবন হৃদে।

অক্ষয়,অমর তুমি, বিনাশিবে তোমায় আছে কার সাধ‍্যি?

নগরে -প্রান্তরে,বিশ্ব-চরাচরে বাজে তোমারই বীণ

বিবেকের নাথ বিশ্বজয়ী বিবেকানন্দ তুমি।

সুমনা ভট্টাচার্য্য



                                যোগ্যতার ইঁদুর দৌড়


                                           ------সুমনা ভট্টাচার্য্য


যোগ্যতার মাপকাঠি কি আমি আজও‌ বুঝে উঠতে পারলাম না। যোগ্য, অযোগ্যের পরিসীমায় সত্যি আজ আমি ক্লান্ত। এই মায়াময়ী পৃথিবীর যোগ্য সন্তানের প্রতিযোগিতায়  আমরা নিত্যদিনের প্রতিযোগী। অন্যের কাছে নিজের যোগ্যতার সিলমোহর পেতে গিয়েই কেটে যায় বেলা।  অন্তরাত্মাকে প্রশ্ন করতে ভুলে যাই আমি আমার কাছে কতটা যোগ্য। আমি কি আমাকে নিয়ে খুশি, আমার অন্তর আত্মা কি আমাকে নিয়ে তৃপ্ত অনুভব করে? না সেও কি আজ ক্লান্ত এই প্রতিযোগিতায় প্রথম হতে গিয়ে। আমাদের জীবন অতিবাহিত হয়ে যায়, তবুও হয়তো নিজেকে নিয়ে ভাবার সময় করে উঠতে পারিনা আমরা। এই বিশ্বায়নের যুগে আমরা হয়ে উঠেছি যান্ত্রিক। যান্ত্রিকতার  মধ্যেও নিজেকে নিয়ে একটু হলেও ভাবা দরকার, নিজেকে সময় দেওয়া প্রয়োজন। আমি যদি আমাকে নিজের জন্য যোগ্য করে তুলি, তাহলে হয়তো যোগ্যতার মাপকাঠিকে কিছুটা হলেও ছুঁয়া যাবে। নয়তো অন্যের কাছে নিজেকে প্রমান করতে করতে শেষ ঘন্টা বেজে যাবে, তবুও লড়াই শেষ হবে না। সত্যি দুনিয়াটা বড়ই আজব গোলকধাঁধায় ভরা। তাই যোগ্য, অযোগ্যের প্রতিযোগিতায় নাম না লিখিয়ে নিজেকে গড়ে তুলি এই পৃথিবী মায়ের সুসন্তান রূপে। অন্যের অযোগ্যতা প্রমান করার পেছনে না ছুটে, একে ওপরের পাশে দাঁড়াই। একে অন্যের সুখ দুঃখের সাথী হয়ে উঠি। এই পৃথিবী মায়ের যোগ্য সন্তান হই।



সুমনা ভট্টাচার্য্য

ধর্মনগর, উত্তর ত্রিপুরা

মনচলি চক্রবর্তী



        প্রকৃতির ছায়া

                        ------মনচলি চক্রবর্তী

প্রকৃতি যে বড়ই উদার
দেয় সবটুকু তার উজাড় করিয়া
হে মানব তুমি পারিবে কি
উজার করিতে তোমার
মমতা উদারতা করুনা
তুমি দাও একমুঠো দান
দীন দরিদ্র জনে
আসিবে ফিরিয়া তাহা সহস্র গুনে
তুমি যত উজাড় করিবে
তোমার করুণা
তত পূর্ন হইবে তোমার শূন্য ঘড়া
প্রকৃতির যে বড়ই দয়া
হে মানব, তুমি কি পারিবে না
হইতে সেই প্রকৃতির ছায়া? 




মনচলি চক্রবর্তী
আগরতলা, পশ্চিম ত্রিপুরা

রাজীব পাল



  হ্যাপি নিউ ইয়ার ২০২১


                     ----রাজীব পাল


এসো হে সুদূরের রবি 

জেগে উঠো নিজ মহিমায় 

বিষ খেয়ে আছি পরে 

জাগো হে তরঙ্গিয়া 

আমি পড়েছি মিছে মূর্ছায়। 

নীলাভ অঙ্গ মোর 

দহনিয়া অগ্নি'র জ্বালায় 

ঝিনুকের বিষ কামড়ে 

হাতের মুক্ত ছুটে যায়। 

এসো হে রঙিন আলো

পরশ লাগাও এ বেদনায় 

পুরাণের মুক্ত মালা আজ 

আমি পড়াবো নতুনের গলায়।



রাজীব পাল

সাব্রুম, দক্ষিণ ত্রিপুরা

কাজি নিনারা বেগম



                মানব জীবাষ্ম


                                 ----কাজি নিনারা বেগম



মুখচ্ছবি সভ্যতার আবহমান এর স্বপ্নে পরের কথা,

জলে-স্থলে মানবতার ব্যক্তিগত অনুভূতি শেওলার খুঁজে জীবন নৌকা!


কে যেন কারও প্রতীক্ষায় অস্থির মানবজীবন,

প্রতীক্ষারত অবস্থায় মুমূর্ষু অর্ধমৃত যন্ত্রচালিত পিয়ানো! 

সাদা শরীর সরলতার মধ্য ঢাকা মানবজীবন।


ঈশ্বর যেন চাঁদ ও সূর্যের পানেই জেগে আছে;

নয়ন পানে এই মহাবিশ্বের জেগে থাকা একটি নয়ন!


সরলতার  মুখে ঢাকা বীভৎস ইঙ্গিত,

জীবনের অলিতে গলিতে বিষাক্ত চিহ্নিতকরণ।


এত সময়হীন ভাবে উঁকি মারছে জীবন 

এই তুচ্ছ মৃত্যুর স্রোত জীবনকে গিভ অ্যান্ড টেক পলিসিতে

এটাকি কামের পিপাশা ,না কম্প্রোমাইজ ?

আলু মাখা তুলি দিয়ে খুঁজেছে মানবতার জীবন্ত জীবাশ্ম ।

সনৎ কুমার কুন্ডু


      সন্ধি বিচ্ছেদ


              ------সনৎ কুমার কুন্ডু 



দীর্ঘদিন নির্জনতায় থেকে 

সুন্দর এক পৃথিবীর মুখ খুঁজে পেলাম

কাছে যেতেই পাথর হয়ে গেলাম

তরল হয়ে গড়়িয়ে যাবার সামর্থ টুকু হারালাম

বায়বীয় হবার মন করতেই সরে দাঁড়ালো, 


ডানা মেলে উড়বার সুযোগ ছিল

নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করলাম যদিও 

মন থেকে হৃদয়ের আগুন সরে গেল

মনে হল অপরূপ এক পৃথিবীর 

নিঝুম জমকালো গুহায় বিচরণ করছি। 




সনৎ কুমার কুন্ডু 

খুলনা, বাংলাদেশ

রাম প্রসাদ কুন্ডু



  কোভিড বিষে একুশ


                    ------রাম প্রসাদ কুন্ডু


বিশে বিষ ছুঁয়ে দিলো

কোভিড ১৯ ছড়িয়ে গেলো

একুশেও বিষ যাবে কি না

বিশ্ববাসী আজ এলোমেলো। 


দেখেছেন কি ভেবে একবারও

কোভিড বিষ যাবে কবে 

আত্নীয় স্বজন টাকা পয়সা কিছু নয় 

ভাবুন তো, মরলে কে দেখতে যাবে? 


মানবজাতি আজ যন্ত্রমানব 

ছুটছে তারা অর্থ আর সম্মানে

মরলে যাবেন আপনি একা

কবর কিংবা শ্মশানে। 


কথায় কথায় যারা গা'য়ে তুলতো হাত

তারাও আজ বড্ড অসহায়

আসুন ক্ষমা চেয়ে প্রার্থনা করি 

ভবিষ্যত পৃথিবী যেন বেঁচে যায়।





রাম প্রসাদ কুন্ডু

খুলনা, বাংলাদেশ

গোপাল দে



            চেনা ছন্দে


                           -------গোপাল দে


সেদিন মধ্যরাত্রিতে ও নির্ঘুম ছিল

চোখের দুটি পাতা।

স্বপ্নবিভোর দুই চোখে ক্রমশ

দুঃস্বপ্নরা বাঁধছিল হতাশার ডানা। 

মধ্যরাত্রির নিস্তব্ধতায় শিয়রে এসে দাঁড়িয়েছিল তীব্র আকাঙ্ক্ষা।

কুয়াশার চাদর ভেদ করে 

অন্ধকারের বীভৎসতার মাঝে

রঙিন আলো নিয়ে হঠাৎ তোমার উপস্থিতি। 

মনোবীণার তারে হঠাৎ ঝংকৃত হলো 

লক্ষ-কোটি সুরের তান। 

বিরহের তানপুরাটা শক্তি হারালো

আর বেজে উঠল সুরেলা এক বাঁশি। 

যে সুরে খুঁজে পেলাম আমার সব চাওয়া, আবদার আর তৃপ্তির স্বাদ।

চেনা ছন্দে আবার গতিময় হলো

ছোট্ট একটি জীবন।

প্রিয়াঙ্কা নন্দী



             পরশ


                      ------প্রিয়াঙ্কা নন্দী 


স্বপ্ন আমার জোনাকি 

               দীপ্ত প্রাণের মনিকা ,

স্তব্দ আঁধার নিশীথে 

              উড়িছে আলোর কণিকা ।

আমার লিখন ফুটে পথ ভিড়ে ,

               ক্ষণিক কালের ফুলে ।

চলিতে চলিতে দেখে যারা তারে ,

                চলিতে চলিতে ভুলে ।

প্রজাপতি সেতো পরশ না গনে ,

                 নিমেষ করিয়া বাঁচে ।

সময় তাহার যথেষ্ট তাই আছে ।

বর্ণা দাস



           নামহীন কাব্য 


                          ------বর্ণা দাস


শীতের বিকেল ডাক দিয়েছে  ,

উড়তে চাওয়ার এক ইচ্ছেঘুড়ি ।

দাগ কেটে চৌকাঠ পেড়লেই  ,

উঠবে ভেসে অচিনপুরের স্বপ্নতরী ।


সাদা-কালো আবছা ছাই জমেছে ,

নীলচে রঙের আকাশটায়  ।

দুপুরের সোনালী রঙ মুরছে গেছে ,

একমুঠো রোদের অপেক্ষায়  ।


মনের ঘরে এক বিরাট অসুখ  ,

তাও ইচ্ছে কুঁড়োয় নতুন বাহানা ।

কাঠগোলাপের গায়ে লেখা গল্প-চিঠি  ,

হারিয়ে ফেলা নামহীন ঠিকানা ।


রোজ জমানো স্পর্শকাতর অনুভূতিদের  ,

আমি কবর দেই নিজের হাতে  ।

নিয়ম ভেঙে আসতে চাওয়ার ইচ্ছেটা ,

আটকে পড়ে এক মস্ত বাধার দেওয়ালেতে ।

 

জল্পনাদের আস্কারাতেই কল্পনাতে 

জুড়তে থাকি একের পর এক শব্দ ।

যা ভাষায় প্রকাশ হয়নি কখনো  ,

একান্ত গোপনে তা লিখে রাখা এক নামহীন কাব্য ।



বর্ণা দাস

ধর্মনগর, উত্তর ত্রিপুরা।

এলিনা সাহা


 

             আমার শেষ যাত্রা 


                                   ------এলিনা  সাহা 


জীবনের শেষ যাত্রা টা কেমন হয়  মা ? 

বেদনা দায়ক 

অশ্রু ঝরা বুক আচ্ছন্ন আর মুখে শব্দের আকারে দুঃখ প্রকাশ ৷



জীবনের শেষ যাত্রা টা কেমন হয় ? 

সাদা এক থান কাপড় মোড়া , তুলসী চন্দন আর রজনীর মালায় শেষ যাত্রা শুরু ৷ 


শেষ যাত্রা র পথে নামতে হবে  নিশ্চিত ৷

তবু কেনও পেছন থেকে ডাকা হয় বাবা একটি বার দাঁড়া ৷ 

সব  মায়ার  বন্দন ত্যাগ দিয়ে নেমেছি শেষ যাত্রায় ,



অন্য এক দেশের খুঁজে ৷ 

শেষ যাত্রা টা কেমন হয় মা ? 

বছরের পর বছর বাড়িতে পা না রাখা মানুষ একটি বার মরা মুখ খানা দেখতে আসে ৷ 



কী সে যাত্রা নেই কোনও আনন্দ উল্লাস , শুধু অশ্রুজল আর অশ্রুজল ৷ 

কিন্তু আমি যে নতুন দেশে যাচ্ছি মা আনন্দে বিদায় দাও না ৷ 



অশ্রু ঝরিয়ে কী লাভ বল মা ,  মন কে বুঝিয়ে নাও মা ৷ 

কেউ একদিন আগে কেউ একদিন পরে ,

 শেষ যাত্রা তো একদিন পাড়ি দিতেই হবে  মা ৷

তপা মজুমদার

        

                 স্বপ্ন


                          -----তপা মজুমদার


আমরা  নবীন আমরা নুতন

আমরাই গড়বো সুপ্রভাত।

দেশের কার্যে দশের কাজে

আমরাই হবো ধারাপাত।

বিপদে আপদে লড়বো সবাই

লড়বো হয়ে ঐক্যবদ্ধ।

দেশের স্বার্থে  আগামী প্রজন্মে

শিক্ষাই হবে মূলমন্ত্র। 

সুশিক্ষিত মোদের সন্তান আজ

উদর পুরাচ্ছে অন্য কারও।

আমার দেশ দিশেহারা আজ--

নাম কামাচ্ছে বিদেশ আজও। 

দেশের জ্ঞানী, গুণী -মহৎদের

দেশেই রাখার স্বপ্ন আজ।

দেশের কাজে রক্ত দেবো

পণ করেছি  তরুণ  আজ।

গড়বো সমাজ গড়বো নবাব

হরঘর হবে মৈত্রি স্বভাব।

জাগ্রত বিশ্ব হোক জাগ্রত আরও 

এই আমাদের নৈতিক ভাব।