সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
মঙ্গলবার, ২৩ মার্চ, ২০২১
সম্পাদকীয়
একটি নয়, দুটি বছর ধরে প্রতীক্ষায় আছি। স্বপ্ন দিয়ে বানিয়েছি এক অপরূপ রংমহল। গেছে বছর তুমি এসেছিলে, তাতে তোমার কোনো দোষ নেই। তোমার আগমনে ফুটেছিল কত রাঙা পলাশ-কৃষ্ণচূড়া, ছিল আগুন ভরা কত শিমুলের মেলা। সবই ছিল। কিন্তু রাঙানো হলো না প্রিয়জনদের। কেউ রাঙিয়ে দিল না আমাকেও। এমনি করেই অতৃপ্ত অভিলাষ রেখে তোমাকে বিদায় জানিয়ে ছিলাম আগামীর আশা নিয়ে। এবারও তোমার আগমনে প্রকৃতি রানী সেজেছে অপরূপ সাজে। গাছে গাছে কত রাঙা শিমুল, কত পলাশ, চারিদিক মুখরিত কোকিলের কুহু কুহু গানে। কৃষ্ণচূড়া যেন অঞ্জলি দিতে প্রস্তুত। ঋতুরাজ বসন্ত যেন প্রকৃতির মুখ দিয়েই জানান দিচ্ছে তার আগমন বার্তা। আকাশে বাতাসে ধ্বনিত হচ্ছে কবিগুরুর সুরে---"ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল লাগলো যে দোল"। বসন্তের আগমনে প্রকৃতির সাথে তাল মিলিয়ে শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের মনও হয়ে উঠে রঙিন। মনে দোল খায় এক সুন্দর অনুভূতি। স্বপ্নের এই রংমহলে এবছর তৃপ্ত হব প্রিয়জনদের রঙিন ভালোবাসায়।
প্রিয় পাঠক, আপনাদের ভালোবাসা এবং প্রেরণাকে সাথী করে সাফল্যের যাত্রাপথে আমরা আরো এক ধাপ এগিয়ে গেলাম। এবারে প্রকাশিত হলো "সাহিত্য নয়ন"-এর "বসন্ত উৎসব" নামক দ্বাদশতম সংখ্যা। সম্মানিত কবিদের লেখনীতে যেন লেগেছে বসন্তের ছোঁয়া। স্বকীয়তা, মাধুর্য, গভীরতা সবকিছু মিলিয়ে নয়নের পাতাকে কবি-লেখনী দিয়ে সাজিয়েছেন অপরূপ সাজে। চলুন আমরা সবাই মিলে উনাদের সাজানো পাতা থেকে রস আস্বাদন করি। আপনাদের সার্বিক মতামতের অপেক্ষায় রইলাম। আবারো দেখা হবে আগামী বাংলা নববর্ষের কোনো একদিনে।
ধন্যবাদ ও শ্রদ্ধাসহ---
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
বসন্ত
------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
বসন্তের প্রথম আলো
দেখেছিলেম নব কিশলয়ে,
মাঘের শেষে মুষলধারা
গ্রাম্যগৃহিনীর উলুধ্বনি
বরণ করে নিল বসন্তের প্রথম প্রভাতের অরুণোদয়।
বসন্ত এলো ধরার বুকে
অঙ্কুরের বার্তা নিয়ে।
বসন্ত আনে মানব মনে
নব নব সৃষ্টির চেতনা।
রুটির তাগিদ, রুজির তাগিদ
তা তো থাকবেই!
তা বলেতো কুহুতান
বন্ধ হবেনা।
বিহঙ্গ - বিহঙ্গীর প্রেম সুধা
দেখে মনে মনে হাসে বসুধা।
গাজনের দল কখন আসবে উঠানে -- বৃদ্ধ কর্তা বাবুর এ প্রশ্নে ভারি বিরক্ত
মুঠোফোনে স্থির চক্ষু
ভবিষ্যৎ প্রজন্ম।
কী হবে গাজনের নাচনে
এসব কিছুই তো আছে ইউটিউব আর ফেসবুকে।
বৃদ্ধ ফেলেন দীর্ঘ শ্বাস
হায়রে বসন্ত!
তোকে নিয়ে কতই না ছিলো আনন্দ
দোলের রং ও আজ অপছন্দের তালিকায়
হায়! হায়!
তবু ---বসন্ত!
তুই আসিস বারংবার ,
তুই বিনা নব নব সৃষ্টি
স্থবির -- আঁধার।
রচনাকাল :-২৭ শে ফাল্গুন ১৪২৭ বাংলা,শুক্রবার।
হেমন্ত দেবনাথ
বসন্ত
-----হেমন্ত দেবনাথ
বসন্ত মানে অনিন্দ্যসুন্দর যৌবন--
বসন্ত মানে কৃষ্ণচূড়ার আগুন।
বসন্ত মানে রূপ-রস-গন্ধ পরশে
অপূর্ব মোহনীয় আবেশ।
বসন্ত মানে দিগন্ত বিস্তৃত প্রান্তরপূর্ণ--
বিকশিত কুসুম-সুবাস,
বসন্ত মানে প্রকৃতির ঘুমভাঙা চোখে
নবকিশলয়ের ঘনশ্যাম রূপের অঞ্জন।
বসন্ত মানে সুমিষ্ট কোকিলের কুহুতান--।
বসন্ত মানে দক্ষিণের সমীরণ।
বসন্ত মানে দেহে-প্রাণ অভূতপূর্ব শিহরণ।
রঙের নেশা প্রগল্ভতায় মত্ত মাতাল বসন্ত।
ফাগুনের পরশে বসন্ত হয় জীবন্ত।
বসন্ত মানে একগুচ্ছ লাল শিমুল আর পলাশ।
বসন্ত করে না কাউকে নিরাশ।
বসন্ত জ্বালিয়ে দেয় দেশপ্রেমের শুচিশুভ্র অগ্নিশিখা।
হিংসায় মত্ত পৃথ্বীর বুকে বসন্তে অভিষিক্ত হয়
অনির্বাণ শিখা।
বসন্ত মানে উদার নীল আকাশের স্বচ্ছতা---
বসন্ত মানে সম্প্রীতি আর ঐদার্যৈর বারতা।
বসন্তের ফাগুনের রঙ দূর করে তমিস্রা,
বসন্ত মানে জ্যোতির্ময় ধ্রুবতারা।
রচনাকাল:- ০১/০৩/২০২১ ইং
অমল কুমার মাজি
মাতাল চাঁদের আলো
------অমল কুমার মাজি
কে জানে কার খেয়ালখুশির উন্মাদনা
কবিকে আজ সারাটা রাত জাগিয়ে রাখে
গোপন ঘরে লুকিয়ে থাকা কোন বাসনা
কবির সাথে কাঙাল-চোখে তাকিয়ে থাকে।।
কেউ জানো কি ঘরছাড়া কোন বাউল কেন
আজকে হঠাৎ একতারাটার তার ছিঁড়েছে
তাকিয়ে দেখো বসন্ত-রাত আজকে যেন
মাতাল-চাঁদের আলোতে কার ঘুম কেড়েছে !!
কোন কবিতা কেমন ক'রে কাঁদায় কাকে
কোন রাগিনীর বিবাদি স্বর আজকে রাতে
কেমন ক'রে হারালো কে পথের বাঁকে
আর তো এসব জানার সময় নেই গো হাতে।।
প্রশ্নরা আজ বুকের মাঝেই উঠুক ঘেমে
এসব কথার জবাব তুমি নাই যদি পাও
দুঃখ কিসের হঠাৎ আঁধার আসলে নেমে
আপন ভুলে বিশ্ব পানে এবার তাকাও!!
কবিতা সরকার
বিজয়ী বসন্ত
------কবিতা সরকার
দীর্ঘ সময় পরে আসিয়াছে বসন্তরাজী
আপনার ঘরে,
দক্ষিণা পবন বহে রাজটীকা
উত্তরে তাই পড়েছে যবনিকা।
ক্ষণে ক্ষণে বায়ু উঠছে গেয়ে
নতুনের সুরে বৈশাখী রাগে,
শীত তাই নিয়েছে বিদায়
ভারাক্রান্ত হৃদয়ে।
পাতা ঝড়ার শেষে উদাসী কাননে
মঞ্জুরী উঠেছে ভরে নব কিশলয়ে,
প্রত্যুষে রবির কিরনে
কোকিলাও নিয়েছে শকল কাকলি সভাতে।
প্রতিক্ষা শেষে ঋতু অবসানে
বসন্ত..............
করিছে বিজয় ঘোষণা
তার অব্যক্ত ভাষণে।
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
অপেক্ষা
----- রাজেশ ভট্টাচার্য্য
কেমন আছো ?
মনে পড়ে আমার কথা ?
মনে পড়ে সেই রঙিন দিনগুলোকে ?
কতো বসন্ত কাটিয়েছি দুজনে।
চার-চোখ ভরে দেখেছি কত স্বপ্ন।
আজ সবই পড়ে আছে,
যত্ন নির্মিত স্মৃতির পাতায়।
মনে পড়ে বৃষ্টি ভেজা দিনগুলোর কথা ?
হঠাৎ মনে পড়ে গেলো
সেই বসন্তের কথা।
হলুদ শাড়ী পড়া তোমার দেবী রূপকে
আমি রাঙিয়ে দিয়েছিলাম।
তোমার শুভ্র ললাটের স্পর্শ
আজও অনুভব করতে পারি।
আজ সবই ঢেকে আছে
অভিশপ্ত কুয়াশার চাদরের তলায়।
আমি একা বসে আছি,
আগামী বসন্তে তোমার
ফিরে আসার অপেক্ষায়।
মিঠু মল্লিক বৈদ্য
বারণ
------মিঠু মল্লিক বৈদ্য
তুমি সৃষ্টি,প্রণয়ী,প্রলয়ংকরী
প্রকৃতি,শত রূপে মনমোহিনী।
সৃজনের ধারয়িতা,ধ্বংসের রুদ্রানী
তোমার গর্ভে জন্ম পুরুষ জাতি।
স্রষ্টার যাকিছু অর্ধে সমঅধিকার,
তবুও মুখবুঝে সও শত অনাচার।
পুরুষের অনুপ্রেরণা নারী,যোগায় শক্তি
অথচ মুখলুকিয়ে কাঁদে নারীই।
যুগে যুগে অতীত সাক্ষী,
সীতা,অহল্যা,মন্দোদরী,দ্রোপদী
সমাজ তোমাদেরই বানিয়েছিল দোষী
আজও একই পথের পথিক তুমি।
একবিংশ শতকের মুক্ত গগনে
দগ্ধিত নারীর কালো ধোঁয়া ভাসে
ভুবন কাঁপে সম্ভ্রম হীনতার আর্তনাদে
লাঞ্চনা বঞ্চনা অবিরত চলে।
দিনের নির্জনতায়,রাতের আঁধারে
একলা চলা আজও বারণ আছে।
অথচ জলে,স্থলে অন্তরীক্ষে
তোমার প্রদীপ্ততায় আলো জ্বলে।
সময়ের দাবীতে অধিকার আদায়ে
অবক্ষিত সমাজে মানবতা রক্ষিতে
হে নারী,উঠ তুমি জেগে
পুরুষ -নারীতে সমতা;জানাও সমাজেরে।
মনচলি চক্রবর্তী
বসন্ত এসেছে
-----মনচলি চক্রবর্তী
বসন্ত এসেছে, ফাগুন এসেছে
ঋতুরাজ বসন্ত হেসেছে
দখিনা পাগল হাওয়া
পলাশের সুগন্ধে মেতেছে
ঝড়া পাতার গাছের ডালিতে এসেছে
নতুন কুঁড়ি
আমের মুকুলেরা বসন্তে
দেয় উঁকি
কৃষ্ণচূড়ার লাল রঙখানি
অন্তরে দেয় আনন্দের হাতছানি।
কত সুন্দর ফুল ফুটেছে বনে বনে
শিমূল পলাশের ডালে
কোকিলরা ডাকে মধুর সুরে।
বসন্তের গোধূলিতে
চোখে চোখ রেখে হাতে হাত রেখে
কত হৃদয়ের দেওয়া নেওয়া চলে।
প্রকৃতিতে বসন্তের আবির্ভাব সবার
জীবনে হৃদয়ে
নতুন প্রেমের বার্তা নিয়ে আসে
ফাগুনে মনে প্রেমের আগুন লাগে
অন্তরে স্বপন দোলে ছন্দে তালে
বসন্তের দোল উৎসবে মেতে
অন্তরে লাগে ভালবাসার পরশ
জাগে শিহরণ বুকেতে।
বর্ণা দাস
আর কত ???
-----বর্ণা দাস
যে শহরে রোজ ঝড়ে যায় ,
হাজার হাজার কলি ,
বাতাসে প্রবল দুর্গন্ধ ,
সে শহরে বসন্ত নাই বা এল।
যে শহরে নেই কোনো স্বাধীনতা ,
ফুল ফোঁটা বারণ ,
সে শহর আমার বেরঙিন থাক ।
সে শহর আমার বড়োই কঠিন
পাষাণ হৃদয় , ছিনিয়ে নেয় ফুলের কুঁড়ি আভরণ ;
নেই কোনো বিচার শাসন বারণ।
আলোয় মোড়া রঙিন শহর ,
লাসেদের ছাই উড়ে রোজ ,
চাই সে শহরে ভেঙে পড়ুক আকাশ ,
নামুক খুব জোর বৃষ্টি ,
ভেসে যাক সৃষ্টি ।
ভেসে যাক রাজার দেশ ,
ধুয়ে যাক সব ম্লান ,
মুছে যাক ফুলেদের ক্ষতচিহ্ন রেশ।
চাই সে শহরে আবার হোক নতুনের শুরু ,
ফুলে ফুলে হোক রঙিন ,
আমি কত দেখেছি মরা ডালে পাতাদের ঝড়ে পড়া দিন।
চোখে দুর্বিষহ যন্ত্রণা আছে জমে,
আর কত! আর কত সইবো?
এবার বদলাতে হবে দিন ।
কাজী নিনারা বেগম
আর্শি
------ কাজী নিনারা বেগম
কে আমি?
আমি তো আমি নই!
দীর্ঘ চল্লিশ টি বসন্ত ধরে দেখছি।
ললাটের উপর পরিপক্ক চুলগুলো ....
আজ যেন যুবতী হয়ে যাওয়ার অভিনয় করে।
আরশি হয়তো আমাকে দেখলে লজ্জিত বোধ করে!
তখন নিজেকে দেখলে বড্ড অচেনা লাগে।
দিন দিন নিজেকে পাল্টে যেতে দেখে স্তম্বিত হই।
মুখ ফিরিয়ে নিলাম অজানা আতঙ্কে।
আরশি জানতে চায় ......
পালিয়ে যাবে কোথায় ?
ঠিকই তো যাবো আর কোথায় ...
যেখানে ঠিক শুরু হয়েছিল...
ঠিক সেখানেই পৌঁছে গেছি।
সান্ত্বনা দিলাম ....
সব মিথ্যা অভিযোগ,
পালাবো কেন?
আজ যেন সব চুপচাপ শত আওয়াজে ও সাড়া নেই।
খানিক বিরক্ত হলাম আমি
আহ্ কেন জানি এসেছি
এই ভবের বাজারে,এই স্বার্থপর জগতে
মিথ্যা ভাল থাকার অভিনয় করে
রঙ্গিন পর্দা টেনে যাচ্ছি।
শিশির অধিকারী
প্রতিদিন চাই
-----শিশির অধিকারী
প্রতিদিন খুজি প্রেম,
প্রতিদিন খুঁজি ভালোবাসা,
প্রতিদিন খুজি বেঁচে
থাকার আশায়,
কিন্তু আটকে যাই প্রতিবিম্বে।
গোপাল বনিক
আজব প্রশ্ন
------গোপাল বনিক
নানা রকম প্রশ্ন কত সদাই মনে জাগে
রহস্য সব বোঝার চেষ্টা করিনি তো আগে?
কেটলিতে জল গরম হলেই করে হিস্ হিস্
জল ফুটতেই কেটলিতে আর বাজেনা কেন শিস?
জ্বাল দিলে দুধ উথলে উঠে গড়িয়ে পড়তে চায়
চামচ ডুবালেই উপচে পরা কিভাবে আটকায়?
হাওয়া পেলেই আগুন জ্বলে ভীষণ ভাবে
কিন্তু বেশি হাওয়ায় মোমবাতির শিখা কেন নিভে?
নরম কাদায় ভারী ট্রাক্টর দিব্যি চলে যায়।
কিন্তু চাষী ও তার গরুর পা কেন ডুবে যায়?
কেউ বলে এইসব আবার প্রশ্ন হলো নাকি?
সাধারণ সব বিষয় গুলি এতো ভাববার কি?
সাধারনের মধ্যেই আছে অনন্যসাধারণ,
অনুভূতির আলোয় সে সব হউক উন্মোচন ।
ভবানী বিশ্বাস
জানি না কেমন আছি
----ভবানী বিশ্বাস
জানি না কেমন আছি?
চেয়ে দেখো একবার..!
আমার ভেতরে চলছে প্রবল বর্ষন,
অনেকদিন ধরেই অবিরাম বারিধারা।
প্রতিনিয়ত লড়াই চলছে আমার সাথে আমার।
জানিনা কেমন আছি?
তপ্ত রৌদ্রে ঘোর অমাবস্যার
কালো অন্ধকারে ঢাকা পরে আছে
আমার ভগ্ন হৃদয়।
চেয়ে দেখো তুমি..
আমার ভেতরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ
গভীর তন্দ্রায় আচ্ছন্ন।
মনে লেগেছে বিরাট হতাশা,
কোথাও জং,আর কোথাও
মরুভূমির শুষ্ক বায়ু।
বুঝতে পারছি না ঠিক কেমন আছি?
দিলারা বেগম
সময়ের স্রোতে
---------দিলারা বেগম
সেই যে তোমার আঁচল তলে মুখ লুকাতাম
ভাবতাম 'মা' আমার আস্ত একটা পৃথিবী,
তোমাকে নির্ভর করেই কেটে যেতো দিনরাত্রি
নিরাপদ স্বর্গের আমি যেন ছিলাম অভিযাত্রী।
সময়ের স্রোতে পাল্টে যেতে থাকে জীবনের ধারা
ধীরে ধীরে নির্ভরতা হারাতে থাকে একে অন্যের উপর,
রূপকথার গল্পগুলো ভেঙ্গেচুরে একাকার হয় যখন
অন্তঃপুরের ইচ্ছেদের হয়না আর বিলাসী জীবন।
হয়তো আমি ও একদিন তোমার জায়গা নিলাম দখল
জগতের ভুল মায়ায়,ভুল ছায়ায় দেখি ফেরারি মন,
হয়ে যাই ভিন্ন অনুভুতির শূন্য ফলাফল
এই তো জীবন, বেলা শেষে হিসেব মিলেনা তখন।
প্রয়োজনে অন্যত্র অবরোপণ করতে হয় আদরের ধন
নোনাজলে ধুয়ে যায় কিছু দিনক্ষণ, প্রহর,
একাকী বসত ভিটায় দীর্ঘশ্বাস হয় প্রাপ্তি তখন
সব হারিয়ে বেঁচে নেয় অবিন্যস্ত জীবন করে কর্তব্য সাধন।
চলতে চলতে পথ কখন যে থেমে যায়
কত না বলা কথা না বলায় রয়ে যায়,
অপেক্ষার প্রহর গুনে বেঁচে থাকে মানুষ
অনিশ্চিত ভাবনায় উড়ায় রঙ্গিন ফানুস।
সব প্রতিকূলতা অতিক্রম করে যখন ফিরতে চায় নীড়ে
সর্বসুখের মনোহারী রং হারায় যেন মহাকালের ভীড়ে,
সব কথা ইতিহাস লিখেনা কিছু হারিয়ে যায় অজান্তেই
সব স্মৃতি কেউ ধরে রাখেনা তলিয়ে যায় মৃত্যুর মিছিলে।
অভিজিৎ দাস
"বসন্তের আগমনে"
-----অভিজিৎ দাস
আজ বসন্তেরি আগমনে,
লাগল দোলা বনে বনে।
উড়ছে পাখি ভাসছে মেঘে,
চেয়ে দেখো দূর গগনে।
দক্ষিণা বাতাস বহে সনসন,
আনমনা মন চাই ছুঁতে বন।
আজ রঙে অতল ধরণীতল,
মেঘলা আকাশে গুরুগর্জন।
আজ বসন্তেরি শুভ ক্ষণে,
ফাগুন লাগল বনে বনে।
তাই নতুন রঙে ঝলমলীয়ে,
সূর্য উঠেছে পূব-গগনে।
আজ বসন্তেরি অনুরাগে,
কোকিল ডাকে কুসুমবাগে।
নতুন ফুলের রং বাহারে,
পুরোনো আজ নতুন লাগে।
নতুন সুবাস নতুন আশা,
নতুন গানে নতুন ভাষা।
আজ বসন্তেরি রং লাগিয়ে,
নতুন সাজে ভালোবাসা।
আজ নতুন সুরে নতুন করে,
আবির রাঙা নতুন ভোরে।
ভালোবাসার পরশ দিয়ে,
বাঁধবো তোমায় নতুন ডোরে।