মুক্তকণ্ঠ----
-----কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
ডিম ফুটেছিল ;
কিন্তু চোখ ফুটে নি
বাঁচার তাগিদে কিচিরমিচির
মা ময়নার যতনে ধীরে ধীরে
চোখ ফুটলো-- পৃথিবীর রূপ দেখে দিশেহারা
বুঝতে পারেনি-- কী হবে!
ডানা ঝাপটে যেদিন উড়লো
ময়না ছানা ভাবলো--
সে মুক্ত - স্বাধীন।
নভোতলে ওর মুক্ত বিচরণ।
বটের শাখায় বসে ডাকছিলো
মুক্তকণ্ঠে-- কী আনন্দ!
দূর থেকে শোনে ময়নারবুলি
জেগে উঠে উদগ্র বাসনা গুলি।
ফাঁদে আটকে ময়না ছানা
খাঁচায় বন্দী জীবন - নতুন ঠিকানা।
খাঁচা ভাঙার কত-না তোড়জোড়
ডানা ঝাপটানো,চেঁচামেচি
কিন্তু হায়!
মনিবের পঞ্চ ইন্দ্রিয় সচেতন,
বন্দীর যন্ত্রণায় ওর মনে উড়ে বিজয় কেতন।
বন্দী জীবন - পরাধীন
কঠোর শাসন সারাদিন।
শিখলো কিছু নতুন বুলি
বুঝলো মানুষের ভাষা
সভ্যতার কিছু গন্ধ
লাগলো খাঁচার গায়ে।
মনিবের মনে জাগলো আশা।
কিন্তু, আদবকায়দা শিখে
মাঝেমাঝে প্রভুর বদনাম বলে
আগন্তুক জনে।
এতো বড়ই বেমানান
আমার খায়,আবার
আমারই বদনাম গায়
তা-ই তো একদিন রাগে গোঁসায়
দু' একটা চড় কষায়
দিলো পাখিটিকে ছেড়ে,
বন্দী জীবন পেলো নতুন মুক্তির আস্বাদন
মুক্তকণ্ঠে নতুন দিনের আবাহন।
কাকলিতে সবুজ উঠলো মেতে ;
বারিধারা শেষে
আকাশ আজ নির্মল
নতুন এ প্রভাতে।
মুক্তকণ্ঠে গাহিল চাষা সবুজের গান,
লেখনীর জোরে মানবের মনে
উঠিবে জাগিয়া পুনরুত্থান।
রচনাকাল-- ০৫-০৮-২০২০
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন