স্মরণীয়া
-----শান্তশ্রী মজুমদার, কৈলাসহর (শিক্ষিকা রামকৃষ্ণ মহাবিদ্যালয়)
পুণ্যসলিলা মা গঙ্গার পবিত্র জলধারা
বয়ে চলেছে হিমালয় থেকে বঙ্গভূমে।
বহু মুনি ঋষির তপোভূমি শান্ত সমাহিত ঋষিকেশ
প্রভাতে সূর্য রশ্মির প্রথম আলো থমকে গেলো
পুণ্যভূমি র গঙ্গার তীরে।
পঁচাত্তর বছরের এক অগ্নিকন্যার মৃতদেহকে
পরম স্নেহে অবগাহন করাচ্ছে মুক্তিদায়িনী মা গঙ্গা।
গঙ্গার পাড়ে কৌতুহলী জনতার কোলাহল
পুলিশে পুলিশে ছয়লাপ চারধার।
কে এই নারী মৃতদেহ?কি তার পরিচয়?
হঠাৎ অট্টহাসিতে ফেটে পড়লো মৃতদেহটি।
কন্ঠে তার ভয়ংকর বিদ্রুপ!
আমি কে?এই নারী মৃতদেহ কার?
শোনরে,বিস্মৃত জাতি ----
আমি বীণা দাস, আমি অগ্নিকন্যা, আমি সশস্ত্র, অহিংস আন্দোলনের নীর্ভিক সৈনিক।
আমি বীণা দাস,আমিই সেই বিপ্লবী-আমার
পিতা, বেনী মাধব দাস,মাতা সরলা দাস।
আমার পিতা ছিলেন নেতাজী সুভাষ চন্দ্রের শিক্ষক
আমি একুশ বছর বয়সী তাজা তরুণী
আমি যুগান্তর দলের সদস্যা
আমিই কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে
পিস্তলের গুলি চালিয়েছিলাম, ব্রিটিশ গভর্নর স্ট্যানলি জ্যাকসনকে।
তাই তো আমাকে নয়টি বছর কাটাতে হোল কালাপানির দীপান্তরে।
দেশ স্বাধীন হলো, আমি হলাম পশ্চিম বঙ্গের বিধানসভার সদস্য।
কিন্তু দেশ সেবার মন্ত্রে দীক্ষিত আমার মনন,চিন্তন
আবারো কাঁধে তুলে নিলাম নারী শিক্ষার ভার।
হে আত্ম বিস্মৃত দেশবাসী, তোমরা আমায় মনে রাখোনি।
আজ যে বৃদ্ধার লাশ দেখছো কৌতুহল ভরে
যে লাশ অবজ্ঞায় অবহেলায় পড়ে আছে গঙ্গা মায়ের কোলে।
সে আর কেউ না, সে হোল অগ্নি কন্যা, নেতাজীর শিষ্যা
বীণা দাস।
কোন বেওয়ারিশ লাশ নয়!
♥️
উত্তরমুছুন