সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
"সাহিত্য নয়ন" সাহিত্য পত্রিকায় আপনাকে স্বাগত। ( প্রকাশকের লিখিত অনুমতি ছাড়া এই পত্রিকার কোন অংশ কেউ প্রকাশ করলে তার বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে)
রবিবার, ১৭ মে, ২০২০
সম্পাদকীয়
প্রিয় পাঠক,
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা সহ------
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
প্রকাশিত হল ‘সাহিত্য নয়ন'-এর দ্বিতীয় সংখ্যা। সাফল্যের যাত্রাপথে আরেকধাপ এগিয়ে গেলাম আমরা। প্রথম সংখ্যা প্রকাশের পর সকলের সার্বিক সহযোগিতা এবং উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমরা অভিভূত। অনেক আশা এবং স্বপ্ন জড়িত দ্বিতীয় সংখ্যা নিয়ে এবার হাজির হলাম। কিন্তু এই নতুন সংখ্যা প্রকাশের আনন্দকে ম্লান করে দিয়েছে আমাদের বাসগ্রহে মারী সংক্রমণ। আলোকের মুখে কালো যবনিকা হবে ছিন্ন, প্রিয়জনদের স্পর্শ মিলবে নতুন প্রভাতে, পথ চলা এই আশাটুকু নিয়ে। এবারের সংখ্যায় লেখনী ধরেছেন ওপার বাংলার কবি থেকে শুরু করে এপার বাংলার ছড়াট্টার জনক সহ কবিগণ। দুই বাংলার কবিদের সাথে আসাম-ত্রিপুরার কবি-সাহিত্যিকদের মিলন হল কলমের কালি দিয়ে। উনাদের লেখনীর স্পর্শে লিখন বৈচিত্রের রূপ ফুটে উঠেছে 'সাহিত্য নয়ন'-এর এবারের সংখ্যায়। এক অসামান্য প্রচ্ছদ এঁকে সংখ্যাটাকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তুলেছেন প্রচ্ছদ শিল্পী ও কবি কবিতা সরকার। আসুন আমরাও ডুবে যাই লিখন বৈচিত্র্যের এই ধরায়।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা সহ------
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
কবিতা সরকার
সময়ের ধারাপাতে
------ কবিতা সরকার
যেথায় গিয়ে দাঁড়াবে তুমি
ক্লান্ত চরনে
মর্মরেতে উঠবে ধ্বনি
দীর্ঘনিশ্বাসে।
রুধিল কে দ্বার
বাঁধিল কে চরন
কোন পথে মুক্তি
কেন অকারণ ?
কোন দোষে কেন
ঘটিল এমন
শুধু তোমারই সাথে ?
প্রশ্নের বানে বিধিবে অন্যেরে
দিবস ও রজনীতে ।
রাত্রির শেষে
প্রত্যুষে এসে
দেখিবে রবি
উঠিয়াছে হেসে।
ছিল যা দুঃখ গ্লানি
গভীর অন্তরেতে
মুছিবে সকলই
সহজেই.......
সময়ের ধারাপাতে ।
হেমন্ত দেবনাথ
মানবতার যাত্রাপথে------শ্রীচৈতন্যের পদধ্বনি
------- হেমন্ত দেবনাথ
যিনি শুধু ধর্মপ্রচারকই ছিলেন না এবং যিনি হিংসাজীর্ণ স্বার্থপরতামগ্ন, সামাজিক-ধর্মীয় ভ্রষ্টাচারজীর্ণ, অবহেলিত এবং অধঃপতিত শ্রেণীর মানুষের মধ্যে প্রেম ও সাম্যের সেতুবন্ধন করেছিলেন, তিনি হলেন মানবতার পূজারী শ্রীচৈতন্যদেব। তিনি শুধু একটি যুগেরই প্রতিনিধি নন, তিনি যুগের স্রষ্টা। সাহিত্য-শিল্প সংগীত-ভাস্কর্য-স্থাপত্য বিদ্যাচর্চার ক্ষেত্রেও চৈতন্যদেব ছিলেন প্রাণপুরুষ। সেক্ষেত্রেগুলোতেও চৈতন্যদেবের গভীর ও সুদূরপ্রসারী প্রভাব।
ভারতের নবদ্বীপে ১৪৮৬ খ্রিস্টাব্দে (৮৯২ বঙ্গাব্দে) ফাল্গুনী পূর্ণিমার দিনে চৈতন্যদেবের জন্ম গ্রহণ করেছিলেন। তার পিতা জগন্নাথ মিশ্র বাংলাদেশের শ্রীহট্ট নিবাসী ছিলেন। তিনি বিদ্যার্জনের উদ্দেশ্যে এসেছিলেন ভারতের নবদ্বীপে, পরে শচীদেবীকে বিয়ে করে নবদ্বীপেই স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেছিলেন। চৈতন্যদেব তার পিতা-মাতার সর্ব কনিষ্ঠ সন্তান। তার ভালো নাম বিশ্বম্ভর, ডাকনাম নিমাই, আর গৌরবর্ণ ছিলেন বলেই সবাই 'গৌরাঙ্গ' বলে ডাকতেন।
মধ্যযুগের বাংলাদেশের ধর্ম, সংস্কৃতি, সাহিত্য, সমাজের উপর শ্রীচৈতন্যদেবের অতুলনীয় প্রভাব ছিল। তাঁর জীবদ্দশার পূর্বে ওপরে বাংলাদেশে অব্যাহত ছিল সামন্তযুগ। তখন ভূ-স্বামীদের শোষণ ও শাসন ছিল কঠোর, আর অস্বীকৃত ছিল মানবতার আদর্শ। তাঁর প্রচারিত ধর্মমত ছিল সে যুগের অনুদার-মতাদর্শের বিরুদ্ধে এক বলিষ্ঠ প্রতিবাদ।
শ্রীচৈতন্যদেব বিপ্লবী ছিলেন না, ছিলেন সমাজ সংস্কারক ও নবযুগের প্রবর্তক। "কৃষ্ণ নামে" তিনি বর্ণভেদ, উচ্চ-নীচ তুলে দিয়ে সামাজিক ঐক্য ও সংহতি প্রতিষ্ঠার প্রাণপন চেষ্টা করেছিলেন। তুর্কি আক্রমণের প্রাবল্যে বাঙালি জাতি হতভম্ব হয়ে পড়েছিল, বিধর্মীদের হাত থেকে হিন্দু ধর্মকে রক্ষা করার উদ্দেশ্যে তদানীন্তন সময়ের ব্রাহ্মণ সম্প্রদায় শাস্ত্রের কঠোর বিধি-নিষেধ দ্বারা জাতি ও ধর্মকে অচলায়তনে বেঁধে ফেলেছিল। এর ফলে জীবনের স্বাভাবিক গতিধারা ক্ষুদ্র আচার-বিচার-সংস্কারের মাধ্যমে গতিরুদ্ধ হয়ে পড়লো। তখন এই পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শ্রীচৈতন্যদেব জাতি ও ধর্মকে এই গতিরুদ্ধতা থেকে মুক্তি দিলেন, বৈষ্ণব ধর্মের দুর্বার স্রোতে ভাসিয়ে দিলেন। তিনি বিচ্ছিন্ন জাতিগোষ্ঠীকে জানালেন যে হরিভক্তির ফলে চন্দ্রালে "ব্রাহ্মণ শ্রেষ্ঠ"হতে পারে। আহ্বান জানালেন---"কোল দাও---আদ্বিজ চন্ডালে।" তিনি জন্মগত বর্ণভেদ প্রথা অস্বীকার করলেন।
শ্রীচৈতন্যদেবের আবির্ভাবের ফলে মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন শাখার উদ্ভব হয়েছিল এবং সেটি হল 'জীবনীসাহিত্যের শাখা।' চৈতন্যদেবের জীবন কাহিনীকে কেন্দ্র করে বিদ্যাপতি, জ্ঞানদাস, গোবিন্দ দাস, কৃষ্ণদাস কবিরাজ, বৃন্দাবন দাস প্রমুখ বৈষ্ণব কবিগণ কাব্য রচনা করেছিলেন। সে যুগের ধর্ম, সমাজ ও জীবনের কথা এসব কাব্যধারায় বিকশিত হয়েছিল। গৌরচন্দ্রিকা, ব্রজবুলি ভাষা, নীতিবোধ ও রুচিবোধ, সংস্কৃতির প্রভাব, মানবতার উৎকর্ষ সাধন, রাগানুগা ভক্তি, চৈতন্য জীবনাদর্শের যাদুস্পর্শে রসসিক্ত হয়ে উঠেছিল।
শ্রীচৈতন্যদেবের পরোক্ষ প্রভাবেই একটি শিল্প সুষমামণ্ডিত ভাষায় সৃষ্টি হয়েছিল, যা মূলত বাংলা, হিন্দি ও মৈথিলী ভাষার সংমিশ্রণে সৃষ্টি হয়েছিল। সেই ভাষাটির নাম 'ব্রজবুলি ভাষা।' চৈতন্যদেব বৈষ্ণব ধর্মকে কেন্দ্র করে যে আধ্যাত্মবাদ ও জীবনাবেগ সৃষ্টি করেছিলেন, তার ফলেই বৈষ্ণব কবিদের হস্তস্পর্শে ভাষা সূক্ষ্ম অনুভুতি প্রকাশের উপযুক্ত হয়ে উঠেছিল।
প্রাক্- চৈতন্যযুগে রচিত রাধাকৃষ্ণের লীলাবিষয়ক কাব্যে নীতিবোধ ও রুচির স্থূলতা দেখা যায়, চৈতন্য পরবর্তী বৈষ্ণব সাহিত্যে তা বর্জিত হয়েছে। চৈতন্যদেবের জীবনাদর্শে বাংলাসাহিত্যেও রুচি ও নীতিবোধের সার্বিক উৎকর্ষ সাধিত হয়েছিল। চৈতন্যদেবের সুদূর প্রসারী প্রভাবে ছন্দের কারুকার্যে এবং অলংকরণের সৌকর্ষে বাংলা বৈষ্ণবসাহিত্য সঞ্জীবিত হয়ে উঠেছিল।
১৫৩৩ খ্রিস্টাব্দে মাত্র আটচল্লিশ বছর বয়সে পুরীতে শ্রীচৈতন্যদেবের তিরোধান ঘটে। চৈতন্যদেবের তিরোধানের পরেই বাংলা সাহিত্যে গড়ে উঠেছিল চৈতন্য জীবনী সাহিত্য-----যা সত্যিকার অর্থে মধ্যযুগীয় বাংলা কাব্যে অভিনবত্ব সৃষ্টি করেছিল। অবশ্য পরবর্তী সময়ে অদ্বৈত আচার্য, নিত্যানন্দ আচার্য প্রমূখ অন্যান্য বৈষ্ণব গণের জীবনকে নিয়েও জীবনীসাহিত্য গড়ে উঠেছিল। সাধারণতঃ শ্রীচৈতন্যের পূর্বে কোন মর্ত্যমানবকে নিয়ে বাংলা সাহিত্যে এরকম জীবনীকাব্য রচিত হতে দেখা যায়নি।
চন্ডীমঙ্গল ও মনসামঙ্গল শাক্ত কবিগন তাদের রচনায় শ্রীচৈতন্যদেব ও তাঁদের পার্ষদদের বন্দনা করেছেন। এতে প্রমাণিত হয় যে, বৈষ্ণবসাহিত্যের সীমানা পেরিয়ে অন্যান্য বাংলা কাব্যেও চৈতন্যদেবের প্রভাব বিশেষভাবে পরিস্ফুট হয়েছিল। শুধু তাই নয়, মধ্যযুগীয় সীমানা অতিক্রম করে উনিশ শতকের নাটক, যাত্রাগান ও পাঁচালীসাহিত্যেও শ্রীচৈতন্যের জীবনাদর্শ ও ভক্তির আদর্শ প্রতীয়মান হয়েছে। এসব কিছুই মূলত বাংলাদেশে শ্রীচৈতন্যের আবির্ভাবের প্রভাব।
চৈতন্যদেব সংকীর্ণ ভেদবুদ্ধি সম্পন্ন ধর্মকে উদার ও কুলষতামুক্ত করে প্রাণবন্ত করে তুলেছিলেন। তথ্যের চেয়ে হৃদ্ শক্তিকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছিল ধর্মচর্চায়, তাতে ধর্ম-উপাসনা অনাড়ম্বর ও সরল হয়ে উঠেছিল। চৈতন্যদেব সাম্যবাদী আদর্শে অনুপ্রাণিত ছিলেন। তাঁর মতে চন্ডাল, মুচি, মেথর, যবন সবাই এক সূত্রে গ্রথিত হতে পারে, যদি তারা কৃষ্ণপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়। তাঁর মতে, মানুষের সৎ আচরণ ও আদর্শই তাকে মহীয়ান করে তোলে, তার জন্ম যেখানেই হোক না কেন। তিনি প্রথাগত বর্ণভেদ ও জাতিভেদ প্রথার বিরোধী ছিলেন। বৈষ্ণব পদকর্তাগণ প্রেমের সাহায্যে (মধুররস) অর্থাৎ 'রাগানুগা ভক্তি'-র স্বতোৎসারিত স্ফুরণ ঘটিয়ে ঈশ্বর লাভের চেষ্টা করেছেন, যা কোনোও তত্ব বা দর্শনের আঁধারে প্রতিষ্ঠিত নয়। শ্রীচৈতন্যদেব তাঁর আদর্শ ও ধর্মমতকে জীবনানুশীলনের মধ্য দিয়ে প্রতিবিম্বিত করেছেন।
তত্ত্বের সাথে জীবনের যোগ করতে চেয়েছিলেন শ্রীচৈতন্যদেব। তাঁর মতে চর্চার সাথে চর্যার সমন্বয়সাধনই ভারতীয় ধর্মসাধনার লক্ষ হওয়া উচিত। ধর্মসাধনাকে জীবনচর্চায় প্রতিফলিত করা উচিত। নিজে আচরণ করে অন্যকে শিক্ষা দিতে হবে, আচরণের জন্য অনুপ্রাণিত করতে হবে। চৈতন্যদেব মর্ত্যমানবকে তা শিখিয়ে গেছেন। নিজের জীবনে ধর্মকে মূর্ত্যরূপে প্রতিষ্ঠিত করেছেন শ্রীচৈতন্যদেব। তাঁর মতে, ধর্ম শুধু আচার-অনুষ্ঠানের ধর্ম নয়, ধর্ম হল অন্তরের শাশ্বত ধর্ম। মানুষের পবিত্রতায়, কান্ত রূপে মানুষের মধ্যেই ভগবানের অধিষ্ঠান। প্রেমের মূর্তরূপে তিনি ভক্তের কাছে ধরা দেন। ভগবান কেবল বৈকুন্ঠেরই অধিপতি নন, তিনি পরম সচ্চিদানন্দ মাত্র। শ্রী চৈতন্যের আবির্ভাবের ফলেই এই ভক্তি ভাবনা মানুষের মনে সঞ্জীবিত হয়েছিল।
ঈশ্বরপ্রেমের মধ্যে তিনি মানবপ্রেমের মহতী বাণী প্রচার করেছিলেন। সাহিত্যে দেববাদের পরিবর্তে মানবতাবাদের সূচনা হয়। তাঁর দৃঢ় প্রতিবাদী চরিত্র যে এদেশে প্রথম শাসকের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ------ তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তিনি ভারতীয় ভাবাদর্শের মূর্ত প্রতিনিধি। আজকের এই মৌলবাদ, ধর্মান্ধতা, কুসংস্কার, বিচ্ছিন্নতাবাদের যুগে নিজ নিজ কর্তব্য কর্মে অবিচল থেকে ভবিষ্যতের মুখী মানবসমাজকে গড়ে তোলার লক্ষে শ্রীচৈতন্যদেবের মানবপ্রেমের বাণী ও আদর্শ, তাঁর নামকীর্তনের নৃত্যতরঙ্গরত পদধ্বনি, চৈতন্য যুগের সাহিত্যসৃষ্টি ধারাকে, সংস্কৃতিকে স্মরণ রাখা একান্ত কর্তব্য। পাশ্চাত্য অপসংস্কৃতির বেলেল্লাপনার বিরুদ্ধে শ্রীচৈতন্যদেবের আদর্শ এক বলিষ্ঠ ও সুদৃঢ় ও প্রতিবাদ।
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
কারিগর
------ কিশোর ভট্টাচার্য
আঁকা-বাঁকা পাহাড়ি পথ চলছি
মোরা ক'জনা,
যুগ বদলের হাওয়া
পার্বতীর কোলে করছে পদচারণা৷
দীর্ঘ সময়ের চড়াই উৎরাই
আজো আগেরই মতো,
কোনো ব্যবধান ঘুচেনি এখনো
অপেক্ষার দিনগুনা হয় কতো৷
পথ কাদাময়- গর্তেভরা
পথের উপরে
নেই কালো ছাপ
এতেই আনন্দের ছয়লাপ৷
গাড়ি ছুটছে কারিগর শিল্পীদের নিয়ে নিয়মিত
সময়ের দাম দিতেহবে;
ওরা সবাই কারিগর
কাজ সেরে সন্ধ্যারপরে
বাড়ি ফেরে টিফিন সেরে
পরের দিনের আয়োজনে
ব্যস্ত হয়ে পড়ে৷
সংরক্ষিত আসনে বসে চড়ে ওরা
গাড়ির গতিতে নিদ্রাদেবীর আগমন
কখনোডানে,কখনোবা বামে
হেলেদুলে ঘুমে ঢুলুঢুলু
ভয় হয় দু' একজনার চোখে চশমা
কখনোকি আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ হয়,
পাশেরজনা হাতে রাখে আগলে
যেন আঘাত না লাগে৷
কারিগর আহত হলে
গড়ার কাজটা বাধা পাবে
তাইতো কিশোর শিল্পী জেগে থাকে
সবুজের দিকে চেয়ে
কলম আর তুলি হাতে৷
শিল্পীর দৃষ্টি, চালকের হাত
মিলেমিশে কারিগরকে পৌঁছায় লক্ষ্যে ৷
রচনা কাল:- ২১-৭-২০১৮, মঙ্গলবার
মিঠু মল্লিক বৈদ্য
বাঁচুক ত্রিপুরা
------মিঠু মল্লিক বৈদ্য
পাহাড়িয়া ত্রিপুরাসুন্দরী,
বিশ্বজোড়া নৈরাশ্যের আঁধার,
তবুও ছিল আশান্বিত;
ভিনদেশি করোনার কলঙ্কে
হয়তো হবে না কলঙ্কিত।
হল তবে আশাভঙ্গ;
বাতাসে ভাইরাস,
অনুনাদিত এক সুর;
মৃত্যুর আশংকায় আশংকিত;
ছোট্ট ত্রিপুরায় করোনার অভিনিবেশ।
নিদারুণ সংকটের মুখোমুখি,
চৈত্রের দাবদাহ!
কালবৈশাখীর তান্ডবনৃত্য;
অবসাদগ্রস্থ মন,
দৈন্য দশায় প্রকৃতি।
যেথা রুদ্ধ দ্বার দেবালয়ের,
রাজপথে শূন্যতা,
নেই জনকল্লোল।
ভারাক্রান্ত হৃদে
শুধুই মরনের হাতছানি-
হেথায় উন্মুক্ত হাসপাতালের চৌকাঠ;
উৎসুক চিত্তে,দাঁড়িয়ে প্রহরী
চিকিৎসক, সেবিকা আর যত স্বাস্থ্যকর্মী।
সেদিনের অশুদ্ধ দ্বার,দেবগৃহ
আর অযোগ্যরা দেবদূত!
সংকটকে কল্পনায় ভীত নয় ওরা,
অশরীরী দানবের বিরুদ্ধে ধরিছে অস্ত্র।
অথচ সাঁজোয়া নেই ওদের,
নেই রনসজ্জা ও।
তবুও মেলিছে দশভূজা;রক্ষিতে ত্রিপুরা।
ভয়কে করিছে জয়,
হয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ী।
ম্লানতা,অবসন্নতা যত
দিয়েছে অঞ্জলি,
ওরা যে মানবকল্যাণকারি।
হে আশুতোষ!ক্ষান্ত কর
দানবের তেজস্ক্রিয়তা,
সঞ্জিবনীর কর উন্মোচন;
না হয় আরও একবার, আবির্ভূত কর
প্রফুল্লচন্দ্র,ফ্লেমিং কিংবা জেনার।
পিছনে হারিয়ে যাক হিংসা, অহংকার
মতানৈক্যে,অসামঞ্জস্য,মুমুর্ষূ কাল।
নবদিগন্তে উত্থিত হউক নবসূর্য,
খুলে যাক হৃদয়ে খুশীর দরজা
বাঁচুক মোদের প্রিয় ত্রিপুরা।
প্লাবন সরকার
মধুকবির স্মরণ
( মহাকবিমাইকেলমধুসূদন দত্তের স্মরণে)
------প্লাবন সরকার
তুমি আজ নেই বলে ধুঁকছে প্রিয় কপোতাক্ষ নদ,
মায়া-কাননে থেমে
গেছে শর্মিষ্ঠা
হচ্ছে না হেক্টর বধ।
তিলোত্তমা পদ্মবতী বসেনি বুড়ো শালিকের ঘাড়ে আজ,
কৃষ্ণকুমারী আজও প্রায়ই কাঁদে
সাজেনি বিয়ের সাজ।
অস্ত্রহীন মেঘনাথ আজ সাহস
দেয় না বীরাঙ্গনা,
জৌলুশহীন জমিদার বাড়ি আজ
ছড়িয়ে আছে আর্বজনা।
পদ্মপুকুরে পদ্মাবতী নায়ে না আর
স্থির রয়েছে জল,
তুমিহীনা কবি সাহিত্য সাগর আজ
সব আর্বজনার দল।
ফিরে এসো কবি নূতন বৎসরে
ভরো মধুকর নন্দন-কানন,
রাখো পরিচয় কবিতায় কুসুমে কীট
অাত্ম-বিলাপে স্মরণ।
অভিষিক্তা রায়
বৈশিষ্ট্য
-----অভিষিক্তা রায়
হয়তো আমি বড্ড ভীষন বোকা
তাইতো ছিলো সামলে রাখার দায়,
মাঝরাতে ঠিক জ্বরের ঘোরে আজও
উষ্ণ কপাল সেই চেনা স্পর্শ চায়।
হয়তো আমি বদমেজাজী খানিক
কথায় কথায় সপ্তমে সুর চড়ে,
আমি-ই তো সেই ছিন্ন হওয়া পাতা
অবহেলায় মাটির বুকে ঝরে।
জানি আমি স্বভাবগতই জেদি
গোয়ার্তুমি মস্তিস্ক জুড়ে,
ঠোঁট উল্টে কান্নাও আবার আঁকি
প্রিয় মানুষ বকুনি দিলে জোরে।
যদিও আমি স্পষ্টবাদী-ই বটে
শুনলে কথা,মাথায় আগুন জ্বলে,
মন ভোলানো একদম নেই ধাতে
মিষ্টভাষা-মুখোশ কিংবা ছলে।
অভিমানের পারদটাও বেশ চড়া
আঘাত পেয়ে মুখ ফিরিয়ে নিলে,
রাগ-জেদ সব তুচ্ছ করে তখন
নিজেকে গোটাই সম্পর্ক ভুলে।
দোষগুলো সব আগলে যদি সেদিন
বইতে পারো অক্ষমতার ভার,
ছন্দবিহীন বীণার তারে জেনো
উঠবে বেজে সপ্তসুর আবার।।
গৌতম নাথ
বেলা শেষের মেঘবিলাসী মন
-----গৌতম নাথ
যার এলোকেশী খোলা চোখে আমি খুঁজি সন্ধ্যার মেঘমালা সুখ ,
জেনে গেছি তুমি সেই আনকোরা রাঙামাটি মুখ।
তুমি সেই সুখের অসুখ।
গভীরতার অনেক প্রকাশ
তুমিও তো তার এক চিলতে।
যদি শ্রেয়তমা হও , তবে আমি সকল পাপকে জ্বালিয়ে পুড়িয়ে পড়ন্তবেলার রৌদ্রবিহারে যেতে পারি সহস্র পল্লীসুখ মেখে।
যে নামেই ডাকি না কেন
তুমি তো চিরকালেরই সুনামি উচাটন।
না শ্রাবণ , না বসন্ত ,
তুমি চিরকালেরই চৈত্র শেষৈ প্রতিবিম্ব।
নিভৃতের উঁচুনিচু ঢেউগুলো তোমারই সর্বনাশা কর্ষণ।
যেভাবে মেঘ জমে আকাশের বুকে
তুমিও সেভাবেই প্রকট হও মায়াবী বিচ্ছেদে।
সময় যতই বাড়ে ততই আমার ঋষিবেলা প্রশস্ত শেকড় মেলে।
শতভাগ অক্ষত থেকে উপর্যুপরি তোমাকে ছোঁয়ার ইচ্ছেটা কিন্তু ষোলোয়ানা গার্হস্থ্য।
তাপীব (ছদ্ম নামে)
আমি রূপকথা হয়ে থাকতে চাই
----- তাপীব (ছদ্ম নামে)
আমি রূপকথা হয়ে থাকতে চাই,
শুনছ, আমি রূপকথা হতে চাই;
আবারও।
‘ঠাম্মা’র কোলে, সাঁঝের বেলা,
থাকবে যখন শুয়ে,
ওনার নরম ঠোঁটের চৌহদ্দি ডিঙিয়ে,
আছড়ে পড়ব, তোমার কানে।
আলতো করে ছুঁয়ে যাব, তোমার দুরু-দুরু মনে,
ঠিক আবারও তাই।
আমি রূপকথা হয়ে থাকতে চাই।
আমি ভাসতে চাই, তোমার বানানো গল্পে।
বন্ধুদের সাথে অলস নিদ্রায়, তোমার কথার ছলে;
জড়াব নিজেরে খুশীর মোড়কে, মিথ্যে সাক্ষী হয়ে।
আমি থাকতে চাই, তোমার বাড়তি কথামালায়-
সেই মিষ্টি স্বরে,
আবারও তেমনি করে!
আমি রূপকথা হয়ে থাকতে চাই।
সত্যি! আমি চাই-চাই; শুধু তাই-চাই।
তোমার বিবর্ণ সন্ধ্যায়, আমি থাকতে চাই।
তোমার কোলে যে পেতে আছে মাথা,
তার শ্রবণ- কুহরে আমি থাকতে চাই।
তোমার স্বর-রূপান্তরে, কাহিনীর পঙ্খিরাজের ডানায়,
নতুবা, রূপালী কেশবতীর মায়ায় কিংবা পরীর যাদুদন্ডে-
সত্যি আমি থাকতে চাই।
সত্যি, আমি থাকতে চাই;
তোমার অজানায়, আমার অনন্ত ভালবাসায়।
আমি, রূপকথা হয়ে থাকতে চাই।
আবারও, আমি রূপকথা হয়েই থাকতে চাই।
অনামিকা লস্কর
আমি প্রেমিকা হয়ে যাই
----- অনামিকা লস্কর
'কবিতা,
তোমাকে আঁকতে বসে ,
আঁচড় কাটা হৃদয়ে
কতো প্রশ্ন,
কতো স্বভূষণ বিশেষণ
কৃষ্ণকলি,আনারকলি,
তারপর বুঝলাম
তুমি কবিতা।
আমার এক একটা শব্দ
তোমাকে ঘিরে,
আমার চেতন অচেতন
তোমার আপেক্ষিক তাপে'।
'এইতো বলেছিলে তুমি!
মেয়েটা কালো,একটু বেশি
বিচ্ছিরি মোটা,
হাটা চলায় কেমন শব্দ
টাকা পয়সা তেমনি ফাঁকা
সম্বন্ধ পাকা হলে
ষোলোআনা লোকসান।
একটাই লাভ দেখি
হোটেলে বামাকে ছেড়ে
হেঁসেলে ঢুকিয়ে দিলে
লক্ষ্মীটা আসবে খাঁটি
মেয়ে নাকি পাকা রাঁধুনি।
এইতো বলেছিল
শহরের ব্যাবসায়ী।
আনমনে উদাসি মন
ভাবে
বসন্ত বয়ে গেলো,
ফেলে আসা
স্মৃতির পাতায়
ঝুড়ি ঝুড়ি কথা
অনাবিল হাসি
বেলাশেষে মাধবীর মতো
সুগন্ধ ছড়াতো,
বর্ণহীণ বেলাভূমিতে
যখন ভাবি
'কবিতা, তুমি ঠিক কবিতার মতো'
আমি প্রেমিকা হয়ে যাই।
অনুপ কুমার রায়
মা ও বাবা
------অনুপ কুমার রায়
নারী মায়ের রূপেঙ
পুরুষ বাবার প্রতিরূপে ।
না হলেও সন্তান উওম,,
মা,বাবা যে হয়না অধম ।
সুখ দু:খ করে উৎসর্গ,
মা,বাবাতেই হচ্ছে ভূ-স্বর্গ ।
অবাক লাগে ভাবতে আমার,,,
কষ্ট করে যোগায় আহার।
তুচ্ছ করে সারা জীবন,,,,,
বুঝেনা যারা মা,বাবার বেদন।
নিজেদের জীবন বাজি রেখে,
সন্তান মাঝে নিজের ছবি দেখে ।
মমতার অংক যখন কষে,
তারা কাঁদে আড়ালেতে বসে ।
মা চায় সন্তানের ভালো,
বাবা হচ্ছে আশার আলো ।
মা,বাবারা সবই বোঝে,,,,
কয়লার মাঝেও হীরা খুঁজে ।
জন্মিয়ে আমি সফল হলাম,,,
মা, বাবার মাঝে স্বর্গ পেলাম ।
চেষ্টা করো যথা সাধ্য
মা,বাবাই যেন হ’ন আরাধ্য।
অমলেন্দু চৌধুরী
২৫শে
-----অমলেন্দু চৌধুরী
হে কবি,
দিবানিশি জাগ্রত তোমা বাণী চিরন্তন,
বীণা মাজে সুর তোলে,আনন্দ ভূবন।
চিত্র করে রঙ তুলি, কবি যে কবিতায়,
নৃত্যের তালে নৃত্যে, গানের ছন্দ তায়।
কোটি চোখ, কোটি বাহু, কোটি কোটিতে,
তোমা সং বাজে, বাজে যেএ ভূতে।
দিকে দিকে জয়ধ্বনি, বাজিছে শাখ,
এ প্রভাতে রবি কিরণ, ২৫শে বৈশাখ।
জগৎ চাহিয়া রয়, সাজিছে যে রথ,
সভাসনে শোভিত যে, তোমা ভারত।
মধু মঙ্গল সিনহা
কাগুজে প্রেমিক
------মধু মঙ্গল সিনহা
তোমার ভালোবাসা জন্ম দিয়েছে বিষন্নতার শৈশব,
আমার ভালোবাসা ছিল কোথাও তোমার প্রতি গভীর মানসিক।
তোমাদের তৈরী করা নতুন শারীরিক ভালোবাসায় জানালায়
-আমি শুধু কাগুজে প্রেমিক।
আমার একাকীত্ব তোমাদের আশীর্বাদ।
সঞ্চয়িতা রায়
কেচ্ছা
----সঞ্চয়িতা রায়
ঠাকুমা আজ আর কেচ্ছা বলেনা,
শুধু শুনে নীরবে রাতদিন অনিচ্ছায়
হজম হয়
এক থালা গরম ভাতের মতো।
কত কেচ্ছা তৈরি হয় ঘরে ঘরে।
লোকমুখে কারিগর সদা ব্যস্ত,
রেসিপি করোনা।
সাথে টক মিষ্টি ঝাল এর আরম্ভ।
যুক্তি ভিত্তি বিজ্ঞান বাস্তবতা হীন
খাবার স্বাদে গিলছে তা অনায়াসে
গোগ্রাসে।
যতোসব বেকার ভন্ড ন্যাকার দল।
নির্দয় হৃদয় কেবল জানি নিজেকে
সমগ্র যুক্তি-তর্কের সীমা ছিঁড়ে গড়ে
নিলজ্জ সাম্রাজ্য।
ভাবটা নিজেই বিজ্ঞ বাকিরা আনাড়ি।
তাপস
আজব পৃথিবী
----- তাপস
সত্যি বন্ধু বিচিএ এই পৃথিবী
কত রঙের স্বপ্ন দেখায় ।
বাস্তবে আমরা হাতের পুতুল
যদি না মেনে নাও তাহলে করবে বড় ভুল ,
অভিলাষ অনেক বেশী যোগ্যতা কম ,
এটাই নিয়ে সবাই ভাবে সারাক্ষন ।
কেউ চায় ক্ষমতা কেউ খোঁজে টাকা
বলতে পারো কোথায় গেল আজ মানবিকতা ।
এই প্রশ্ন চলছে অবিরত মনের ভিতর
বিরাম হীন ভাবে খুঁজে চলেছি সদুওর ।
যোগ বিয়োগ করছি অবিরত
সব হারিয়ে আজ আমি স্তম্ভিত ।
তাই তো বলি,সত্যি শোন-দেখি কত রঙবেরঙের বিচিএ জীবন ,
কবে শান্ত হবে ভাবছি বসে,অশান্তের আচরন ।
কেউ চায় ক্ষমতা কেউ খোঁজে টাকা
বলতে পারো কোথায় গেল আজ মানবিকতা ।
এই প্রশ্ন চলছে অবিরত মনের ভিতর
বিরাম হীন ভাবে খুঁজে চলেছি সদুওর ।
যোগ বিয়োগ করছি অবিরত
সব হারিয়ে আজ আমি স্তম্ভিত ।
তাই তো বলি,সত্যি শোন-দেখি কত রঙবেরঙের বিচিএ জীবন ,
কবে শান্ত হবে ভাবছি বসে,অশান্তের আচরন ।
অনিন্দিতা শর্মা
একাকিত্ব
----অনিন্দিতা শর্মা
ব্যস্ত জীবন
ব্যস্ত পুরো পৃথিবী
কিন্তু এত ব্যস্ততার মাঝেও
এই মন যেন চাই অন্য এক মনকে
এই ভিড়ে ঠাশা শহরে
এই হাত যেন পেতে চাই
অন্য এক হাতের স্পর্শ
এই মন যেন বারবার খোঁজে
অন্য এক মনকে
এই হৃদয় যেন পেতে চাই
অপর এক হৃদয়কে
দিনের শেষে ক্লান্ত মন যেন
উজাড় করে দিতে চাই
জমে থাকা হাসি কান্না
রাগ অভিমান
সেই মনের মাঝে
শেষে কলমেই প্রকাশ পাই
এক নিদারুণ যন্ত্রণা
একাকিত্ব
পবিন্দ্র দেবনাথ
প্রকৃতি
----- পবিন্দ্র দেবনাথ
বিচিত্র প্রকৃতি মাগো, বিচিত্র তোমার লীলা ।
বুঝেও না বুঝি মাগো, করি অবহেলা।।
স্বার্থান্বেষী লোভী মোরা, সৌখিনতায় ভরা।
বিলাসিতা করতে গিয়ে ধ্বংস করছি ধরা।।
গাছ কেটে তৈরি করি সুন্দর আসবাবপত্র।
বন-সৃজনে নেই গো মতি, লোভ শুধুমাত্র ।।
দূষিত করছি মোরা নির্মল পরিবেশ।
কলকারখানা চাই , উন্নত করবো দেশ।।
বিশ্ব-উষ্ণায়ন হচ্ছে, গলছে হিমালয়।
বাড়ছে জল, ডুবছে ভূ-তল , সঙ্কটে আলয়।।
পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট দিনে দিনে।
জ্ঞান-চক্ষু মোদের মাগো, জাগবে কোন্ ক্ষণে!
নিজের কাছে নিজেই মোরা প্রশ্ন-চিহ্নের মুখে!
আমাদের উত্তরসূরি থাকবে কোন্ সুখে ?
পরিবেশের ধ্বংস লীলায় মেতে আছি মোরা।
তবু মোদের করছো ক্ষমা , ওগো বসুন্ধরা।।
জানি তুমি মহীয়সী, ক্ষমা তোমার ধর্ম।
কবে জানি বুঝবো মোরা! নির্মল পৃথিবীর মর্ম ।।
রাহুল নাগ
তোমার জন্য
----- রাহুল নাগ
আমি পথের পানে চেয়ে আছি
তুমি আসবে বলেই।
তোমার জন্য গান লিখেছি
তোমায় ভালোবেসে।।
খবরিলাল খবর আনলো
সকালে বেলা হতেই।
তার অনেক আগেই উঠেছি
আজ তুমি আসবে বলেই।।
ভোরের খেয়াল করিনি আজ
তুমি কখন আসবে ভেবেই।
গোলাপ, বকুল, শিউলি ফুটে
আছে আজ তুমি আসবে বলেই।।
গোয়ালারা দুধ দিয়ে যায়
একটু বেলা হতেই।
তারও অনেক আগেই উঠেছি
আজ তুমি আসবে বলেই।।
গোয়ালা দুধ দিয়ে যায়
সকালবেলা হতেই।
আমি পথের পানে আছি
কখন আসবে ভেবেই।
চড়ুই, শালিক ঘুমায়নি
কাল সারা রাত্রি জেগে।
তোমার জন্য কুজন করে
পথের পানে চেয়ে চেয়ে।।
পাশের বাড়ির খোকা-খুকি
ধরেনি কান্নার রেওয়াজ।
তোমার কথা ভেবে ভেবে
তারা আনন্দে উল্লাস।।
সকাল বেলা গরম চায়ে
আজ দেইনি আমি চুমু।
তুমি এলেই আড্ডা মেরে
দেবো চায়ে চুমু।।
দশটা বাজতে ছাত্র-ছাত্রী
যায় যখনই স্কুলে।
আমি রয়েছি বসে তোমার জন্য
পথের পানে চেয়ে চেয়ে।।
কাজের মাসি ঘর ঝাড় দিয়ে যায়
তোমার আসার আগেই।
ইষ্টিকুটুম, হলুদ পাখি ডাকে
দুপুর বেলা হতে।।
ছাত্র-ছাত্রী ঘরে ফিরে
স্কুলের ছুটি হতে।
আমি তোমার পানে
তুমি কখন আসবে ভেবে।।
দিন গড়িয়ে সন্ধ্যে হলো।
ইমন রাগের সময় হলো ।।
খোকা-খুকি ধৈর্য হারিয়ে
ধরল কান্নার রেওয়াজ।
তবুও হলো না সময়
তোমার আসার আজ।।
----- রাহুল নাগ
আমি পথের পানে চেয়ে আছি
তুমি আসবে বলেই।
তোমার জন্য গান লিখেছি
তোমায় ভালোবেসে।।
খবরিলাল খবর আনলো
সকালে বেলা হতেই।
তার অনেক আগেই উঠেছি
আজ তুমি আসবে বলেই।।
ভোরের খেয়াল করিনি আজ
তুমি কখন আসবে ভেবেই।
গোলাপ, বকুল, শিউলি ফুটে
আছে আজ তুমি আসবে বলেই।।
গোয়ালারা দুধ দিয়ে যায়
একটু বেলা হতেই।
তারও অনেক আগেই উঠেছি
আজ তুমি আসবে বলেই।।
গোয়ালা দুধ দিয়ে যায়
সকালবেলা হতেই।
আমি পথের পানে আছি
কখন আসবে ভেবেই।
চড়ুই, শালিক ঘুমায়নি
কাল সারা রাত্রি জেগে।
তোমার জন্য কুজন করে
পথের পানে চেয়ে চেয়ে।।
পাশের বাড়ির খোকা-খুকি
ধরেনি কান্নার রেওয়াজ।
তোমার কথা ভেবে ভেবে
তারা আনন্দে উল্লাস।।
সকাল বেলা গরম চায়ে
আজ দেইনি আমি চুমু।
তুমি এলেই আড্ডা মেরে
দেবো চায়ে চুমু।।
দশটা বাজতে ছাত্র-ছাত্রী
যায় যখনই স্কুলে।
আমি রয়েছি বসে তোমার জন্য
পথের পানে চেয়ে চেয়ে।।
কাজের মাসি ঘর ঝাড় দিয়ে যায়
তোমার আসার আগেই।
ইষ্টিকুটুম, হলুদ পাখি ডাকে
দুপুর বেলা হতে।।
ছাত্র-ছাত্রী ঘরে ফিরে
স্কুলের ছুটি হতে।
আমি তোমার পানে
তুমি কখন আসবে ভেবে।।
দিন গড়িয়ে সন্ধ্যে হলো।
ইমন রাগের সময় হলো ।।
খোকা-খুকি ধৈর্য হারিয়ে
ধরল কান্নার রেওয়াজ।
তবুও হলো না সময়
তোমার আসার আজ।।
ডা: ফুলশ্রী চক্রবর্তী
করোনা সংগ্রামী
------ ডা: ফুলশ্রী চক্রবর্তী
চারিদিক যখন স্তব্ধ
পৃথিবী মোদের উপর ক্ষুব্ধ
জগৎ যখন বিষন্ন
আমি তখন সম্পূর্ণ শূন্য।
এক প্রকান্ড ঝর
বইছে অবিনশ্বর,
চারিদিকে ছেয়ে গেছে
করোনা নামক মহামারী,
সে নিয়েছে বহু মানুষের প্রাণ হরি ।
কবে যে হবে এই করনার অস্ত
মানব জাতি আজ হয়েছে ভীষন বিপর্যস্ত।
করোনার আতঙ্কে বন্দি
যখন মোরা ঘরেতে ,
তখন ওরা লড়ছে রে ভাই
মোদের প্রাণ বাঁচাতে।
হাজার বাধা এড়িয়ে এরা,
ছুটছে ক্ষুধার্তকে খাওয়াতে।
করোনা সংগ্রামী তোমারা মোদের দেশের বরেণ্য সন্তান
১৩৫ কোটি জনতার লহ প্রণাম।।
পুণ্ডরীকাক্ষ হাজরা(মুখোপাধ্যায়)
ছড়ায় ঠাট্টা আটটা লাইন 'ছড়াট্টা'
--- পুণ্ডরীকাক্ষ হাজরা(মুখোপাধ্যায়)
করোনা
বিত্ত-বিদেশ ফেরেন স্বদেশ হাতে ভাইরাস 'করোনা' -
আমি যে বিত্ত হাঁটবো নিত্য আমার কথাটা ধরো না।
হেঁটে যাবো তাও পথ ছেড়ে দাও টালা থেকে টালিগঞ্জ-
ছুটবো সতত ট্রেন-ঝুকঝুক পাটনা-ময়ূরভঞ্জে ।
হলাদনচিত্ত কলিরই বিত্ত নিজেকে কেবলই জানি -
আর জানি ততো পকেটেই যতো আসুক টঙ্কা-মানি ।
তিতিবিরক্ত এবার ভৃত্য ধরেন বিত্ত-গলা -
তাতেই ভস্ম ভস্মবীজ যে আপাত বন্ধ চলা ।
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
দ্বিচক্রিকা
------রাজেশ ভট্টাচার্য্য
হঠাৎ মনে পড়ে গেল এক বছর আগের কথা।
উনিশের আট এপ্রিল এখনো আমার মনে গাঁথা।
সেদিন প্রসবিত হল আমার দ্বিচক্রিকা।
তাকে ছাড়া আমার যে গো ত্রিভুবনই ফাঁকা।
সে যে আমার সন্তান তুল্য, আমার অনেক আশা।
তার প্রতি আমার ছিল অগাধ ভালোবাসা।
ধীরে ধীরে করলো সে যৌবনে পদার্পণ,
সারাদিন ঘোরাফেরা বাড়িতে থাকে না বেশিক্ষণ।
এভাবেই চলল যে তার কয়েক মাস ধরে,
তার জন্য এখন আমার শুধুই অশ্রু ঝরে।
কি আর বলবো দুঃখের কথা, সবার কপালে ভাঁজ।
করোনা থেকে বাঁচতে সেও গৃহবন্দী আজ।
এতে সদস্যতা:
পোস্টগুলি (Atom)