সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)
শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০
সম্পাদকীয়
যখন লিখতে বসলাম তখন বৃষ্টির সুন্দর শব্দ ভেসে এলো, সঙ্গে নিয়ে এলো জানালা দিয়ে হালকা মিষ্টি বাতাস। এই করোনা মৌসুমে মন খারাপের সময়ে বৃষ্টির মধুর শব্দ মনটাকে কিছুটা শান্ত করে দিল। কী লিখবো বুঝে উঠতে পারছিলাম না। এমন সময় চোখের সামনে ভেসে উঠলো এই প্রিয় মুখগুলো, যাদের লেখায় সমৃদ্ধ হচ্ছে সাহিত্য নয়ন, পূর্ণতা পাচ্ছে তার প্রতিটি সংখ্যা। যাইহোক সাহিত্য নয়ন আবার ফিরলো চতুর্থতম সংখ্যা নিয়ে। সবাই সাথে আছেন তাই আবার লেখনি ধরলাম, এভাবেই পাশে থাকবেন এই আশা রেখে। এখানে সাহিত্য নয়ন একটা পরিবার। এবারের সংখ্যায়ও নতুন সদস্যকে আমরা আপন করে নিয়েছি আমাদের পরিবারে। আমরা সবাই মিলে আমাদের ছোট্ট তরীখানি ভাসিয়ে দিয়েছি সাহিত্যের মহা সমুদ্রের দিকে। বেশি কথা বলতে মন করছে না । আমাদের বাসগ্রহে মারণ রোগে প্রিয়জনকে হারানো এবং তার ভয়ে চারদিকে ভেসে যাওয়ার চিৎকার যেন কানে আসে । এর মধ্যে কাব্য নিয়ে চর্চা করা খুব কঠিন । তাই এবারের সংখ্যার যাবতীয় ত্রুটি ও পত্রিকাকে ভালোভাবে না সাজাতে পারার দায় আমি মাথা পেতে নিচ্ছি। প্রচ্ছদ শিল্পী কবিতা সরকার এবং যাদের লেখায় এবারের সংখ্যা প্রকাশিত হওয়ার যোগ্যতা পেয়েছে সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি। আমাদের সুপ্রিয় পাঠকবৃন্দ, আপনারা সবাই লেখা পড়বেন মতামত দেবেন মন খুলে। এবার তাহলে এইটুকু থাক। আবার দেখা হবে কিছু কথা ও কিছু বক্তব্য নিয়ে পরের মাসের সংখ্যায়।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা-সহ--- রাজেশ ভট্টাচার্য্য সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
অমল কুমার মাজি
কেউ জানেনা তাকে
---- অমল কুমার মাজি
মন ভালো নেই লিখব তবু
থাকব ছন্দে গানে
এমনি ক'রেই থাকব বেঁচে
ভালোবাসার টানে !
বাইরে থেকে যায়না বোঝা
সারা জীবন মনকে খোঁজা
কখন সেথায় উঠবে যে ঝড়
কেউ তো নাহি জানে !
অন্দরে তার প্রেমের ফাগুন
এক নিমেষে জ্বালায় আগুন
বর্ষা-রাতে ভাসিয়ে দু'কূল
হঠাৎ প্লাবন আনে !
ক্লান্ত পথিক চ'লতে থাকে
নিরুদ্দেশের পানে !!
হেমন্ত দেবনাথ
ধরিত্রীমাতার ললাটে চিন্তার ভাঁজ
---হেমন্ত দেবনাথ
ধরিত্রী-মাতা নিজ সন্তান রূপ প্রাণিকূলকে বাঁচাতে পারবেন কি না !
সংশয়ের দাগ ধরিত্রী-মাতার ললাটের বলিরেখায়।
আজ তাঁকে বড়োই ক্লান্ত দেখায়।
আজ তিনি দূষণভারে ন্যূব্জ।
সর্বংসহা রূপ ধরেছেন তিনি।
সুখের নেশায়-
মডার্ণ সভ্যতার মানুষ হয়েছে পাগল;
সবুজ বনানী ধ্বংস করছে স্বার্থপরদের দল।
শ্বাস-প্রশ্বাসে নির্মল-বায়ু পাচ্ছি না কো আর।
অসুখ-বিসুখ ছাড়ছে না আজ দিয়েছি জলাঞ্জলি,
পরিবেশের নানা দূষণ মাথায় নিয়েছি তুলি।
ঝড়-বৃষ্টি, ভূ-কম্পন আর সুনামিতে
যেতে হবে রসাতলে।
বিশ্বজুড়ে গ্লোবাল ওয়ার্মিং বাড়ছে, বরফ যাচ্ছে গলে।
বিষাক্ত করছে পরিবেশকে যতসব লোভাতুররা,
জলদূষণ, বায়ু-শব্দ- তেজষ্ক্রিয় দূষণ, দূষণ সারা ধরা।
ছড়িয়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত করোনাসহ নানা ভাইরাসগঠিত রোগ,
যার পশ্চাতে আছে শুধু মর্ডার্ণ সভ্যতার ভোগ।
সজাগ মোরা না হই যদি,
জীবন হবে ঝালাপালা,
থামবে না তো প্রকৃতির প্রতিশোধ নেবার পালা।
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
হায় নীর!
-----কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
নীরএখনআর
নয় নির্মল,
নীর তো এখন পবিত্রতায়
কিংবা বিশুদ্ধতায়
অনেক দুর্বল৷
যমুনার নীরে
রাধিকার নয়ন হরেছিলেন
প্রাণসখা শ্রীহরি৷
পূর্বরাগে আক্রান্ত
রাধিকা সুন্দরী৷
আজ যমুনা সলিল
ঘন কালো পংকিল
নীর মলে ভর্তি
অবগাহনে ব্যর্থ পুণ্যার্থী
বিশুদ্ধতায় ফিরুক যমুনা
আজ মানবের আর্তি৷
রচনাকাল:- (২১ -০৫-২০২০,বৃহস্পতিবার)
মিঠু মল্লিক বৈদ্য
বাঁচবো এবার নব রূপে।
-----মিঠু মল্লিক বৈদ্য
এই যাত্রায় বেঁচে যদি যাই,
অকৃপণ হয়ে বাঁচবো।
বর্ষা ভেজা মাটির সৌরভ মেখে
হারিয়ে যাবো স্নেহ সুধায়।
সবাইকে বুকে জড়িয়ে
কাঁদবো অঝোরের মত
চির চেনা বটের কোলে
বলবো লুটিয়ে, শীতল শামিয়ানা দিতে।
সত্যি এই যাত্রায় বেঁচে যদি যাই
যাবো অরণ্যে, কাতর কন্ঠে
শাল,সেগুন, গর্জন বনস্পতি যত
দিয়ে কৃতাঞ্জলি, প্রকৃতির প্রতিশ্রুত হবো।
মুক্ত বিহঙ্গ, প্রজাপতি যত,
খোলা নভমাঝে; উড়ার শক্তি হবো।
চোর শিকারির রাঙ্গা চোখেও
প্রেম প্রলেপ দেবো।
দ্বিধাহীন চিওে উড়ে যাবে দিগন্তে,
আনন্দ বন্যা বইবে তব নীড়ে;
সুখোল্লাসে ভরবে হৃদয়,
বনে আর মনে হৃদ্যতার করবো জাগরণ।
এই যাত্রায় বেঁচে যদি যাই,
যাবো মুহুরীর তটে,
স্রোতস্বতীর বালুচরে হবো নতজানু,
জোড়হাতে চাইবো মার্জনা ভিক্ষা।
"হে সহিষ্ণু" নিবৃত্ত কর,
পূত ধারায় ধূয়ে দাও
মানব দম্ভের অশ্লীলতা,
বিলিয়ে দাও পয়োধির অতল গভীরে।
শুধু নিজের জন্য বেঁচেছি এতকাল
এবার বাঁচবো পরের জন্য
হবো ক্ষুধার্তের রুটি,তৃষ্ণার্তের জল
খুঁজে দেবো বাঁচার রসদ।
এই যাত্রায় বেঁচে যদি যাই
ঔদ্ধতা ছেড়ে বিনয়ী হবো।
হিংসা ছেড়ে হৃদ্য হবো,
মায়ের খোকন আর প্রিয়ার মালা হবো।
যেথায় অংশ আছে যার
হিসাব করে চুকিয়ে দেবো;
সত্যি বেঁচে যাই যদি
ঋণী হয়ে নয় প্রকৃতির প্রতিরোধ হবো।
আর যদি হারিয়ে যাই মড়ক মাড়ীর কড়াল গ্রাসে,
আগামীর সূর্য হবো;
রবিচ্ছটার তপ্ত অনলে-
দগ্ধ করে পুরাতনের কালিমা,
নব সোনালীর অবণী গড়বো।।
শিশির অধিকারী
মানব সভ্যতার সংকট কি সম্মুখে
----শিশির অধিকারী
চারিদিকে
প্রখর রৌদ্রের উত্তাপ
নিমজ্জিত গ্রাম নগর শহর বন্দর ,
বিষাক্ত কীটের হানায় ভয়ার্ত সব।
কিছু সংখ্যক মানুষ
বাঁচাতে চেষ্টা অবক্ষয়
জন মানুষের স্রোত।
যুগের পর যুগ
পরিবর্তীত সময়ের ঘুর্ণিপাকে
আবির্ভাব আবারও এক বিবর্ন ছবি,
একি পরীক্ষা তব শতাব্দীর।
ফুলের সৌরভ হারিয়ে যাচ্ছে
প্রেম ভালোবাসা র পাশাপাশি
হৃদয়ের মিলন প্রস্ফুটিত হচ্ছে
চির অক্ষত অভিসারে।
ভালবাসা ময় এই পৃথিবীতে
অন্তিম সময়ে যেন দর কষাকষি,
ব্যlভিচারে ইচ্ছের ডানা ভাঙে
তবুও কল্পনায় উঁকি দে
কিছু বৈচিত্রের ছবি
বেঁচে থাকার আশায় ভাসি।
যেন চলেছে
নীরবে মৃত্যুর মিছিল
এই সময় এক সংকেত
তবুও ভয়ার্ত দুদুল্যমান মনে আসে
মানব সভ্যতার সঙ্কট কি সম্মুখে?
অভিষিক্তা রায়
হারানো বিকেল
-----অভিষিক্তা রায়
কেউ ছুটে আসে আম কুড়োতে,কেউ বা কুড়োয় স্মৃতি-
গল্প বৈশাখের বিকেল বেলার,আজ টেনেছে ইতি;
কত না ছিলো হাসির খোরাক,আড্ডা অবিচল-
বাগানটাও আজ একলা পরে,জড়িয়ে স্মৃতির ঢল।
চারটে ছিলো রঙিন পাতা,একটা উপন্যাস-
ফেব্রুয়ারির কালবৈশাখী ঝড়ে ঘোষিত সর্বনাশ;
একটা পাতা পরলো ছিঁড়ে,মুছলো যত গল্প-
ক্যানভাসও তাই হয়েছে ধূসর,মাখলো না রঙ অল্প।
সেদিন ছিলো ছুটোছুটি, কুঁড়ি-মুকুল খেলা-
নোঙর তোলা নৌকো হয়ে পার করেছি বেলা;
আজকে সমস্ত অনুভব জুড়ে পদ্মমধুর গান-
মুহূর্তেরা অর্থ খোঁজে,আঁকড়ে গোপন নিজস্ব অভিধান।
এখন শুধুই গ্যালারি জুড়ে স্মৃতিচারণের রেশ-
যা ছিলো সব রঙিন পুঁথি,আজ সেসবই শেষ;
মাঝরাতে আজও ঘুমের ঘোরে কাঁপিয়ে তোলে সে ট্র্যাজেডি-
মন হেসে বলে সেই দিনগুলো ফিরে পাওয়া যেত যদি।
ঠিক তখনই বাস্তবতা হাত ধরে বলে যেই-
খুঁজছিস যাকে,তাকে যে আর ফিরে পাওয়ার পথ নেই;
মনে মনে বলি ভালো থাক তুই,ভালো থাকাদের দেশে-
উদাসী বিকেলে মন কেমনেরা বাগান পথেই মেশে।।
ডাঃ রথীন্দ্র কুমার নাগ
আহত সৈনিক
----ডাঃ রথীন্দ্র কুমার নাগ
মৃত্যু পথ যাএী , আমি আহত সৈনিক।
দেখেছি ভোরের সূর্যোদয়।
ভেবেছি শুধু বারে বার
দেখা হবে কী ? নব সূর্যোদয় আবার।
ডুবন্ত সূর্য স্পর্শ করেছে মোরে।
প্রাণে দিয়েছে স্নেহের ছায়া।
প্রলেপ দিয়েছে আঘাতে,
স্নিগ্ধ শীতল ছায়া ।
মৃত্যুর পথ যাএী, আমি আহত সৈনিক।
আজ বড়ই ক্লান্ত , ছিন্ন দেহে
মন ভীষণ ভারাক্রান্ত,
কত সৈনিক বন্ধুর শব।
দেখেছি আমি স্বচক্ষে
ফেলেছি চোখের জল,
বারণ করেছি শুধু অশ্রু।
তেষ্টায় ফেটেছে বুকের ছাতি।
নাকে শুধু বারুদের গন্ধ,
রক্তে রাঙা দেহে ছট ফট করছি,
আমি আহত সৈনিক, শুধু হ্যায় হ্যায়
আমি মৃতুর পথ যাএী, আহত সৈনিক ।
রাহুল নাগ
পান
---- রাহুল নাগ
মশলাতে আসে পানের স্বাদ।
চুনে ফোঁটায় বিশুদ্ধতা।।
খয়ার বাবাজী এলে মুখে
আনে আরো উজ্জলতা।
জরদা বরদা সাদার গুড়া
মাথায় আনে চিন্তাধারা।
খাইলে পান, পাইলে পান
খাবার খাওয়া তৃপ্ত হয়।
রাজা মশাইর বিচার সভায়
পানের বাটায় বিচার কয়।
বেনারসের নাম ধাম ,পানের জন্য জয় জয়।
তেরো ফুল, তেরো ফল ,
তেরো পানের ব্রত হয়।
মা তেরো পানের ব্রত হয়।।
চাকরী-বাকরী নাইরে ভাই,
পানের একখান দোকান চালাই।
যতই হোক পানের জয় জয়
পানের পিকে পরিবেশ নষ্ট হয়।
তাপস
" ধৈর্যের জয় "
----তাপস
শেকড় যদি গভীর হয়,
হোক্ না বাতাস,নেই তো ভয়।
সাবধান হোক্,এগিয়ে যাওয়ার পথ চলা।
পেরিয়ে যাও হামাগুড়িতে
বিপদের ছোঁয়া ।
শ্বাপদরা তাকিয়ে, অতি সংগোপনে।
ছিঁড়ে খাবে ,করবে হনন ।
সততার পথ অধিক বিপদময়,
ধৈর্যের পথে নামে সাফল্য।
হাসতে শিখো ,জয় হবে নিশ্চয়,
বাঁধা পেরিয়ে হবে বিশ্ববিজয়।
রক্ত চক্ষুর আড়ালে লেখা হবে ইতিহাস,
পড়বে সবে তোমার বিজয় কথন।
অনুপ কুমার রায়
"বলার ছিল আমারও"
-----অনুপ কুমার রায়
যাওয়া আসার প্রবাহমানতাই জীবন,
নিরূদ্যমদের হয় মরণ ।
সুখের আশায় বেঁধেও ঘর ,
নিজেকে কেন করলে পর?
যদি বল ভাগ্য বটে,
ঘর বাঁধলে কেন নদী- তটে?
সুখের ঘরে আগুন জ্বেলে,
সত্য থেকে মুখ পালিয়ে?
বৃথা চিন্তা কেন করো,
চেষ্টা করলে তুমি তো পারো।
হারিয়ে গেলে আর পাবেনা,
সুখ, শান্তিও লাগবে ছলনা।
করলে কত নিজের ক্ষতি,
কাঁদো ভেবে সুখের স্মৃতি ।
বাঁধা আসুক জীবনে যতো ,
মরণ হউক বীরের মতো ।
তাই তো আমার বলার ছিল,
আগলে রাখতে পারলে ভালো।
কবিতা সরকার
আধুনিকতা
----কবিতা সরকার
আজও নবজাতক শিশু কাঁদে
হাসপাতালের বেডে
নেয় না কেউ কোলে তুলে
কন্যা সন্তান বলে ।
শিখছে শিশু সকল ভাষা
মাতৃভাষা- ই আস্তাকুঁড়ে
শিক্ষা যাচ্ছে রসাতলে
উপার্জনের নেশায় পড়ে ।
চাইছে নারী এগিয়ে যেতে
যুগের সাথে সমান তালে
নির্যাতনের পিছুটানে
পড়ছে বাঁধা অন্ধকারে ।
কান পাতলে চারিদিকে
সত্য নয় মিথ্যা জোটে
সম্পর্ক যায় মিথ্যা প্রেমে
হৃদয় ভাঙে শব্দবানে ।
যন্ত্র আরও বাড়িয়ে তোলে
সভ্যতার এই যন্ত্রণাকে
সুখ- দুঃখ ফুটে ওঠে
মনের বেশি স্ট্যাটাসে ।
সম্পর্করা পড়েছে বাঁধা
ছোট্ট একটা সেলফোনে
মা কে তাদের মনে পড়ে
যেমন ধরো - মাদারস ডে তে!
শেষ বয়সে পৌঁছে তাই
বাবা মা-রা ঘুরছে পথে
তাদের সন্তান সংক্রমিত
সো কলড্..............
আধুনিকতার ভাইরাসে ।
ডা. ফুলশ্রী চক্রবর্তী
পথভোলা
---- ডা. ফুলশ্রী চক্রবর্তী
চারিদিকে ঘন অন্ধকারের ঘটামালা,
মেঘের আড়ালে উঁকি মারে অর্ধচন্দ্রকলা।
তারি মাঝে খুঁজে বেড়াই আমি নিজেকে
হারিয়ে ফেলেছি জানিনা কোন পথের বাঁকে।
কত কথাই মনে অকথিত রয়ে যায়,
অনেক স্বপ্ন বাতাসে বয়ে যায়।
উদ্দীপ্ত আশার মাঝে নিরাশা ছেয়ে যায়
কি জানি কোন্ উজ্জ্বল অদৃষ্টে আধার নেমে যায়।
জানি না,
চেনা ভিড়ে কোন্ অচেনা মূখ খোজে বেড়াই,
আর অচেনাদের মাঝে কোন্ চেনার সন্ধান চাই।
পথ হারিয়ে চলছি আমি জানিনা কোন দেশে
জানি না এই চাদের আলো কোথায় গিয়ে মিশে।
পথের মাঝে হাজার লোকের ভিষন ঠেলাঠেলি,
কার আগে কে পৌছাবে সেই নিয়ে কাড়াকাড়ি।
অকুল সাগরের মাঝে আমি পড়িয়াছি আসি,
কুল নাই কিনারা নাই কোথাই যাই যে ভাসি।।
অনামিকা লস্কর ভৌমিক
"ত্রিভূজ"
----অনামিকা লস্কর ভৌমিক
জলসার ঝলকে
আলোর রোশনাই
নর্তকীর মাতাল নৃত্যে
ঘুঙুরের ক্রন্দন।
গেলাসে গেলাসে চুমুক
লাল ঠোঁটে অমৃতের লহরী
প্রদীপের শিখার
প্রতিপক্ষ আঁধার।
তবুও বধির জনতার মুখ
প্রশ্ন তোলে বারংবার,
ঘুঙুরের যন্ত্রণা!
জড় বস্তুর অনুভূতি!
কখনো কি সত্যি হয়?
প্রমাণ চাই প্রমাণ!
অনিন্দিতা শর্মা
মেয়েটি আত্মসম্মানী
---- অনিন্দিতা শর্মা
এ সমাজ বুঝলো না আজো অহঙ্কার আর আত্মসম্মানের বিভেদটুকু।
আত্মসম্মানের জন্য লড়াকু মেয়েকে
বারবার আঙুল তুলে
বলে দিতে চায়
এ সমাজ
"ও মেয়ে তুই অহঙ্কারী"।
ওরা বুঝলো না আজো
নিজের পরিচয় নিয়ে
বেঁচে থাকার আনন্দটুকু,
নিজেকে ভালোবাসার আনন্দটুকু,
নিজেকে গড়ে তোলার আনন্দটুকু।
নিজের প্রতি আস্থা রাখার মধ্যে
যে কতটুকু আনন্দ
তা আর ক-জন বোঝে।
পিছুটানের মধ্যে এগিয়ে যাওয়া
মেয়েটি যে কতটুকু আত্মসংযমী
তা ক-জন বোঝে।
নিজেকে জানতে পারা,
নিজেকে চিনতে পারা,
নিজের অধিকার নিয়ে লড়াই করা,
মেয়েটি নয় অহঙ্কারী।
সে মেয়েটি হয় আত্মসম্মান্নী॥
রেহানা খাতুন
পরিযায়ী শ্রমিক
----রেহানা খাতুন
আজ যখন ভারত মাতার সন্তানগুলো রাজ পথে হাঁটছে,
বোঝাতে পারবোনা তোমাদের কী অসহায় লাগছে।
সারারাত সারাদিন তারা চলেছে বাড়ির দিকে ধেয়ে,
কেউবা আবার সূটকেসের উপর ঘুমন্ত শিশু নিয়ে।
কেউবা আবার ফোসকা পড়া খালি পায়ে হেঁটে,
এই করুণ দৃশ্য দেখে মানবিকতার বুক যায় ফেটে।
আবার কত অসহায় শ্রমিক আছে ভিন রাজ্যে আটকা পড়ে,
খেতে না পেয়ে অকালে তাদের প্রাণ গেলো ঝরে।
কেউবা আবার রাস্তায়, কেউবা আবার ট্রেন লাইনে,
কত শ্রমিক হেঁটে চলেছে তাদের স্বপ্নের বাড়ির দিকে।
চলছে বাড়ির পথে _________!
তবুও তারা ফিরতে পারছেনা তাদের বাড়িতে,
কেউবা মরে 'বীর' সন্তানদের হাতে কেউবা ট্রেনে কাটা পড়ে।
তোমরা কি দেখেও দেখছোনা?
জানি এসব গরীবের বেদনা তোমাদের কর্ণ ভেদ করেনা।
সত্যি কি তোমরা কিছুই বুঝেও বুঝছোনা?
দেখতে কি পাওনা কত মায়ের বুক ফাটা কান্না?
জানিনা কবে শেষ হবে গরীবের এই দুঃখ দুর্দশা!
কবে উঠবে নতুন সূর্য, ঘুচবে অমানিশা।
কবে পাবে 'মুখোশধারী' নেতাদের দেওয়া প্রতিজ্ঞা,
কবে পাবে শান্তিতে তারা বাঁচতে এটাই মোদের শঙ্কা।
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
শ্রাবণ ধারা
-----রাজেশ ভট্টাচার্য্য
টিপটিপ পড়ে ধারা তবু নাহি ক্ষান্ত।
জনপদে কেহ নাই সবই যেন শান্ত।
মিটি মিটি কেহ চলে গায়ে যেন জড়তা।
ঘরে ফিরে আসে কেহ বেলা বাজে বারোটা।
ছাতা নিয়ে যায় কেহ পাতা নিয়ে যায়।
আনন্দে মাতিয়া উঠে মাছেরা বেড়ায়।
জাল নিয়ে জেলেরা মাছ ধরতে আসে।
খেতে খেতে বকেরা ধ্যানেতে বসে।
টপ করে বকেরা আহার নিয়ে আসে।
রচনাকাল:- ১৫/০৬/২০০৫ ইং
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)