----- সুব্রত রায়
শহরের ভেতর যেন এক টুকরো গ্রাম। গ্রামে নদী থাকে, শহরে নদী থাকতে পারে। যদি না থাকে তবে খাল নদীর অভাব পূরণ করতে চায়।
শহর গ্রামের মতো ততটা উদার নয়। খালের ধারে ঘর বসানো অবৈধ। পুর পরিষদের লোকজন এসে ভেঙে দেয় বিনা নোটিশে। কোনো এক অজ্ঞাত কারণে একটা ঝুপড়ি টিকে গেছে। সবাই জানে এটা বেড়ালবুড়ির ঝুপড়ি। হ্যাঁ,বেড়াল ছাড়া বেড়ালবুড়ির কেউ নেই।
শহরের যত নোংরা, বয়ে নিয়ে যায় খালের জল। একেবারে ধার ঘেঁষে কোনোরকম দাঁড়িয়ে আছে বুড়ির অস্থায়ী চালাঘর। হরেক রঙের পলিথিনের টুকরো চাল থেকে বেড়ার গায়ে ঝুলছে । সব মিলিয়ে ঝুপড়ির আকৃতি তাই অনির্দিষ্ট।
সকালে বেরিয়ে যায় বেড়ালবুড়ি । শহরের ঘরে ঘরে ভিক্ষে করে সারাদিন। না, একটু চাল ছাড়া আর কিছুই নেয় না সে। ঘরে ফেরার পথে বাজারটা ঘুরে আসে শেষদিকে। সেখান থেকে সংগ্রহ শুধু শুকনো মাছ ।দোকানিদের জানা আছে। ওরা বেড়ালবুড়ির জন্য ফেলে দেওয়ার মতো শুকনো মাছগুলো রেখে দেয়।
সংখ্যাটা ঠিক কত, বুড়ি নিজেও বলতে পারবে না। রান্না করে খেতে দিলে মনেহয় বেড়ালের বুঝি মেলা বসেছে।
এখন আসল কথাটা বলি ।অনেক আগেই ভিটেছাড়া করার কথা ছিল বেড়ালবুড়িকে ।একদিন কাউন্সিলর এসে দেখলেন, এ তো কোনো বাড়ি নয় বরং বেড়ালের অনাথ আশ্রম। বুড়ির সঙ্গে কথা হল। কাউন্সিলার বাবুর বিশাল চালের গুদাম। ইঁদুরের উৎপাতে তিনি ব্যতিব্যস্ত। সব শুনে দুটো শিকারি মেনি পাঠিয়ে দিল বেড়ালবুড়ি ।সেই থেকে বুড়ি ওখানেই আছে। কেউ কিছু বলে না আর।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন