সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)
বুধবার, ১৫ এপ্রিল, ২০২০
সম্পাদকীয়
হে বসন্ত, তোমার আগমনে ফুটেছিল কত রাঙা পলাশ-কৃষ্ণচূড়া, ছিল আগুন ভরা কত শিমুলের মেলা। সবই ছিল। কিন্তু রাঙানো হল না প্রিয়জনদের। কেউ রাঙিয়ে দিল না আমায়। তাই ভারাক্রান্ত হৃদয়ে আমি আছি শুয়ে। তোমার বিদায়ের সময় গুনি। বসন্তের অপগতে নতুন প্রভাতে আমি স্বপ্নে দেখলাম আমার সামনে দাঁড়িয়ে এক বুড়ো বাঁধলেন গানেতে সুর-----" এসো হে বৈশাখ এসো এসো"। এই মহামানবের চরণে নিবেদিলাম শতকোটি প্রণতি। শিল্পী বেঁচে থাকে তার সৃষ্টির মাঝে। মানুষের সৃজনশীল ভাবনা, চিন্তা-চেতনা ও কর্মই তার শিল্পগুণ আর লিখন শিল্পই হলো সাহিত্য। পৃথিবী এখন হাঁটছে মহাসঙ্কটের মাঝখান দিয়ে। বসন্তের না পাওয়ার ব্যথা ভুলে গিয়ে নতুন বছরে মিলন হোক কলমের কালি দিয়ে। এই লক্ষ্যে আপনাদের সাহচর্য পাথেয় করে প্রকাশিত হলো "সাহিত্য নয়ন"- এর প্রথম সংখ্যা। এই যে আত্মপ্রকাশ, এই যে গুটিগুটি পায়ে পথ চলা, আপনাদের নিরন্তর সাহচর্যে সমৃদ্ধ "সাহিত্য নয়ন"-এর এই যাত্রাপথ মসৃণ ও সুগম হোক। শুভকামনা রইল নতুন বছরের শুভারম্ভে।
শুভেচ্ছান্তে------
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, " সাহিত্য নয়ন "
সম্পাদক, " সাহিত্য নয়ন "
হেমন্ত দেবনাথ
আলোর পথের যাত্রী
------হেমন্ত দেবনাথ
আমরা আলোর পথের যাত্রী ----
দূর করবো ঘাত-প্রতিঘাতের
তিমির রাত্রি।
সংকীর্ণতার মূঢ়তা, অন্ধত্বের অনড় কপাট
করবো মোরা চিরতরে লোপাট।
আলোয় আলোয় রাঙিয়ে দেব -----
নীল আকাশ।
আনন্দের উৎসবে মুখরিত হবে বাতাস।
আমরা নবযুগের যাত্রী,
আমরা আনবো নতুন বাণী।
কবিতা সরকার
লাইফ
------কবিতা সরকার
মিঠে রোদ্দুর শীতের মেলা,
গ্রীষ্মকালীন দুপুরবেলা
অপরাহ্নের স্নিগ্ধ হাওয়া,
জীবন শেষের ছেলেবেলা
যতি নয় পূর্ণবিরাম.......
সর্বজয়ার ছাতিমতলা ।।
বর্ণা দাস
সৃষ্টি নাকি ধ্বংসের প্রতীক ??
------বর্ণা দাস
আধুনিকতায় মোড়া সভ্য জগত ,
শুধু ছুঁতে চায় সফলতার উচ্চ চূড়া ।
নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহিরে ব্যস্ত আজ ,
ভেঙে গুড়িয়ে দিচ্ছি না তো শিরদাঁড়া ?
চারদিক ঘিরে শুধু প্রযুক্তিবিদ্যা ,
তাতে হারিয়ে গেছে কোমল শৈশব ।
পৃথিবীটা যেন হাতের মুঠোয় ,
আলোতে থেকেও , অন্ধকারে তলিয়ে যাচ্ছি না তো সব ?
মানুষ এখন বাক্স-বন্দি ,
চার দেওয়ালে আবদ্ধ শ্বাস-রুদ্ধ জীবন ।
রোজ বিষের জ্বালায় পুড়ছে শহর ,
কে রাখে তার খোঁজ ? এখানে সবাই যে যার মতন ।
দুপুরের সোনালী রোদ আর বিকেলের আড্ডা ,
এখন এসব পুরোপুরি অতীত ।
বর্তমানে চলছে শুধু অগ্রগতির প্রতিযোগিতা ,
আর সাথে সফলতার হার জিত ।
বায়ুতে বইছে যেন দূষণের ছাই ,
বেড়ে চলেছে সবুজের মৃত্যু মিছিল ।
অত্যাধুনিক প্রযুক্তিবিদ্যায় ডোব দিয়ে ,
মানুষ হয়ে যাচ্ছে না তো প্রাণহীন, শিথিল ?
পুরোনো জীবনধারা ভুলে গিয়ে ,
আধুনিক আর সভ্য হয়েছি তা ঠিক ।
তাই হয়তো প্রাণ খুলে বাঁচতে ভুলে গেছি সবাই ,
তবে এটা নতুনত্বের সৃষ্টি নাকি ধ্বংসের প্রতীক ??
মৌসুমী ভট্টাচার্য্য
অভ্যাস
------মৌসুমী ভট্টাচার্য্য
আপনার মুখে কোন কথা নেই
চোখে জল নেই,
কোনো ইচ্ছে নেই, কোন স্বপ্ন নেই
কোন মন নেই ।
অভ্যস্ত জীবন-যাপনে কোন অবসর নেই
দুচোখের পাতা নিভে এলেও ঘুম নেই।
প্রতিদিন মরে যেতে যেতে
আপনি আর মৃত্যু ভিক্ষা করে না
শুধু সকালের অভ্যাসে
ভেজা মন নিয়ে গোলাপের চারায়
জল দিতে এলে
আপনাকে খুব বেশি জীবন্ত মনে হয়।
জয়ন্ত দেবনাথ
নবার্কের দিনলিপি
------ জয়ন্ত দেবনাথ
সাতটি কথায় একটি কথা নবার্ক যার নাম,
শিক্ষা,দীক্ষা,সমাজ সেবায় থাকে দিবস যাম।
রবি,নজরুল, বিবেকানন্দর জন্মদিনের স্মরণ,
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে করেছি মোরা বরণ।
শিক্ষাঙ্গনে গেলাম মোরা প্রতিষ্ঠা দিবস যে দিন,
প্রবন্ধ লিখন প্রতিযোগিতায় ছিলাম মোরা লীন।
শ্রদ্ধায় স্মরণ করে নবার্ক মাতৃভাষা দিবস,
অধিকারের যুদ্ধে মোরা থাকব নাকো অলস।
মহিষাসুর মর্দিনীতে মহালয়া যাপন,
পাথেয় হল নবার্কের সকল শুভ আপন।
শারদীয়ায় নবার্ক জল করেছিল দান,
তৃষার্ত সব পরিজনেরা করেছিলেন পান।
নেতাজিকে জন্মদিনে জানাই প্রণাম,
বাপুজি-জয়ন্তীতে স্বচ্ছ্-ভারত অভিযান।
বৃক্ষরোপণ বনায়নে নবার্ক দিল মন,
পরিবেশের সঙ্গে হবে সুস্বাস্থ্য গঠন।
বাগদেবীর আরাধনা শুক্লা পঞ্চমীতে,
করি মোরা প্রতিবছর নবার্ক এর ভিতে।
করোনা-এর করাল থাবা রুখবে নবার্ক আজ,
বর্ষশেষে সুসংহত দৃঢ় যুদ্ধ-সাজ।
------ জয়ন্ত দেবনাথ
সাতটি কথায় একটি কথা নবার্ক যার নাম,
শিক্ষা,দীক্ষা,সমাজ সেবায় থাকে দিবস যাম।
রবি,নজরুল, বিবেকানন্দর জন্মদিনের স্মরণ,
জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে করেছি মোরা বরণ।
শিক্ষাঙ্গনে গেলাম মোরা প্রতিষ্ঠা দিবস যে দিন,
প্রবন্ধ লিখন প্রতিযোগিতায় ছিলাম মোরা লীন।
শ্রদ্ধায় স্মরণ করে নবার্ক মাতৃভাষা দিবস,
অধিকারের যুদ্ধে মোরা থাকব নাকো অলস।
মহিষাসুর মর্দিনীতে মহালয়া যাপন,
পাথেয় হল নবার্কের সকল শুভ আপন।
শারদীয়ায় নবার্ক জল করেছিল দান,
তৃষার্ত সব পরিজনেরা করেছিলেন পান।
নেতাজিকে জন্মদিনে জানাই প্রণাম,
বাপুজি-জয়ন্তীতে স্বচ্ছ্-ভারত অভিযান।
বৃক্ষরোপণ বনায়নে নবার্ক দিল মন,
পরিবেশের সঙ্গে হবে সুস্বাস্থ্য গঠন।
বাগদেবীর আরাধনা শুক্লা পঞ্চমীতে,
করি মোরা প্রতিবছর নবার্ক এর ভিতে।
করোনা-এর করাল থাবা রুখবে নবার্ক আজ,
বর্ষশেষে সুসংহত দৃঢ় যুদ্ধ-সাজ।
রাহুল নাগ
বদলায় কতকী ?
-----রাহুল নাগ
দিন যায় তারি সঙ্গে বদলায় কতকী ?
বদলায় শিশুর মুখের হাসি।
এনে দেয় যৌবনের আনন্দ জৌলুস,
শুরু হয় জীবনের প্রতি মুহুর্ত, জীবন সংগ্রাম।
হারিয়ে যায় সকলে শৈশব থেকে সংগ্রাম জীবনে,
নতুন জীবনে কেহ ডুবে আনন্দ ঐশ্বর্য আনন্দ রসে।।
কেহ বা বেঁচে থাকে শুধু প্রাণ নিয়ে মৃত প্রাণীর ন্যায়।
থেকে যায় দুঃখ আর দুঃখ আনন্দ অনেক দূরে।।
সুখ দুঃখ মিলায় একই ভাষায়।
প্রতি প্রাতে ফোটে কত নতুন ফুল,
থাকে না ফোটে চির অমর হয়ে।
সৌরভ দিয়ে চলে যায়, আবার নতুন জন্মায়।
কিন্তু আসে না তারা যারা ছেড়ে চলে যায়,
বদলায় কত ইট, পাথরের প্রাচীর।
শুধু দেখামাত্র বুক কাঁদে পুরানো ব্যাথায়।।
অমলেন্দু চৌধুরী
রেল গাড়ি
-------অমলেন্দু চৌধুরী
রেল চলে, দুটি জুড়া পাতে;
চলে সরবে নীরবে দিন রাতে।
উঠা নামা জনদল, যে যার কাজে;
সম্ভাষণ সবারে, কুহু কুহু বাজে ।
ডাকাডাকি হাকাহাকি, লাইনে গাড়ি;
আপন গতিতে, যায় সবে বাড়ি ।
নীরবে সহে ব্যথা, রেলের পাতন;
কে আর বুজে, কার যাতন !
কভু শুধায় তারে, সৌরাজ চাঁদা;
খোলাকাশে জ্বলে পুড়ে, কেমন দাদা?
রেল যেনো বলে, আমিতো অবুজ!
তবু যেনো, সবাই থাকে সবুজ ।
মলিনা দেবনাথ
অন্য কোনদিন
------মলিনা দেবনাথ
সবার মাঝে নিজেকে খুঁজি বার বার,
ছুটে যাই শহর, গ্রাম, অজো পাড়াগাঁয়ে।
দিনের পর দিন চলে যায়
সাধারণ মানুষের সুখ দুঃখের মাঝে।
মিলেমিশে একাকার হই
সতত তাদের সাথে।
নিজেকে সারাদিন ব্যস্ত রাখি,
কাজ একটাই, সমাজের ক্ষতস্থানে মলম লাগাবার
পারি কিংবা নাই পারি,
তবুও ছুটে যাই।
মাঝে মাঝে ছন্দছাড়া হয় পারিবারিক জীবন
কর্তব্য পালনে ভাঁটা পড়ে বারবার।
ওরা, নিত্য ভালো মানুষ,
নয়তো ভবঘুরে মানুষ নিয়ে সংসার?
সময় পেরুতে লাগল।
ওরা নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছে।
অপেক্ষমান সময় কাটলো আমি ছাড়া ।
আদর স্নেহ ভালোবাসা সব ছিল।
অভাব শুধু সময়ের ।
আমি বললাম আজকের দিনটা শুধু তোমার জন্য।
সব কাজ ফেলে মনে প্রাণে অপেক্ষা করছিলাম
শুধু তোমার জন্য।
নিরঞ্জন দাস
ভোরের হাওয়া
------নিরঞ্জন দাস
ভোরের হাওয়া মিষ্টি মধুর
প্রভাতপাখির গান।
ভোরের হাওয়া শিউলিতলা
কামিনী ফুলের ঘ্রাণ।
ভোরের হাওয়া খোকার প্রাণে
রবি ঠাকুরের গান।
ভোরের হাওয়া শ্রাবণ ধারা
রিমঝিম বৃষ্টি।
ভোরের হাওয়া বর্ষাকালে
অনাবিল সৃষ্টি।
ভোরের হাওয়া মনোহরা
লাগে ভারী বৃষ্টি।
ভোরের হাওয়া ফুলের বনে।
মৌমাছিদের খেলা।
ভোরের হাওয়া সাতসকালে
ফুল খুকিদের মেলা।
ভোরের হাওয়া উতল হাওয়া
ধীরে ধীরে বয়।
ভোরের হাওয়া নতুন দিনের
স্বপ্ন হয়ে রয়।
সঞ্চয়িতা রায়
যোগাযোগ
------ সঞ্চয়িতা রায়
অতৃপ্ত মরুর বুকে একবিন্দু বারি,
নিমিষেই উবে গেলো;
কন্টকধারিরা শ্বাস ফেলার আগেই।
তুমি বৃষ্টি হবে এসো, উড়ে যাও দূর গগনে।
প্রজাপতির ডানা আমি মুড়ে দেবো পলিথিনের পল্লব দিয়ে।
বাহারি ফুলের গন্ধ, বন্ধ নাকে না-ই ঘেঁষে,
দুর্গন্ধ তার পরাজয় নিশ্চিত।
আমি কি পারি তা নাই বা জানালে,
শুধু বন্ধ্যার বুকে থাকা ডাগর পাথর সরিয়ে দেবো এই বলে দাও তারে।
তুমিই পারো ঐ প্রকাণ্ড পাহাড় ডিঙিয়ে মৌসুমী বায়ু হয়ে বন্ধ্যার সৃষ্টি স্তম্ভে।
এক মস্ত পতাকা ফড়ফড় করে উড়াতে।
যদি চাও; তবে এসো, যোগাযোগ হউক এখনই।
মধু মঙ্গল সিনহা
ছবি আঁকা
-----মধু মঙ্গল সিনহা
আলো-আঁধার চোখের পলক;
শিশির বিন্দু হীরার ঝলক।
চাওয়া পাওয়া দূরে থাকা;
বকের ডানায়, আলোমাখা।
বৃন্ত-চ্যুত শিউলি গুলো,
পায়না কেনো, ভোরের আলো।
আশায় মাখা; নীরব ব্যথা,
তবু মনে ছবি আঁকা।
পবিন্দ্র দেবনাথ
ভালো মানুষ
-------- পবিন্দ্র দেবনাথ
দাঁড়াও হে ভালো মানুষ! শোন আমার কথা।
তুমি হতে চাও ,ভালো? কিন্তু আমরা যে পাই ব্যথা।।
যতই তুমি চেষ্টা করো , ভালো হওয়ার লড়াই লড়ো ।
শত্রু তোমার পাছে আছে, নয়তো ছোট, মস্ত বড়ো !
তুমি যখন কর্মস্থলে সুনাম করতে চাও।
তোমার পাছে কত বাঁধা! তা কি দেখতে পাও ?
আমরা বানাই ফাঁকির বিধান , না বোঝেই করো প্রত্যাখ্যান।
তাতে তুমি বুঝতে চাও না , হয় যে মোদের অপমান।।
ভোগ-বিলাসের এ দুনিয়ায় , তুমি চলো উদাসীনতায় ।
আমরা কিন্তু খাবো-পরবো , মন যা চায় ।।
গরিব দেখলে হও আগুয়ান, দান করে চাও, হতে মহান?
গরিব মোদের কৃপণ ভাবে , হয় গো মোদের অপমান ।।
অনুসরণ করছো তুমি , স্বামীজি আর বিদ্যাসাগর।
আমরাও যে ভারতবাসী নই কো তাদের পর ।।
জানি মোরা , হতে পারবো না, স্বামীজির ন্যায়।
তাই তো স্বার্থের মায়া-জালে করি কত অন্যায়!
হতে পারবো না মোরা , পন্ডিত বিদ্যাসাগর।
চাকুরির তরে যে পড়ি , এই অল্প-বিস্তর ।।
বিদ্যাসাগর দয়ারসাগর দান করতেন অতি।
দয়ায় আপদ বাড়ে , এই তো মোদের ভীতি।।
সাদামাটা কাপড় পরো ! অতি সরল হয়ে চলো !
আমরা কি আর এমন করে চলতে পারি ? বলো---
তোমার নাই ভবিষ্যত্ চিন্তা, আমাদের তো আছে।
বৃদ্ধকালে টাকা না থাকলে , কেউ কি আসবে কাছে?
স্ত্রী-পুত্র-কন্যা কিংবা অন্য জ্ঞাতিজন ।
টাকা থাকলে সকলেই যে হবে গো আপন ।।
তাই তো বলি ,এসো বন্ধু , স্বার্থান্বেষী হও ।
স্বার্থবাদী আমরা যত, আপন করে নেও ।।
ভালো মানুষ এসব শুনে করজোড়ে কহে ।
ক্ষমা করো বন্ধুবর , আমি দীনহীনে ।।
শূন্য হাতে এসেছিলাম , জগত সংসারে ।
শূন্য হাতে যেতেই হবে আমাকে যে ফিরে ।।
জগত থেকে যা পেয়েছি জগতেই করবো দান ।
এসব কাজে ওগো বন্ধু করো না বাধাদান ।।
এসো বন্ধু, ধরো হাত , শপথ করি আজ ।
সমাজ ও দেশের সেবায় করবো মোরা কাজ।।
অভিষিক্তা রায়
কোনো মানে হয়??
------ অভিষিক্তা রায়
পৃথিবীতে নববধূর রূপের ন্যায় আলোকিত চাঁদের চুরি যাওয়া জ্যোৎস্না ফিনিক দিয়ে আসবে,আষাঢ়-শ্রাবণের বাদল মুখরিত দিনে ওই দূরে টিনের চালে টুপটাপ অথবা ঝমঝম বৃষ্টির সেতার বাজবে;সেই অলৌকিক হৃদয়হরণকারী সঙ্গীত শোনার জন্য আমি থাকবো না।
কোনো মানে হয়?
একদিন নদীটির চড়ে পলি পরবে, ছোট্ট কুঁড়েঘরটিতে আলো-আঁধারীর লুকোচুরি চলবে,একঝাঁক সাদা চিল আকাশের নীলে হারাবে;অথচ সেই অপূর্ব দৃশ্য দেখার জন্য আমি থাকবো না।
কোনো মানে হয়?
সেদিনও থাকবে গ্রীষ্মের মাঠে রাখালের বাঁশি,ছায়া ঢাকা গ্রাম,ভোরের বাতাস,পুকুরের জলে সাঁতারু হাঁস,বুড়ো বাউলের ভাটিয়ালি গান,কাক-কুহুকের ডাক;কিন্তু কোথাও আমি থাকবো না।
কোনো মানে হয়?
সবুজ পাতায় নিশির শিশির,মাঘের কোকিল,থাকবে পৌষের মেলা,তুলসিতলার সান্ধ্য প্রদীপ ডেকে যাবে ছেলেবেলা;জানোতো তবুও এগুলো আমায় সেদিন কিছুতেই স্পর্শ করবে না।সত্যিই কি
কোনো মানে হয়??
দেবাশিস_চৌধুরী
সভ্যতার ইতিহাসের দিকে
------- দেবাশিস_চৌধুরী
আকাশে তাঁরা উঠতে দেখে আমি কাঁদিনি কখনও
গোধূলি লগ্নে তুমি নাচতে গিয়ে গান গাইছো
ক্লান্ত দেহ আর চলে না ---
বীভৎস ভবিষ্যত আর কিছু ইঙ্গিত করার আগেই
চুপ হয়ে যায় ধর্মগ্রন্থের প্রতিটি অমোঘ বাক্য।
আমি মোম হাতে দাঁড়িয়ে রইলাম
তুমি মশাল নিয়ে তেড়ে আসলে
সভ্যতার ইতিহাসের দিকে।
মধুমিতা ভট্টাচার্য্য
আবার বসন্তে
----মধুমিতা ভট্টাচার্য্য
বসন্ত এসে যাচ্ছো ফিরে ,
দাঁড়িয়েছিলে গলির মোড়ে,
তবু, দ্বার খোলে নি,
কেউ হাতটা বাড়ায় নি,
হাতে হাত ধরা যে বারণ ,
এই বসন্তে তাই বিষন্ন মন ।
কত কৃষ্ণচূড়া ফুটেছে
রঙ্গন পলাশও হাসছে,
তবু, আজ এই বসন্তে
তুমি -আমি দুই বৃত্তে ।
আটকা পড়েছি চিলেকোঠায়
বন্ধন, মুক্তির দু'টানায়,
বেলকোণিতে দাঁড়িয়ে থেকে
আঙুল নাড়ছি বিদায় শোকে,
তুমি এসো আবার ফাগুনে
পলাশ শিমুলের ভরাআগুনে ।
সকাল হাসবে, তুমি আসবে,
দেখা হবে বসন্ত উৎসবে ।
গৃহবাসী দ্বার খুলবে
হাতে হাত মিলবে ।
বন্ধ মন খুঁজে পাবে আবার
মুক্তির উদার পারাবার ।
----------
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
নিরাকার পাখি
-------রাজেশ ভট্টাচার্য্য
মায়ার বাঁধনে রেখেছি জুড়ে
নিরাকার পাখিরে।
জানিনে কখন যাবে যে ছেড়ে
নশ্বর দেহরে ।
কোন্ পথে যে যাবেরে তুই
কখন নেভাবে বাতি।
কোথা গিয়ে জুটাবে ঠাই,
কোথা জ্বালাবে বাতি ।
স্বর্গের বড় তুমি জননী-জন্মভূমি,
কখন হবে যে ছেড়ে যেতে।
মাগো তোমার কোলে বিলীন হবে-
মোর নশ্বর দেহ খানি।
এ-কি গো মা বিধাতার
এক নিষ্ঠুর রূপ খানি ।
(রচনাকাল:- ০৩/০৫/১৯৯৯)
রনিতা নাথ
বেলুন
-----রনিতা নাথ
-----রনিতা নাথ
প্রচুর হইহুল্লো়, গান, নাচ, মোমবাতি নেভানো, বেলুন ঠুস ঠাস ফাটানো, কেক কাটা, জন্মদিনে পাওয়া উপহার গুলি কে কার আগে দেখবে। রঙিন কাগজে মোড়া গিফটের বক্সের ভেতর কি আছে তা নিয়ে কৌতুহলী দৃষ্টিতে ছোট ছোট মাথা গুলিয়ে এক জায়গায় হয়ে যায়।
এমন এক মুহূর্তে সামিল হয় সৃজু টুষ্টির জন্মদিনের পার্টিতে। টুষ্টি সৃজুর প্রিয় বন্ধু। প্রাইমারীতে পড়ে তারা। মায়ের সঙ্গে সৃজু জন্মদিনের পার্টিতে যায়। এই দিন সন্ধ্যা হবার আগেই পার্টিতে যাবার জন্য নিজে নিজেই তৈরি হয়ে নেয়। সেখানে গিয়ে বন্ধুদের সাথে আনন্দে উল্লাসে মেতে থাকলেও একটি বেলুন সবার আড়াল করে আগলে রাখে। সৃজুর প্রিয় বস্তুর মাঝে বেলুন একটি। মাকে বলে বাড়ি নিয়ে যাবে। কিন্তু মায়ের লাল চোখ নিষেধ করে। তবুও বেলুন থেকে মন সরাতে পারে না সৃজু। তখন সৃজু বন্ধুর মায়ের কাছে হাজার কষ্ট করে বেলুনটি নিয়ে যায়। আর বলে সেটি বাড়ি নিয়ে যাবে। টুষ্টির মা খুশি হয়ে তার আবদারে বেলুনটি সযত্নে সরিয়ে রাখেন। খাওয়া দাওয়া শেষ হলে বাড়ি যাবার সময় বেলুনটির কথা সৃজু বন্ধুর মাকে বলতে ভুল করে না। বেলুন নিয়ে রওনা হয় বাড়ির উদ্দেশ্যে। দাদু ঠাম্মাকে দেখাবে সেটাই বায়না। প্রায় দুই কিলোমিটার রাস্তা বাড়ি অব্দি। গাড়িতে উঠে যেতে যেতে ফুর ফুর শব্দে বেলুনটিকে বাতাসে উড়িয়ে নিয়ে চলে সৃজু। বাড়ির সামনে গাড়ি থামতে না থামতেই দরজা খুলে মাকে ফেলে রেখে দৌড়ে ছুটে যায় বাড়ির দিকে। গেইট খুলে বেলুন হাতে উড়িয়ে প্রাণপণ ছুটতে থাকে দাদু ঠাম্মাকে দেখানোর বুকভরা আনন্দে। চিৎকার করতে থাকে আমার হাতে কি!
কিন্তু সেই আওয়াজ ঘর অব্দি ঠাম্মার কানে গিয়ে পৌছায়না। গেইট পেরিয়ে উঠানে প্রবেশ করার আগে মাঝখানটায় সৃজুর ঠাম্মার হাতে সাজানো সুন্দর ফুলের বাগান। বাগানটা চারিদিক দিয়ে বাঁশের বেড়ায় ঘেরা। তাতে বাগানের সৌন্দর্যে কোন আঁচ লাগেনা। কিন্তু সৃজু আনন্দে আত্মহারা বুঝতে পারে না কখন বাগানের বেড়ায় তার বেলুন ঠেকে যায়।
লাগা মাত্রই বেলুন ঠাস !
বিক্রমজিত ভট্টাচার্য (ঝলক)
সে আমার
------বিক্রমজিত ভট্টাচার্য (ঝলক)
বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে একগাছ।
সে আমার শৈশবের স্মৃতির মূল্যবান টুকরো।
কাটা আর পাতার সবুজে
আমার জীবনের স্বপ্ন বোনে নির্জনে।
সে আমার উদাস দুপুর ,
পুকুরপাড়ে মুখরা বাতাস।
শুনশান হৃদয় নাড়িয়ে দেয়।
সে আমার গোধূলির চাঁদ
নীল আকাশে ভেসে ভেসে জ্যোৎস্না ছড়ায়।
সে আমার গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর মিলনস্হল।
সুখে দুঃখে বড় কাছে টানে আমায়।
------বিক্রমজিত ভট্টাচার্য (ঝলক)
বাড়ির সামনে দাড়িয়ে আছে একগাছ।
সে আমার শৈশবের স্মৃতির মূল্যবান টুকরো।
কাটা আর পাতার সবুজে
আমার জীবনের স্বপ্ন বোনে নির্জনে।
সে আমার উদাস দুপুর ,
পুকুরপাড়ে মুখরা বাতাস।
শুনশান হৃদয় নাড়িয়ে দেয়।
সে আমার গোধূলির চাঁদ
নীল আকাশে ভেসে ভেসে জ্যোৎস্না ছড়ায়।
সে আমার গঙ্গা, যমুনা, সরস্বতীর মিলনস্হল।
সুখে দুঃখে বড় কাছে টানে আমায়।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)