সাহিত্য নয়নে আপনাকে স্বাগত
সোমবার, ২৬ অক্টোবর, ২০২০
সম্পাদকীয়
একটা কথা তো বলতে ভুলেই গেছি; এই সংখ্যা সাহিত্য নয়নের সপ্তম তম সংখ্যা। কবি ও লেখকদের লেখনীর স্পর্শে এবং প্রচ্ছদ শিল্পী কবিতা সরকারের অঙ্কিত যথার্থ প্রচ্ছদে শারদ সংখ্যা হিসেবে এই সংখ্যার আত্মপ্রকাশ। সকলে ভালো থাকবেন, সুস্থ থাকবেন। সকলের প্রতি রইল স্থানভেদে শুভ বিজয়ার প্রীতি, শুভেচ্ছা, স্নেহাশীষ, শ্রদ্ধা ও অকৃত্রিম প্রণাম।
ধন্যবাদ ও শুভেচ্ছা সহ--
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
সম্পাদক, সাহিত্য নয়ন
কবিতা সরকার
একটা জীবন
----কবিতা সরকার
বেশি তো নয় একটা জীবন
মন্দ কিনবা ভালো,
পূর্ণ হাটে রইলো কি না
কি বা এসে গেলো।
তবু যদি আছো তুমি
জীবন নদীর তটে,
বলুক লোকে ফেলনা তো নয়
ধন্যি মানুষ বটে।
থাকোই যদি দুঃখ পাথারে
সকল কিছু ভুলে,
ডুব দাও আজ ভব সাগরে
দুগ্গা দুগ্গা বলে।
জীবন শুরু যেমন করে
অরুণ রাঙা আলোক প্রাতে,
আলতো টোকায় পড়বে খসে
জীর্ণ শরীর বয়স দোষে।
যাচ্ছে সময় শুধুই মিছে
হানছে কুড়াল জীবন গাছে,
অস্ত্র নয় সময় রূপে
নিচ্ছে কেড়ে নিশির ডাকে।
হারিয়ো না নিজেকে তাই
জীবন পথের বাঁকে,
স্বপ্নগুলো সত্যি করে
বাঁচো সবার মাঝে।
হেমন্ত দেবনাথ
এসো মা দুর্গা
-----হেমন্ত দেবনাথ
রৌদ্র বরণ মোহন সুন্দর শরতের অনুপম।
হৃদয়-মাধুর্যে ভরপুর দুর্গাকে স্বাগতম্।
তুমি ঐশ্বর্যময়ী---
তুমি মহিষাসুরবিনাশিনী।
চারিদিকে যারা মানবতার চরম দুশ্মন---
তুমি কি মাতঃ
জানিয়াছো তাদের ধরন?
তাহলে তুমি কেন হতে পারোনি মানবাসুরমর্দিনী?
তুমি তো শুধু রয়ে গেলে মহিষাসুরমর্দিনী।
আরো ভয়ঙ্কর মাতঃ
কোভিডের আক্রমণ, ভীত মোরা শঙ্কাতুর-মন।
প্রাণ যাবে তব সন্তানের যখন-তখন।
তাহলে তুমি কেন হতে পারোনি কোভিড-19 মর্দিনী?
তুমি শুধু রয়ে গেলে আজো মহিষাসুরমর্দিনী।
আর থেকো না মাগো মৃন্ময়ীরূপী।
এসো দুর্গা, এসো দুর্গতিনাশিনী
শোষণ, নির্যাতন আর কোভিডের আক্রমণকে দেব নির্বাসন।
নবভাবনায়, নবরূপে তোমার ঘটে যদি আগমন।
সংহতি, মানবতা আর মিলনের সুরে সেদিন
হব উচ্ছ্বসিত----
আনন্দঘন তব আলোকে
সেদিন মানবকুল হবে উদ্ভাসিত।
অমল কুমার মাজি
সুখী
-----অমল কুমার মাজি
প্রতিমার চোখে শ্রাবণের ধারা
বানভাসি সারা দেশ জুড়ে
সর্বস্বান্ত শারদ-সকালে
ভৈরবী বাজে বে-সুরে!
তোমার আলোর বেণু বাজে তবু
ওদের ভুবন মাতলো কই
চালাঘর সাথে সবই গেছে ভেসে
ভিটে টুকু জলে থই থই
আদরের ধন বায়না ধ'রেছে
নতুন পোষাকে সাজবে সে
মা হবে রাণী,সে রাজকুমারী
বাবাকে সাজাবে রাজবেশে!
বিষাদে ব্যথায় ব্যর্থ জননী
দু'চোখে কান্না দোলে
কত কিছু ব'লে বোঝাতে যে চায়
অবুঝ শিশু না ভোলে
বেজে ওঠে ঢাক,আরতি ঘন্টা
ঘুমিয়ে প'ড়েছে খুকি
ক্ষণিকের তরে স্বান্তনা তবু
মাতা যে নিমেষ-সুখী !!
কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
কুহেলিকা
------কিশোর কুমার ভট্টাচার্য
জ্ঞানের ভান্ডার --লুক্কায়িত
কৌতূহল সদা জাগ্রত,
জটিল তত্ত্ব --তথ্যের বিপাক
সাধনায় দুর্গমতার পাক।
গুপ্তধন!--সে যে ছড়ানো সর্বত্র;
সামনে থেকেও পাই না খুঁজে --
সে যে কী!
জীবনটা হয়ে পড়ে ব্যর্থ।
গুপ্তধন হাতে পেতে কতো দিবানিশি
জলে-জঙ্গলে,পাহাড়ে-রত্নাকরে
বেড়াই ঘুরে,
গুপ্তধন!সামনে ছুটে--
তারে ধরতে দৌড়াই পেছনে পেছনে।
দৌড়াতে দৌড়াতে ক্লান্ত পথিক
দেখি সবই -মরীচীকা।
তরুতলে বিরামকালে ভাবি
কামনা,লালসা--সবই কুহেলিকা।
রচনাকাল:- ১০-০৪-২০২০ ইং শুক্রবার
রাজেশ ভট্টাচার্য্য
দীনের হরি
---- রাজেশ ভট্টাচার্য্য
'খ'-এর পানে চেয়ে আছি একা।
নভতে পাইনা কেনো তোমার দেখা?
লোকে বলে তুমি আছো আকাশেতে।
তাইতো আমি তোমায় খুঁজি গগনেতে।
কোনো এক নিশিতে চেয়ে আছি অন্তরীক্ষে,
দেখলাম শুধু আসমানের তারা।
জিজ্ঞাসিলাম আমি শূন্যের তারারে--
পাইনা কেনো দেখতে অম্বরে হরিরে?
মিটমিটিয়ে বলল নীলিমার সকল তারা--
দীন-দরিদ্রের মাঝেই দ্যুলোকের হরি ধরা।
বর্ণা দাস
মায়ের আগমনী
-----বর্ণা দাস
মায়ের আগমনী হোক যেন সন্তানদের রক্ষাকবচ রূপে ,
যত দুঃখ কষ্ট গ্লানি আছে তা সব দিলাম তোমায় সপে।
ছিল সাহস যত সঞ্চয় ধীরে ধীরে হল ক্ষয় ,
কেটে যাক এবার ধরার প্রাণে জমানো সব ভয়।
থেমে যাক মৃত্যুমিছিল কেটে যাক মহামারী ,
গাঁথা হবে নতুন ছন্দে জীবন তুমি দিলে পাড়ি।
ফুটুক হাসি ওই সরল প্রাণে ,
যে পথশিশুটা চেয়ে থাকে তোমার পানে।
পথের ধারে ক্ষুধার টানে যারা রোজ হাত পাতায় ,
দিনের শেষে ওরা যেন পেটপুরে দু'মুঠো খেতে পায়।
মাগো দু'হাত ভরে ভরসা দিয়ো শক্তি দিয়ো মনে সবার ,
দুঃখীর ঘরে সুখের কড়া নড়ে উঠুক বারবার।
স্বপ্ন যাদের অপূর্ণ ছিল তারা মধ্যবিত্ত বলে ,
গল্প ওদের নতুন লেখা হোক সাফল্যের দেওয়ালে।
ক্লান্ত শহর সেরে উঠুক কাটিয়ে জড়া ব্যাধির রেশ ,
মাগো তোমার আগমনীতে হোক এই মহামারীর শেষ।
মিঠু মল্লিক বৈদ্য
অকাল বোধন
------মিঠু মল্লিক বৈদ্য
"ওঁ ঐং রাবনস্য বধার্থায় রামস্যানুগ্রহায়চ
অকালে ব্রহ্মনা বোধো দেব্যস্তয়ি কৃতঃপুরা।"
দিকে দিকে বিপন্নতা, কাতরকন্ঠে আর্তনাদ
ক্রুরতার বক্রহাস্য, তবুও বাঁচার সংগ্রাম।
অহমের এাস,দগ্ধ সকল জ্ঞানের পরিভাষ,
স্বীয় আচার ভুলে রাজন করেছিল সেদিন জানকী হরণ।
চৈত্রের তিথি; দেবীর বোধন ছিলো বিধি,
সময়ের সংকুলান,অধর্মের পরাজয়ে
শরৎ সময়ে অকাল বোধনে
হয়েছিল নিয়োজিত স্রষ্টা স্বয়ং।
শিউলীর শুভ্রমাখা সৌরভ,কাশের দোলন
রৌদ্র ছায়ার চমত্কারী খেলায় সাদা মেঘের নলিনী,
দেবীর কৈলাশ ছেড়ে পিত্রালয়ে সমাগম
মনসুখে হারিয়ে যাওয়া মাটির ঘ্রানে।
অধর্মের অভিভবে অকালপক্ক বোধনের কল্পারম্ভ,
পরিতুষ্ট দেবী; নাশিতেপাপ দিলেন প্রতিশ্রুতি।
আজও ঋতুচক্রের বর্নিল দোলায় শরৎ সমাগত,
কাশের খেলা, নভোমাঝে জলমুকের স্পষ্ট আমোদ।
অথচ অনাচার,অধর্মে মলিন মহী,
দিকে দিকে চরম দুঃসময়, অবক্ষয় মানবতার।
নিদারুন অসময়ে মানুষ করছে রুদ্রানীর বোধন,
কইছে জোড়হাতে "হও জাগ্রত; ভৈরবী তুমি,
অবক্ষয়, কল্মষ যত তোমার কটাক্ষে হোক দমন।"
শুক্লা রানী দাস
আগমনী
-----শুক্লা রানী দাস
আগমনীর আগমনে,মাগো
শরৎ এলো,কাশের গুচ্ছ লয়ে
শিউলি ফুলের মিষ্টি সুবাসে
বাতাস উঠল ভরে।
মেঘ মুক্ত আকাশ এলো
সাদা ভেলায় চড়ে।
তুমি আমার প্রানের উমা
মনের সহচরী
তোমাকে সাদরে বরন করি।
তোমার আগমনে ধরাতল
হোক বিপদ মুক্ত।
তুমি প্রগাঢ়,অসীম অনন্ত।
তুমি মুক্তি ও শক্তি
তুমি শান্তির প্রতিরূপ
তুমি মমতার জীবন্ত স্বরুপ।
পায়েল মজুমদার
এসো মা দুর্গা
------পায়েল মজুমদার
অপেক্ষায় ছিলাম এক বছর ধরে,
তুমি মা কবে আবার আসবে ফিরে।
যখন হিমের পরশ লাগল গায়ে,
বুঝেছি আসছে শরৎ নেচে-গেয়ে।
সকালের ঘাসে শিশিরে ভেজা,
আকাশে সাদা মেঘের ভেলায় ভাসা।
বুঝেছি এবার সময় হল মায়ের আসার।
নাচে গানে মাতবে সবার মন আবার।
কিন্তু যে মা আগের মতো নেইকো কিছু,
সকলের মনের আনন্দ যে আজ নিভু নিভু ।
সকল মানুষ ভাসছে কেমন মৃত্যুর ভেলায়,
মশাল নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মৃত্যুর দরজায়।
জানি মাগো তুমি দয়াময়ী,
তোমার দয়ার দানে রক্ষা কর এই মানব জাতি।
সুখের ভেলায় নিয়ে আসো জীবনদানের ঔষধী।
সবার মনের দুঃখ কর দূর,
সকলে হয়ে উঠুক আনন্দে ভরপুর।।
দেবোপম সেন
কংক্রিটের শহর
------দেবোপম সেন
আকাশটা ইস্পাত ঢাকা,
এদিক ওদিক অজস্র মুখোশ,চোখ গুলি ফ্যাকাশে,
দূরবীনের ডাকনাম দূরত্বে মিশে গেছে,চুপ থাকো জানোয়ার,,
এই কালো ঘরে চিৎকার করো,শুধু কৃত্রিম রং এর হাহাকার।।
রেখা গুলি রোজ সুখের খোঁজে শোক খোঁজে রেখে দেয়।
রাত পোহালেই অন্ধকার,আমার হাত ধরে বিদায় নেয়,
এই বুঝি আমার শেষ দিন,রেখে গেছি প্রান্ত শেষ প্রান্তে,
এই বুঝি কিছু ভেঙে গেছে,আমার গল্পের খুব অজান্তে।।
শ্যামল রায়
শুধুই প্রত্যাশা নিয়ে
-----শ্যামল রায়
বুক ভরা আশা নিয়ে
স্বপ্নের ফসল যখন খুঁজি
আধার এসে জড়ো হয় চারদিক।
তবুও স্বপ্নরা জেগে উঠে বলে
জল কাদা একাকার হলেও
সলতে দাও
বুকের উষ্ণ উত্তাপে
জ্বলে উঠুক আলো।
আলোয় ভরা পাখির ডানা
উড়িয়ে দেবো
মুছে যাবে ঘন কালো অন্ধকার
নতুন রঙে নতুন শব্দে
শাড়ির নকশায় দেখতে পাবো
শুধুই তোমাকে, শুধুই তোমাকে আর একটা
আর একটা সকাল বেলা।
গোপাল বনিক
সাম্যবাদী
------গোপাল বনিক
প্রতিদিন কতো ফুল ঝরে পড়ে,
আমরা শুনতে পাই তাদের আর্তনাদ।
আমি কি তোমার হাতের পুতুল?
তোমার ইচ্ছা অনিচ্ছার ক্রীতদাস!
গৃহবধূর তকমা দিয়ে আটকে রাখো ঘরে,
মনে হয় যেন গৃহপালিত-
পায়ে পায়ে বেঁধে দাও বিধিনিষেধের গন্ডী,
অথছ ভুলে যাও আমারও প্রাণ আছে প্রেম আছে।
আমরা সেই পায়ে লাগানো বেরী গুলি খুলে দিতে চাই।
শোনো নারী, বজ্রাঙ্গনা তুমি,
তোমার ভালেই শোভিত সৃষ্টির শ্রেষ্ট উপহার,
তুমিই তো জন্ম দাও পৃথিবীর শ্রেষ্ট সম্পদ।
এখন তোমার হাতে তুলে নাও শানিত কৃপাণ।
শ্মশান ভস্ম গায়ে মেখে গর্জে উঠো,
তোমার রক্ত চক্ষুর ঝলসানিতে এফোঁড় ওফোঁড় হউক-
শত্রুর কুৎসিত কদাকার মুখচ্ছবি।
তারপর আলোর পতাকা উর্দ্ধে তুলে ঘোষণা করো সাম্যবাদ।।
সুকমল গুপ্ত
তুমি আসবে বলে
------সুকমল গুপ্ত
শরতের স্নিগ্ধ সকালখানি,
তোমার পায়ে নূপুর , হাতে ফুলসাজি
কোমল দূর্বা মারিয়ে চলা,
স্নিগ্ধ আলোয় চিকচিক করা শিশির বিন্দু
ঝিলমিল করছে কচি পাতার সুচাগ্র ভাগে,
শুধু তুমি আসবে বলেই,
তুমি আসবে বলেই,, শিউলি ফোঁটা,
কাশবনে দোলে উঠে ঘন কাশফুল
সাদা মেঘ ভেসে বেড়ায়,
অনন্ত নীল আকাশে,
শুধু তুমি আসবে বলেই,
তুমি আসবে বলেই জানি,
প্রাণের স্পন্দন যেন নির্জীবেও ঘটে,
শান্ত স্নিগ্ধ , সজীবতার নির্যাস
চারিদিক মুখরিত হয়, শিউলি সুবাসে
শুধু তুমি আসবে বলে,
আমি আজো খুঁজে পাই সেই
পূজো পূজো গন্ধ,
এক মূহুর্তেই হারিয়ে যাই ছেলেবেলায়
খুঁজে নিই অতৃপ্ত আত্মার রসদ
অতীতের স্মৃতিপটে,
শুধু তুমি আসবে বলে,
শুধু তুমি আসবে বলেই,,
রোজ অপেক্ষার প্রহর গোনা,
থমকে যাওয়া সময়টাকে,একটু গতি দেওয়া
আনন্দ আর সৌহার্দ্যের মিশ্রনে,
শুধু তুমি আসবে বলে,
শুধু তুমি আসবে বলে,
পাড়ার মন্ডপে আগমনীর সুর
বেজে উঠে শুভ্র শঙ্খ ধ্বনি,
ভেসে আসে দূর থেকে
"শিশিরে শিশিরে শারদ আকাশে ,
ভোরের আগমনী"
ভরে উঠে মন সবার
হয়ে আনন্দে একাকার,
দুখ যত বিলীন হয়, মুখে ফুটে হাসি
শুধু তুমি আসবে বলেই,
শুধু তুমি আসবে বলেই
পসরা সাজায় দোকানি
ভরসা তুমি , হতভাগ্য দের
হয়তো বা পারবে খেতে মুঠো দু-খানি।
তুমি আসবে বলেই,
আজো পথ চেয়ে থাকা,
ফিরে আসে শরৎ বারংবার,
তোমার স্পর্শে খুঁজে পাই জীবন,
তাই শুধু চাই ,আসো বারবার
জীবনে সবার।
লিটন শব্দকর
অভিমানী শৈশব
------লিটন শব্দকর
মনু নদী হাতছানি দিয়ে ডেকে বলে
ফিরে আয় শৈশবে;
এখনো অনেক খেলা বাকি পড়ে আছে,
মাঝখানে এক চিরন্তনী বেড়া
অভিমান ধুয়ে যায় খোয়াই জলের কাছে।
প্রাক শরতের কাঁকড়ি নদী
চিঠি ফুরোনো কাশের দোলা
দেখা না হওয়ার প্রজাপতিলিখন
বারোয়ারি গোধুলিতলা।
নয়ন রায়
লাল ধর্ম
-------নয়ন রায়
বারুদ মেশানো বায়ু
ধর্ম মেশানো খাবার,
দুই মিলে রাজ গোটা পৃথিবী___
মানুষ কে কার ?
হিংসার হজম বাড়ছে প্রতিরোজ
কমছে ভালোবাসা,
মিষ্টি কথায় চিঁড়ে ভিজেনা__
রক্ত চাই তাজা।
ভোরের কূজনে পাখি ডাকে না
আর্তনাদে ভরা!
রাম-রহিমের যুদ্ধ চলছে__
গোটা বিশ্বজোড়া।
কার কথা আর কেই'বা ভাবে,
নোটের গন্ধ সবার নাকে।
ধর্ম আজ বাজার-হাটে__
করছে ব্যবসা।
লাখের পিছনে লাখি হাটে,
টাকায় কার নজর ?
পথের পারে ভিখারির স্তূপ,
ওরা সব অধর্মের কবর।
ধর্ম বলে যা'ছিল বিক্রি সব
কিনছে ধনী জনে;
রাম-রহিমের গোষ্ঠীরা সব___
আজ তাদেরি ঘর কোণে।
গরীবের আওয়াজ শোনে না তাঁরা
টাকার ক্রীতদাস,
ইট-পাথরের মোটা প্রাচীরে____
বন্দি বারো মাস।
রাজেশ পাল
আমার দূর্গা
------রাজেশ পাল
আমার দূর্গা বিদ্যা রূপে বুদ্ধি
আমার দূর্গা স্ত্রী রূপে লক্ষ্মী,
আমার দূর্গা শক্তি রূপে শিবানী,
আমার দূর্গা মাতৃ রূপে জননী।
আমার দূর্গা স্কুলে যায়
আমার দূর্গা কলেজ পড়ায়,
আমার দূর্গা স্বপ্ন বুনতে জানে
আমার দূর্গা স্বপ্ন পূরণ করতে জানে।
আমার দূর্গা শিক্ষিত
আমার দূর্গা সমাজে প্রতিষ্ঠিত,
আমার দূর্গা প্রান বাচাঁতে জানে
অন্যের জন্য নিজের জীবন দিতে জানে।
আমার দূর্গা সংসার চালাতে জানে
বট বৃক্ষ ন্যায় সবাইকে আগলে রাখতে জানে,
নিজে দুঃখে থেকেও অপরকে খুশি রাখতে জানে
আমার দূর্গা ত্যাগ করতে জানে।
আমার দূর্গা অস্ত্র হাতে নিতে জানে
আমার দূর্গা স্বর্গ এবং মর্ত্যকে রক্ষা করতে জানে,
আমার দূর্গা তেজী , আমার দূর্গা জেদি
আমার দূর্গা সমাজে পরিবর্তন আনতে জানে,
সে পাপ এবং পাপির নাশ করতে জানে।
আমার দূর্গা প্রতিবাদ করতে জানে
অন্যায়ের বিরুদ্ধে সে আওয়াজ তুলতে জানে।
আমার দূর্গা অত্যাচারের বিরুদ্ধে খড়গ হাতে নিতে জানে,
সে নিজের সম্মান বাচাঁতে জানে,
আমার দূর্গা কলম ধরতে জানে
সে অবহেলিতদের পাশে দাঁড়াতে জানে।
আমার দূর্গা শাস্ত্র পড়তে জানে
কুসংস্কারের বিরুদ্ধে কথা বলতে জানে,
আমার দূর্গা নয় অবলা
আমার দূর্গা অভয়া
আমার দূর্গা নিজের শর্তে বাচঁতে জানে
আমার দূর্গা নিজের শর্তে বাচঁতে জানে।।
গোপাল দে
এসো ত্রিনয়নী
-----গোপাল দে
বছর ঘুরে আসছে আবার
মোদের শারদীয়া।
কি ধন দিয়ে করবো বরণ
ভাবলে কাঁপে হিয়া।।
ফাঁকা মোদের লক্ষীভাঁড় আজ
বন্ধ উপার্জন।
করোনা নামক মহামারী
খেলো জমানো ধন।।
এবার একটু কষ্ট করো
ঘরে নেই কিছু।
জানিনা কবে করোনা ব্যাধি
ছাড়বে মোদের পিছু।।
মহিষাসুর বধ করে যাও
প্রতি বছর বছর।
ধ্বংস করো করোনাসুর
গুনছি মোরা প্রহর।।
আসার সময় ত্রিনয়নী
খাবার কিছু এনো।
গরীব সন্তান অভুক্ত আজ
ভালো নেই জেনো।।
আসছে বছর ধুমধাম করে
করবো আবাহন।
একটা বছর কষ্ট করো
এই নিবেদন।।
চারদিকেতেই করোনা ত্রাস
ঘরে বাইরে খরা।
ত্রিনয়নের আগমনে
ধন্য হোক এই ধরা।।
শ্রীমান দাস
ফাইলবন্দী
------শ্রীমান দাস
প্রশংসায় আজ আর ভরেনা মন
উদ্যম ফেরেনা পুষ্পস্তবকে ,
সুদের টাকা মুকুব হয়না
ফাইলবন্দী শংসাপত্র দেখালে।
কিংবা , ধৌতজলেও হয়না উদরপূরণ,
ভাতের থালায় যেতেই হয় কলমধরা হাত ।
বাঁচতে হলে দু’মুঠো খেতে চাই ।
কাঁধে চাপে খাওয়ানোর দায়
চেপে ধরে আবদার , বায়না কত কি !
কলমধারী হাতে তখন কোদালের একনায়কতন্ত্র ।
শংসাপত্র তখন শুধুই ফাইলবন্দী নিস্ফলা কাগজ ।
কোদাল চালানো ফোসকা পড়া হাতে
কলম ধরা বড়োই যন্ত্রনার ।
গলার উত্তরীয় হয় ফাঁসির উপাদান । ।
নীলাব্জা রায়
এই সময়
------নীলাব্জা রায়
পোয়াল পোড়ায় চাষী ভাই
সাথে পুড়ি মুই
বাতাস ভর্তি কালো নেশা
আকাশ ছুঁই ছুঁই।
মাংস ছেঁড়া লোলুপ গ্রাসে
অকাল বোধন, কাল নাচে
মহাপ্রলয় আসবে চুপে
হুঁশ ফিরল কই?
সুজন দেবনাথ
শরৎ
-----সুজন দেবনাথ
শরৎ মানে মেঘ রোদ্দুর
লুকোচুরির খেলা,
শরৎ মানে উঠুন জুড়ে
শিউলি ফুলের মেলা।
শরৎ মানে শিশির ধোঁয়া
কাশের বনে দোল,
শরৎ মানে ঢাকে কাঠি
আগমনীর বোল।
শরৎ মানে নতুন জামা
আনন্দ উৎসব,
শরৎ মানে হইচই আর
খুশির কলরব।
শরৎ মানে ভোরে উঠে
ফুল কুরনোর খেলা,
শরৎ মানে সারাটা দিন
জমজমাটি মেলা।
শরৎ মানে চারি দিকটা
সাজো সাজো রব,
শরৎ মানে দোকানী দের
পশরা সাজানো পরব।
শরৎ মানে মন্ডপেতে
ঠাকুর দেখার পালা,
শরৎ মানে প্রতিযোগীর
দারুণ দারুণ খেলা।
শরৎ মানে পূজোর আড্ডায়
মেতে উঠে মন,
শরৎ মানে খাওয়া দাওয়া
দিব্যি কাটছে ক্ষন।
শরৎ মানে বিজয়াতে
সিঁদুর মাখামাখি,
শরৎ মানেই মায়ের ভাসান
সবার বিসাদের মুখ দেখি।
কোথায় গেল সেই শরৎ
আজ কেমন যেন দিন,
সাদা কালো লাগছে শরৎ
লাগছে না আর রঙিন।
নেই যেন সেই কোলাহল
আর পূজো পূজো রব,
চারিদিকটা স্তব্ধ যেন
লাগছে আজ নীরব।
কোথা হতে করোনা নামে
রাক্ষসী এক এল,
হঠাৎ যেন সব আনন্দ
মাটি করে দিল।
মা-গো
প্রতিবার তো অশুর বিনাশ
করেছ ধরায় এসে,
এইবার তুমি এসো মাগো
করোনা বিনাশে।
জা- গো- ও- ও, তুমি জা- আ- আ- আ গো।