বর্ষা
-----পহেলী মুখার্জী
সারা বছর প্রকৃতিকে রুক্ষ ও ধূলো মলিন করে রাখে বাকি পাঁচ ঋতু।আর বর্ষা এসেই সবকিছু ধুয়ে মুছে প্রকৃতিকে গড়ে তোলে সজীব ও সতেজ।প্রতিটি ঋতুতেই নতুন রূপে ধরা দেয় প্রকৃতি।তাই হয়তো প্রকৃতি ও বর্ষার ঋণ শোধ করতে উঠে পড়ে লাগে।রূপের মাধুরীতে রাঙায় নিজেকে।
বর্ষা কাব্যের ও প্রেমের।শত ব্যস্ততার ভীড়েও ভালবাসার সাধ জাগে এই সময়ে।প্রকৃতির বৃষ্টি স্নানের সাথে সাথেই উপচে পড়ে পদ্মপুকুর।ঝড়ে যায় গ্রীষ্মের ফুল ,জেগে ওঠে বর্ষায় নতুন পাতা,নতুন ফুল।বিশেষ করে ,জুঁই,বেলী,টগর,গন্ধরাজ,যে কাউকে বাঁধে মায়ার বাঁধনে ।বর্ষা এলে যেমন প্রকৃতি শুদ্ধ হয়,তেমনি দূষিত নদীগুলিও ফিরে পায় প্রাণ।
বর্ষার আগমন মানেই খরা,তাপের বিদায় আর গাছে গাছে কচি পাতা ,ও ফুলের সুভাষে বিশুদ্ধ চারপাশ।
আষাঢ় ও শ্রাবন এই দুই মাস নিয়েই বর্ষাকাল।রিমঝিম বৃষ্টি,একরাশ সজীবতা আর কদম ফুলের সুভাষ নিয়ে হাজির হয় এই বর্ষাকাল।
পৃথিবীর আর কোনো দেশে ঋতু হিসেবে বর্ষার স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য বা নাম নেই।এই ঋতু যেন শুধুই আমাদেরই ঋতু।
তাই বর্ষা কবিদের ঋতু।নজরুল,রবীন্দ্রনাথের ঋতু।বৃষ্টির সঙ্গে আমাদের প্রেম আদিকাল থেকেই।বৃষ্টি আমাদের প্রথম প্রেমিক,প্রথম প্রেমিকা।বর্ষায় জমে ওঠে অনন্য প্রেম।বর্ষা নিয়ে রচিত হয়েছে কতো যে গল্প,কবিতা,গান,তার কোনো ইয়ত্তা নেই।তায় বাঙালির শ্রেষ্ট কবিতা বর্ষার কাব্য।বর্ষাকে অবলম্বন করেই
আমাদের প্রেমের কবিতা।আমাদের প্রকৃতি বর্ষা এলেই নতুন করে সাজে ,যেনো কবির ঘরে প্রবেশ করে নতুন বউ।আর সেই নতুন বউকে ঘিড়ে একের পর এক কবিতা লিখে যায় কবি।যেখানে থাকে প্রেম ,বিরহ,অভিমান,ও রোমাঞ্চ।এসব মূলত জনজীবনেরই অংশ।
একজন কবি প্রকৃতিকে দেখেন খুব কাছ থেকে।তখন সেই প্রাণবন্ত লেখা শান্তির পরশ রেখে যায় আমাদের প্রাণে।এভাবে সাহিত্যের সঙ্গে আমাদের প্রাণের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। মূলত প্রকৃতির সঙ্গে গড়ে ওঠে এমন সম্পর্ক যা স্থাপন করে দিতে পারেন কেবল একজন সাহিত্যিকই।
এক কথায় বর্ষা আর রবীন্দ্রনাথের কবিতা ,ও গান যেন একই ধারাই প্রবাহিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন